মাত্র ১৫ দিনে প্রায় ৯ লক্ষ টাকার প্রণামী! দিঘার জগন্নাথধামে তৈরি হচ্ছে অতিরিক্ত বাক্স
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় ভুবনে নতুন একটি গন্তব্য হয়ে উঠেছে দিঘার জগন্নাথধাম। সাধারণ পর্যটক থেকে শুরু করে ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে এটি এখন অন্যতম আকর্ষণ। মাত্র ১৫ দিন আগে মন্দিরটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। আর এই অল্প সময়েই প্রণামীর পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে, মন্দিরে থাকা বাক্সগুলো উপচে পড়ছে।
মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ দিনে প্রায় ৯ লক্ষ টাকার প্রণামী জমা পড়েছে। এত টাকা গুনতেই লেগে যাচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ আরও প্রায় ১০টি নতুন প্রণামী বাক্স বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ট্রাস্ট কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, ‘যদি কেউ বড় অঙ্কের দান করতে চান, তবে তাঁরা সরাসরি জগন্নাথধাম ট্রাস্ট কমিটির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে পারবেন।’
গত ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন এই মন্দিরের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দিন থেকেই জনসাধারণের প্রবেশের অনুমতি মেলে। উদ্বোধনের প্রথম দিকেই দর্শনার্থীদের ভিড় ছুঁয়েছিল ১০ লক্ষের গণ্ডি। এরপর থেকে দর্শনার্থীর সংখ্যা লাগাতার বেড়েই চলেছে, এবং সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রণামীও।
জগন্নাথধাম ট্রাস্ট কমিটির সদস্য ও ইসকন কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমন দাস জানিয়েছেন, “প্রতি মঙ্গলবার প্রণামী বাক্স খুলে গোনা হয়। গত মঙ্গলবার অর্থাৎ ১৩ মে প্রণামী হিসেব করতে গিয়ে দেখা যায়, ৯ লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। দুপুর ১ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গুনতে হয়েছে। এই সময় উপস্থিত ছিলেন ব্যাঙ্কের কর্মী, প্রশাসনিক আধিকারিক, ট্রাস্টের সদস্য এবং সাহায্যের জন্য ছিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা।”
তিনি আরও জানান, “১০ টাকা ও ২০ টাকার নোটের সংখ্যাই বেশি। প্রণামী জমা দেওয়ার ঝোঁক দেখে মন্দির কর্তৃপক্ষ আরও ১০ টি বাক্স তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
মন্দিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভিড় এতটাই হচ্ছে যে বহু ভক্ত মূল প্রণামী বাক্স পর্যন্ত পৌঁছতেই পারছেন না। এই কারণেই স্টেনলেস স্টিলের তৈরি আরও ১০টি নতুন বাক্স অর্ডার দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বাক্সে থাকবে দুটি করে তালা, যাতে নিরাপত্তা বজায় থাকে। এই বাক্সগুলো মন্দির চত্বরের বিভিন্ন অংশে বসানো হবে, যাতে যে কেউ সহজেই দান করতে পারেন। নির্দিষ্ট কর্মীদের উপর এই বাক্সগুলোর দায়িত্ব থাকবে এবং তাঁরা সময় ধরে ডিউটি করবেন।
সব মিলিয়ে বোঝাই যাচ্ছে, জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার উদ্দেশে ভক্তদের শ্রদ্ধা ও দান-বোধ কতটা গভীর।