ঝাড়গ্রামের শিল্পী সুবীর বিশ্বাসের তৈরি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতি স্থান পেল মেদিনীপুরের রবীন্দ্রনিলয়ে
স্বপ্নীল মজুমদার, মেদিনীপুর: জন্মশতবর্ষে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতির আবরণ উন্মোচিত হল মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্রনিলয়ে। মঙ্গলবার সঙ্গীতশিল্পীর শততম জন্মদিনে প্রতিকৃতিটির আবরণ উন্মোচন করেন ‘রবীন্দ্রসঙ্গীতাচার্য’ জয়ন্ত সাহা। ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট শিল্পী সুবীর বিশ্বাস স্লেট খোদাই করে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতিটি তৈরি করেছেন।
হেমন্তের প্রতিকৃতিটি বসানোর ক্ষেত্রে মূল উদ্যোগ নিয়েছেন রবীন্দ্র স্মৃতি সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদক হায়দর আলি। ১৯৩৯ সালে মেদিনীপুরে এসেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিশ্বকবির আগমনের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে চল্লিশের দশকের মাঝামাঝি রবীন্দ্র স্মৃতি সমিতি গঠন করা হয়। সমিতির উদ্যোগে ১৯৫৯ সালে রবীন্দ্রনিলয় ভবনটি তৈরি হয়। হায়দর আলি জানালেন, স্কুলজীবন থেকেই তিনি হেমন্ত ভক্ত।
হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের একটি আবক্ষ মূর্তি মেদিনীপুর শহরের কোনও এক জায়গায় স্থাপন করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু আর্থিক সমস্যা এবং লকডাউনের জন্য সেই স্বপ্নপূরণ সম্ভব হয়নি। তবে বিকল্প হিসেবে হেমন্তের স্লেট খোদাই প্রতিকৃতির হায়দর আলি যোগাযোগ করেন ঝাড়গ্রামের প্রখ্যাত স্লেট শিল্পী ও ভাস্কর সুবীর বিশ্বাসের সঙ্গে। সুবীরবাবু নিরাশ করেননি। খুব অল্পসময়ের মধ্যেই প্রতিকৃতিটি তৈরি করে দেন সুবীরবাবু।
রবীন্দ্র স্মৃতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণচন্দ্র ওঝা, সমিতির অমিত দাস ও বিশ্বজিৎ সিংহের তত্ত্বাবধানে হায়দর আলির স্বপ্নের বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে। হায়দর আলির একান্ত ইচ্ছে ছিল, তাঁর গুরু বর্ষীয়ান রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী জয়ন্ত সাহা এই প্রতিকৃতির আবরণ উন্মোচন করুন। কিন্তু লকডাউনে একদিনের জন্যেও বাড়ি থেকে বের হননি জয়ন্তবাবু। শিষ্যের আব্দারের কাছে অবশ্য হার মানতে হল তাঁকে। মঙ্গলবার জয়ন্তবাবু প্রতিকৃতিটির আবরণ উন্মোচন করলেন। বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে আরও বর্ণময় হয়ে উঠল হেমন্ত মুখোপাধ্যায় জন্মশতবর্ষ অনুষ্ঠান। পরে সমিতির নিজস্ব প্রেক্ষাগৃহ রবীন্দ্র নিলয়ে গানে কথায় হল হেমন্ত-শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠান।