৬ মাস মজুরি মেলেনি, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নালিশ জল প্রকল্পের ঠিকা কর্মীদের
স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: মজুরি না-পেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন গ্রামীণ এলাকার সরকারি জলপ্রকল্পের অস্থায়ী কর্মীরা। নিয়মিত মাসিক মজুরি না পেয়ে ঝাড়গ্রাম জেলার ৮টি ব্লকের প্রায় তিনশো কর্মী চরম দুরবস্থায় পড়েছেন বলে অভিযোগ। তৃণমূল প্রভাবিত অস্থায়ী কর্মী-সংগঠনের উদ্যোগে সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানো হল।
২০১১ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে ঝাড়গ্রাম জেলার ৮টি ব্লকের ৫২টি গ্রামীণ জলপ্রকল্পের পাম্প চালানো ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অস্থায়ী ভাবে প্রতিটি পঞ্চায়েতে একাধিক পাম্প অপারেটর ও ভাল্ব অপারেটর নিয়োগ করেছিল জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে নিয়মিত প্রতি মাসে অস্থায়ী কর্মীদের মজুরি মেটানো হতো।
কিন্তু বছর দু’য়েক আগে ৫২টি জল সরবরাহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিকে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়েছে। এখন পঞ্চায়েতের মাধ্যমে মজুরি মেটায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। কিন্তু তারপর থেকেই অস্থায়ী ওই কর্মীরা সময়মতো মজুরি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।
টানা ছ’মাস মজুরি না পেয়ে সম্প্রতি বিজেপি-র ক্ষমতাসীন রামগড় পঞ্চায়েতের প্রধানকে দু’দিন ঘেরাও করেছিলেন ওই অঞ্চলের জলপ্রকল্পের অস্থায়ী কর্মীরা। কিন্তু তারপরেও মজুরি পাননি তাঁরা। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, ওই সব কর্মীদের মজুরি দেওয়ার জন্য টাকার সংস্থান নেই।
আরও পড়ুুন: এবার করনায় পজিটিভ ছত্রধর মাহাতো, হাজিরার জন্য ১৪ দিনের সময় দিল বিশেষ আদালত
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বরাদ্দ এলে তখন মজুরি দেওয়া হয়। কিন্তু বরাদ্দ আসতে দেরি হচ্ছে। অন্যদিকে, জনস্বাস্থ্য দফতরের বরাদ্দ আসতে বিলম্ব হলে অস্থায়ী কর্মীদের চতুর্দশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ থেকে মজুরি মেটানোর নিদান রয়েছে। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি সেটা করছে না।
পঞ্চয়েতগুলির বক্তব্য, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের ওই নির্দেশ মেনে মজুরি মেটাতে গলে অডিটে সমস্যা হতে পারে। এজন্য জেলা প্রশাসনের অনুমতি প্রয়োজন। জেলা থেকে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়নি।
হস্তান্তরিত পানীয় জল প্রকল্পের কর্মী সংগঠনের জেলা সভাপতি সঞ্জয় প্রতিহার বলেন, ‘‘বার বার প্রশাসনের নজরে বিষয়টি এনেছি। কিন্তু কোনও ভ্রূক্ষেপই করা হচ্ছে না। তাই সমস্যার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হয়েছে। কাজ বন্ধ করে আমরা বিকল্প কাজের সন্ধান করব।
সামনে পুজো। হাতে টাকা নেই। এছাড়া আমাদের সামনে আর কোনও পথ খোলা নেই।” সূত্রের খবর, ওই কর্মীরা কাজ বন্ধ রাখলে বিস্তীর্ণ গ্রামীণ এলাকার পানীয় জল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।