বেআইনি খাদান থেকে পাচার হচ্ছে মোরাম, মুখ্যমন্ত্রীকে নালিশ ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামনি মুর্মুর
স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: কয়েকদিন আগে বেআইনি মোরাম গাড়ি ধরে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে প্রশাসনের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামনি মুর্মু সরব হলেন বেআইনি বালি-মোরাম পাচারের বিরুদ্ধে।
সব দেখে শুনে ঝাড়গ্রামবাসী বলছেন, জনপ্রতিনিধি হলে এরকমই হওয়া চাই। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে জেলার নেতা-নেত্রীরা জুজু হয়ে থাকেন। ‘সব পেয়েছি’ কিংবা ‘আর কিছু একটু হলে ভাল হতো’র বাইরে এলাকার প্রকৃত সমস্যা তুলে ধরার ক্ষেত্রে কাউকেই এদিন সেভাবে বলতে শোনা যায়নি।
আদিবাসী তরুণী মামনি কিন্তু নির্ভয়ে ‘আমি কিছু বলতে চাই’ বলে উঠে দাঁড়িয়ে সরাসরি ভূমি দপ্তরের একাংশ আধিকারিকের নিষ্ক্রিয়তার কথা তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। মুখ্যমন্ত্রীকে মামনি জানালেন, রাতের অন্ধকারে বেআইনি বালি ও মোরাম পাচার হয়ে যাচ্ছে। রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে।
সব শুনে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, নিয়মিত অভিযান হচ্ছে। ধরা পড়লে জরিমানা আদায় করে কড়া পদক্ষেপও করা হচ্ছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে হবে। ধরপাকড় করা না হলে এসব বন্ধ হবে না।
আরও পড়ুন: হাথরাসের মেয়েটির ধর্ষণের প্রমাণ নেই, কিছু লোক সেটা নিয়ে রাজনীতি করছে : বিজেপি রাজ্য সভাপতি
পরে মামনি বলেন, ‘‘এলাকার মানুষের ভেটে জিতে জনপ্রতিনিধি হয়েছি। যথেচ্ছ মোরাম কাটার ফলে এক একটি এলাকার পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে বাধ্য হয়েছি।’’ মামনি জানালেন, বেআইনি মোরাম ও বালির বিরুদ্ধে তাঁর অভিযান চলতেই থাকবে।
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মোরাম আর বালিতে মিশে রয়েছে লাভের গুড়। তাই মামনি কী পারবেন ঘুঘুর বাসা ভাঙতে? কারণ, লভ্যাংশ প্রাপক মহলের হাত বহুদূর বিস্তৃত। তাই প্রশাসনিক মহলের কতটা সাহায্য মামনি পাবেন সেটাই এখন দেখার।
তবে সামনেই ভোট। তাই ভোট রাজনীতির অঙ্কে মামনির মোরাম অভিযানে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বাধা দেবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে।