কলকাতা

চাষের কাজে লোকসান, সেই হতাশা থেকে আত্মঘাতী হলেন এক চাষি

চাষের কাজে লোকসান, সেই হতাশা থেকে আত্মঘাতী হলেন এক চাষি

কথা বলতে পারেন না,মূক। চাষের কাজে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। সেই হতাশা থেকে আত্মঘাতী হলেন এক চাষি। বর্ধমান-২ ব্লকের বড়শুলের এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া। নিহতের নাম স্বপন মণ্ডল। ৪৬ বছর বয়স। জমিতে আলু এবং ধান চাষ করেছিলেন তিনি।

সেই চাষে লাভের মুখ দেখতে পারেননি বলে জানান এলাকার লোকজন। এদিকে বাজারে দেনা। মানসিক চাপ বাড়ছিল দিনকে দিন। এরপরই কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হন স্বপন মণ্ডল। বাড়ির লোকজনের কথায়, চাষে ক্ষতি, বাজারে দেনা, পাওনাদারের তাগাদা। চাপে চাপে এমন ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেন স্বপন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বপন মণ্ডল বড়শুলের অন্নদাপল্লির বাসিন্দা। বুধবার তিনি বিষ খান। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হলে সেখানেই বৃহস্পতিবার সকালে মারা যান। বর্ধমান পুলিশ মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে মৃতের ছেলে অয়ন মণ্ডল বলেন, বাবা কথা বলতে পারতেন না। শুনতেও পেতেন না। চাষবাস করে চলত।

ছেলের কথায়, বাবা নিজের ১২ কাঠা এবং ৩ বিঘা ভাগে নিয়ে আলু চাষ করেছিলেন। কিন্তু আলুতে দাগ থাকায় এবং ফলন কম হওয়ায় আলুর দাম মেলেনি। পাশাপাশি, আলুতে ক্ষতির পর তিনি ধান চাষ করেন। সেখানেই ক্ষতি হওয়ায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

মৃতের দাদা শিবুপদ মণ্ডলের কথায়, আলুতে দাগ থাকায় কার্যত জলের দরে প্রতি বস্তা আলু বিক্রি করতে হয়। ভাইয়ের সারের দোকানে প্রায় ১১ হাজার, ট্রাক্টরে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টাকা দেনা ছিল। পরিবারের লোকেরা জানান, চাষ আর মাঠই ছিল স্বপনের সবকিছু। সেই মাঠেই বিষ খেয়ে নিজেকে শেষ করে দিলেন।

শিবুপদ মণ্ডল বলেন, “আলু চাষ করেছিল। চাষে লোকসান হয়। এরপর সর্ষে লাগিয়েছিল জমিতে। তাতেও বিশেষ লাভের মুখ দেখেনি। ধান লাগিয়েছেন। সেই ধানও সাদা হয়ে গিয়েছে। পোকা খেয়ে নিয়েছে। এই নিয়ে অশান্তি। বোবা মানুষ ও। কথা বলতে পারে না। ছেলেটা মিলে অস্থায়ী কর্মী। সবসময় কাজ থাকে না।

চারদিকে দেনার দায়ে জড়িয়ে গিয়েছে। সবাই টাকা চাইতে আসে। সেই যন্ত্রণাতেই শেষ হয়ে গেল।” বিডিও (বর্ধমান সদর ২) সুবর্ণা মজুমদার বলেন, “বিষয়টি শুনলাম। একজন চাষি আত্মহত্যা করেছেন। কেনএই আত্মহত্যার ঘটনা সেটা খতিয়ে দেখা হবে। মৃত্যুর পিছনে চাষ না অন্য কিছু ঘটনা আছে তাও দেখা হচ্ছে।”

আরও পড়ুন ::

Back to top button