১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ (রবিবার) নদিয়া জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগরে কবি হেমচন্দ্র বাগচীর ১১৯তম জন্মজয়ন্তী পালন করা হলো। দুটি পর্বে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল— সকালে কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণি পুতুলপট্টি মোড়ে স্থাপিত কবি হেমচন্দ্র বাগচীর আবক্ষমূর্তির সম্মুখে এবং বিকেলে নজরুল স্মৃতিধন্য কৃষ্ণনগরের গ্রেস কটেজে হেমচন্দ্র বাগচীকে শ্রদ্ধা-স্মরণ অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়।
কল্লোল যুগের অন্যতম কবি নদিয়ার ভূমিপুত্র হেমচন্দ্র বাগচী অনেকটাই অনালোচিত। ১৭ সেপ্টেম্বর ছিল কবির ১১৯তম জন্মজয়ন্তী। সেদিন কৃষ্ণনগরে কবি অনুরাগীরা মিলিত হন এবং এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কবিকে স্মরণ করেন। ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মৃতিরক্ষা সমিতি’-র পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল।
কৃষ্ণনগরে হেমচন্দ্র অনুরাগীরা ফি-বছর কবি হেমচন্দ্র বাগচীর জন্ম দিবস ও প্রয়াণ দিবসে কবিকে বিশেষভাবে শ্রদ্ধা-স্মরণ করে থাকেন। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কবি হেমচন্দ্র বাগচী ১৯০৪ সালে নদিয়ার গোকুলনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৮৬ সালে তিনি প্রয়াত হন।
প্রায় ৮২ বছর তিনি জীবিত থাকলেও, অনেককটি বছর তাঁর কেটেছিল মানসিক বৈকল্যে। তাঁর সমকালীন অন্যান্য কবি সাহিত্যিকদের তুলনায় তিনি অনেকটাই বিস্মৃত। হেমচন্দ্র বাগচীর কলম থেকে জন্ম নেওয়া সাহিত্য-নিদর্শনগুলি বিদ্যালয়ের পাঠক্রম থেকে বাদ গিয়েছে অনেক আগেই। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসচর্চায় কবি হেমচন্দ্র বাগচী এখনো অনেকটাই অবহেলিত বলে মনে হয়।
হেমচন্দ্র বাগচী অচর্চিতই থেকে গিয়েছেন। ২০২১ সালে কৃষ্ণনগরে ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মৃতিরক্ষা সমিতি’-র জন্ম হয়। কবি হেমচন্দ্র বাগচীকে শ্রদ্ধা-স্মরণের মধ্যে দিয়ে আবার চর্চায় ফিরিয়ে আনা হলো এই স্মৃতিরক্ষা সমিতির অন্যতম লক্ষ্য। কালের নিরিখে তিনি বিস্মৃতির অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছেন।
হেমচন্দ্রের জীবনী পাঠ, তাঁর রচনাগুলি সম্পর্কে জনমানসে আগ্রহ তৈরি করা, তাঁর দুর্লভ সাহিত্যসম্ভার পুনরায় মুদ্রণ প্রভৃতি কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে ‘কবি হেমচন্দ্র বাগচী স্মৃতিরক্ষা সমিতি’-র সদস্যরা এগিয়ে চলেছেন।