DYFI কার্যালয়ে রাতভর মহিলাদের সঙ্গে চটুল গানে নাচ! পদ খোয়ালেন বাম নেতা
ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪
বাঁকুড়ার বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই (DYFI)-এর কার্যালয়ে নেতাদের চটুল গানে কোমর দুলিয়ে নাচের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। মহিলা কর্মীদের সঙ্গে রাতভর চলা এই নাচের অনুষ্ঠান দলের অভ্যন্তরেও প্রশ্নের মুখে ফেলেছে নেতৃত্বকে। সিপিএম নেতৃত্ব মুখে কুলুপ এঁটেছে, তবে দলের অন্দরে শুরু হয়েছে চাপা অসন্তোষ।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য কমিটির সদস্য শুভেন্দু মণ্ডল এবং বাঁকুড়া জেলা কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য অভীক মিশ্র-কে দেখা গিয়েছে। ভিডিওটি যে সময়ে ভাইরাল হয়েছে, তার ঠিক আগে ছিল ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্মেলন, ফলে বিষয়টি আরও স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে।
ডিওয়াইএফআই-এর বাঁকুড়া জেলা কমিটির এক সদস্য নিজেই ওই ভিডিওটি নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে প্রকাশ করেছিলেন। যদিও কয়েক মিনিটের মধ্যেই তিনি তা মুছে দেন। কিন্তু তার আগেই ভিডিওটি স্ক্রিনরেকর্ড হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে।
ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার ইন্দাসে, যেখানে চলতি মে মাসের ৫ ও ৬ তারিখ ডিওয়াইএফআই-এর জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, এই বিতর্কিত ভিডিও সম্মেলনের ঠিক আগে রেকর্ড করা হয়েছিল।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরে ডিওয়াইএফআই-এর জেলা কমিটিতে বড়সড় রদবদল হয়েছে। বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা শুভেন্দু মণ্ডলকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নীলাদ্রি শেখর সার্বভৌম এবং সম্পাদক হয়েছেন সঞ্জয় মাণ্ডি। তবে শুভেন্দু এখনও রাজ্য কমিটিতে রয়েছেন এবং সিপিএম জেলা কমিটিতেও তার পদে কোনও পরিবর্তন হয়নি।
তবে সূত্রের খবর, নতুন নেতৃত্বে অসন্তোষ দানা বাঁধছে। নীলাদ্রিকে সভাপতি করাকে ঘিরে দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে। এই নিয়ে দলীয়ভাবে কেউ প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও এক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক DYFI নেতা বলেছেন, “এ ধরনের ঘটনা বাম সংগঠনের নীতির পরিপন্থী। আমরা এটা মেনে নিতে পারছি না।”
গোটা বিতর্কে দলের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। প্রশ্ন করা হলে জেলা সম্পাদক সঞ্জয় মাণ্ডি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ভিডিওতে যাদের দেখা গিয়েছে, তারাও কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। দলের তরফে সবদিক সামলাতে ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’-এ মনোনিবেশ করা হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এই ঘটনা আবারও তুলে ধরেছে, রাজনৈতিক দলের সদস্যদের ব্যক্তিগত আচরণও কীভাবে দলের ভাবমূর্তিকে প্রভাবিত করতে পারে। DYFI-এর মতো আদর্শভিত্তিক সংগঠনের সঙ্গে এমন ঘটনার যোগ, বাম রাজনীতির নীতিগত অবস্থানকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছে। দলের ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ভর করছে, তারা কীভাবে এই বিতর্ককে সামাল দেয় এবং জনমানসে বিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে পারে।
সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন