বাঁকুড়ার অন্যতম বড় কুটিরশিল্প বিড়ি বাঁধাই শিল্প। এই শিল্পের অন্যতম কাঁচামাল কেন্দু পাতা। এক সময় বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে এই কেন্দু পাতা সংগ্রহে যুক্ত ছিলেন হাজার হাজার আদিবাসী ও তপশিলি মানুষ। কেন্দু পাতা সংগ্রহ ও বাছাই করে তাঁরা সেই পাতা সহায়ক মূল্যে বিক্রি করতেন লার্জ এরিয়া মাল্টিপারপাস সোসাইটি নামের সমবায়গুলিতে।
তবে বর্তমানে বিড়ি শিল্পের বড়ই দৈন্য দশা। আসলে বিড়ি শ্রমিকরা বলছেন, সরকারি সাহায্যের অভাবে ধুঁকছে এই শিল্প। ভিন রাজ্য থেকে কেন্দু পাতা কিনে বিড়ি শিল্প চালাতে গিয়ে উৎপাদন খরচের ভারে ধুঁকছে বিড়ি শিল্প। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সব মিলিয়ে শুধু বাঁকুড়া লোকসভা এলাকাতেই লক্ষাধিক মানুষের রুজি রুটিতে টান পড়ছে।
সরকারিভাবে কেন্দু পাতার সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির কথা বারবার শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। কিন্তু সহায়ক মূল্যে যাঁদের এই কেন্দু পাতা কেনার কথা, সরকারি টালবাহানায় জঙ্গলমহলের সেই সমবায়গুলিতে গত এক দশকে একের পর এক তালা পড়েছে। স্থানীয় ভাল মানের পাতা না মেলায় ভিন রাজ্য থেকে আমদানি করা কেন্দু পাতার উপর ভরসা করতে হচ্ছে বিড়ি কারখানাগুলিকে।
একদিকে বাড়তি দামে কাঁচামাল কেনা আর অন্যদিকে জিএসটির ভারে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে না পেরে বহু বিড়ি কারখানার দরজায় তালা পড়েছে। যেগুলি বেঁচে আছে সেগুলিও ধুঁকছে। অন্যদিকে কেন্দু গাছ কাটার জন্য সমবায়গুলিকে দেওয়া সরকারি অনুদান বন্ধ হয়ে থাকায় নিয়মিত গাছ কাটার কাজ বন্ধ কয়েক বছর। ফলে গাছে থেকে মিলছে না ভাল মানের পাতা। আর এইসব কারণে জঙ্গলমহলের অধিকাংশ ল্যাম্পস কার্যত নিষ্কৃয় হয়ে পড়েছে। জঙ্গলমহলে কেন্দু পাতা তুলে যে হাজার হাজার মানুষ নিজেদের রুজিরুটি চালাতেন তাঁরা অধিকাংশই কাজ হারিয়েছেন।