জীবন যাত্রা

কিশোরী কন্যার ব্যাপারে যে ব্যাপারগুলো মনে রাখবেন সবসময়

কিশোরী কন্যার ব্যাপারে যে ব্যাপারগুলো মনে রাখবেন সবসময়

মেয়েদের জন্য সবচাইতে স্পর্শকাতর সময়টি হচ্ছে তার কিশোরী বেলা এবং কিশোরী বেলা পেরিয়ে তরুণী হবার সময়টুকু। এই সময়েই মেয়েরা সবচাইতে বড় বড় ভুলগুলো করে। একটি ভুল প্রেমে জড়িয়ে যায়, ভুল বন্ধুত্বকে প্রাধান্য দেয়, প্রেমের জোয়ারে ভেসে গিয়ে জড়িয়ে পড়ে শারীরিক সম্পর্কে। ঘর থেকে পালিয়ে যাওয়া বা অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের ঘটনাগুলোও ঘটে এই বয়সে। চলুন, আজ জেনে নিই এমন ৮ বিষয় যা আপনার কিশোরী কন্যার বেলায় মনে রাখা অত্যন্ত জরুরী। এগুলো আপনি পালন করলে আপনার কন্যা থাকবে নিরাপদ।

১) খারাপ ব্যবহার নয়-
একটা জিনিস এখন ভুলে গেলে চলবে না যে কিশোরী বয়সের ব্যক্তিত্ব গঠন হয়ে যায় এবং ইগো প্রবল হতে শুরু করে। একই সাথে মন হয়ে ওঠে খুবই স্পর্শ কাতর। তাই এমন সময়ে ভুলে খারাপ ব্যবহার, খোটা দেয়া বা কথা শোনানোর মত কাজ করবেন না। এতে কন্যা খুব দ্রুত আপনাকে শত্রু ধরে নেবে।

২) তাকে শিখতে দিন-
এখনো তাই শেখার বয়স, নিজে নিজে এটা-ওটা করার বয়স। এই শেখার চেষ্টা বা অভ্যাসকে উৎসাহিত করুন, তার জানার আগ্রহকে মেটানোর চেষ্টা করুন। চুল হলেও তিরস্কার করবেন না। তাতে সে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে নতুনকে জানার প্রতি।

৩) আসলে কিন্তু ছোটই–
হ্যাঁ, কন্যা দেখতে বেশ বড় হয়েছে। চোখের সামনে বেড়ে উঠছে তরতর করে। কিন্তু এখনো কিন্তু সে শিশুই। নিজের দায়িত্ব নিয়েই নিতে পারবে, এমনটা ভেবে বসবেন না। শিশুকালে যেমন আপনার প্রয়োজন তার ছিল, এখনো আছে। এখন কেবল তার মাঝে নিজেকে নিয়ে সংকোচটা বেশি। মা-বাবা হিসাবে আপনাকে সর্বক্ষণ পাশে থাকতে হবে।

৪) ভালোবাসা আসতেই পারে মনে-
প্রেম একটি চিরন্তন ব্যাপার আর কিশোরী বেলাটাই প্রেম আসে সকলের জীবনে। আপনার-আমার সকলের জীবনেই এসেছিল। তাই মনে মনে প্রস্তুত থাকবেন যে কন্যার মনেও প্রেম আসবে। এই ব্যাপারটাকে বকা দিয়ে বা শাসন করে ঠেকাবার চেষ্টা করবেন না। বরং তাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলুন। কী হতে পারে, কী না হতে পারে, কোনটা ভালো বা কোনটা মন্দ। বন্ধু হয়ে পাশে দাঁড়ান, দেখবেন কোন কথাই সে গোপন করবে না এবং তার প্রেম নিয়ে আপনাকে বিশেষ চিন্তাও করতে হবে না।

৫) শরীরের ব্যাপারে আগ্রহী-
হ্যাঁ, আমাদের সমাজে আমরা ছেলেমেয়েদের সাথে শরীর বা যৌনতার বিষয় নিয়ে কথা বলি না। কিন্তু কিশোরী বেলায় নিজের শরীর নিয়ে ভীতি, জড়তা, দুশ্চিন্তা ইত্যাদি অনেক কিছু কাজ করে মেয়েদের মাঝে। সাথে আরও থাকে শারীরিক পরিবর্তনের অজানা শিহরণ। এটা যে খুবই স্বাভাবিক একটা পরিবর্তন কিংবা আসলে এই ব্যাপারটি কি, সেটা মায়েদেরকেই বুঝিয়ে বলতে হবে। খোলামেলা কথা বলতে হবে কন্যার সাথে। নতুন নিজে নিজে জানার আগ্রহ থেকে এক্সপেরিমেন্টাল সম্পর্কে জড়িয়ে জাওয়াও কিন্তু অসম্ভব নয়।

৬) প্রচুর প্রশংসা করুন
আপনি চিন্তা করতে পারবেন না যে এই বয়সে পিতা-মাতার প্রশংসা কী ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ কিশোরীদের কাছে। একটু প্রশংসায় তারা আকাশ ছোঁয়ার চিন্তা করতে পারে। নিজের কিশোরী কন্যার সবচাইতে বড় ফ্যান হয়ে উঠুন। কন্যা খুব সহজে বন্ধু হয়ে উঠবে।

৭) মনে রাখবেন, সে আপনাদের দেখেই শিখছে-
দাম্পত্য, প্রেম , সম্পর্ক মানে কী? কিশোরীর কাছে এটা তাই, যা সে মা-বাবার মাঝে দেখে। সুতরাং কিশোরী কন্যার সামনে নিজের সম্পর্ক নিয়ে সচেতন থাকুন। এমন কিছু করবেন না বা দেখাবেন না যাতে সে আঘাত পায় মনে।

৮) ভরসা রাখুন, ভরসা পাবেন –
চেষ্টা করবেন এই বয়সী কন্যাকে অকারণে সন্দেহ না করতে, আর যদি সন্দেহ হয়ও সেটা নিজের মাঝেই রাখুন। তার সামনে প্রকাশ করে ফেললে সে কিন্তু কারণে অকারণে সবকিছু গোপন করা শিখবে।

একটি মিষ্টি বয়স এই কিশোরী বেলা। ভালবাসুন নিজের কিশোরী কন্যাকে। একমাত্র আপনার ভালোবাসাই তাকে রাখবে নিরাপদ।

আরও পড়ুন ::

Back to top button