প্রযুক্তি

হাজারেরও বেশি পে নিয়ার বাই আউটলেট থেকে এখন সহজেই টাকা তোলা ও ট্রান্সফার করা যাবে

হাজারেরও বেশি পে নিয়ার বাই আউটলেট থেকে এখন সহজেই টাকা তোলা ও ট্রান্সফার করা যাবে

এপ্রিল ২৪, ২০২০: কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে লকডাউন চলছে। এই লকডাউনের সবচেয়ে কঠিন ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে দেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিকে। বিশেষত অভিভাসী শ্রমিক, দিনমজুর ও গ্রামের মানুষদের। এদের কথা ও গ্রামীণ এলাকার ছোট ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখেই ব্যাঙ্ক মিত্র ও আধার ব্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে টাকা তোলা ও জমা করার নতুন পদ্ধতি নিয়ে এসেছে পে নিয়ার বাই। এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শুধুমাত্র আঙুলের ছাপ দিয়ে কাছাকাছি যে কোনও রিটেল স্টোর থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা অবধি তুলতে পারবেন গ্রাহকরা। টাকা তোলা, বিল জমা করা সবই হবে এই ডিজিটাল সার্ভিসের মাধ্যমে। পে নিয়ার বাই এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যার নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে আছে বহুদূর। দেশের যে কোনও প্রান্তেই ব্যাঙ্কিং সহায়কদের মাধ্যমে প্রতিদিন তারা প্রায় সাড়ে আট লাখ লেনদেন করে থাকেন।

পে নিয়ার বাই প্ল্যাটফর্ম সবচেয়ে বেশি সুবিধা দেবে প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের। মাত্র ৫ শতাংশ গ্রামীণ এলাকায় এটিএম রয়েছে। সেভাবে ধরতে গেলে ভারতের প্রায় সাড়ে ছ’লাখ গ্রামের মধ্যে মাত্র ৩০ হাজারটি গ্রামে এটিএম বা পিওএস মেশিন আছে। তার থেকেও বড় কথা, গ্রামীণ এলাকার মানুষজনের বেশিরভাগই ডিজিটাল লেনদেন বোঝেন না। অনেকে এটিএম কার্ডও ব্যবহার করতে পারেন না। সেখানে যদি আঙুলের ছাপ দিয়েই টাকা তোলা বা জমা করা যায়, তাহলে সুবিধা হয় বহু মানুষের। গত বছরই, সরকারের তরফ থেকে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি ডেবিট কার্ডকে অচল ঘোষণা করা হয়েছিল। কারণ ওই কার্ডগুলিতে চিপ ও পিন নম্বরের কিছু সমস্যা হয়েছিল। এখন সেই অচল ডেবিট কার্ড যাঁদের রয়েছে, লকডাউনের সময় সবচেয়ে বেশি সমস্যাই তাঁরাই পড়েছেন। সেখানে সুবিধা নিয়ে আসবে পে নিয়ার বাই।

প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার অধীনে কৃষক এবং গরিব ও প্রান্তিক ৮০ কোটি মানুষের জন্য ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক। কিন্তু এই প্যাকেজে কীভাবে উপকৃত হবেন সেটা জানেন না অনেকেই। সচেতনতার অভাবে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি মানুষ টাকা তোলা বা জমা করা কোনওটাই করতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের প্রতিদিনই প্রায় ১২৫ কোটি টাকার লেনদেন করতে হচ্ছে।

পে নিয়ার বাই, দেশে ‘এইপিএস’ বা আধার নম্বরের উপর ভিত্তি করে পেমেন্টের সুবিধা ছড়িয়ে দিতে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে। ‘এইপিএস’-এ মোট লেনদেনের ৩৩% ই পে নিয়ারবাইয়ের করা। লকডাউনের সময় এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে লেনদেনও অনেক বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় ৬ লাখ লেনদেন হচ্ছে এইপিএস-এ। দেশে ১১০ কোটিরও বেশি মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগউ ব্যাঙ্কের কাজকর্ম সম্পর্কে অবগত নন। কীভাবে ফর্ম পূরণ করতে হবে জানেন না অনেকেই। সে দিক থেকে দেখতে গেলে এই আধার নির্ভর ডিজিটাল লেনদেনের পদ্ধতি অনেকটাই সুবিধাজনক। শুধুমাত্র আঙুলের ছাপ দিয়েই প্রয়োজনমতো টাকা তোলা বা জমা করা যাবে। ব্যাঙ্কের জটিল কাজকর্ম বোঝার দরকার পড়বে না প্রান্তিক মানুষদের।

“কেন্দ্রীয় সরকার যে দেশে এমন আধার নির্ভর লেনদেনের সুবিধা এনেছেন তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। প্রান্তিক মানুষদের জন্য বায়োমেট্রিক ডেটা দিয়ে টাকার লেনদেন এই সময় খুবই উপকারি। আমাদের ৯৩% খুচরো ব্যবসায়ী প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে এই লেনদেনের বিষয়ে তদারকি করছে। প্রতিদিনের টাকা তোলা ও জমা করার কাজ সামলাচ্ছেন এক লাখ ডিজিটাল প্রধান। সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং-এর নিয়ম মেনেই সব কাজ করা হচ্ছে,” বলেছেন পে নিয়ার বাইয়ের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও আনন্দ কুমার বাজাজ।

পে নিয়ার বাই শুধুমাত্র প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে নয়, সঙ্কটের এই সময় দেশের নানা প্রান্তেই মানুষজনের পাশে দাঁড়িয়েছে। ব্যাঙ্কিং সেক্টর এবং এনপিসিআই-এর সাহায্যে পে নিয়ার বাই পৌঁছে গেছে সংক্রামিত এলাকাগুলিতেও। তাছাড়া যেসব এলাকায় এটিএম খারাপ বা টাকা তোলা বা জমা করার অসুবিধা রয়েছে, সেখানেও কাজ করছে এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। হাসপাতাল, এনজিও, থানাগুলিও পে নিয়ার বাইয়ের সাহায্যে উপকৃত হচ্ছে।

আরও পড়ুন ::

Back to top button