ঝাড়গ্রাম

সময় বদলালেও এখনও টিকে রয়েছে ঝাড়গ্রামের ঐতিহ্য শুকনো শালপাতার ছাঁচে তৈরি মিষ্টি

সময় বদলালেও এখনও টিকে রয়েছে ঝাড়গ্রামের ঐতিহ্য শুকনো শালপাতার ছাঁচে তৈরি মিষ্টি - West Bengal News 24

স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: শুকনো শালপাতায় ছানার মণ্ড বসিয়ে হাতের তালুর চাপ দিচ্ছেন হালুইকর। পাতার শিরা-উপশিরার ছাপ পড়ে তৈরি হয়ে যাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সন্দেশ! এভাবেই ঝাড়গ্রামের মিষ্টিজাত সামগ্রীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে শালপাতাও। অরণ্যসুন্দরী ঝাড়গ্রামের মূল আকর্ষণ হল শালগাছ। এখানকার আদিবাসী-মূলবাসী মানুষেরা শালগাছকে দেবতা রূপে পুজো করেন। মূলবাসী মানুষজনের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে এবং ধর্মীয় ও সামাজিক কর্মসূচিতেও শালগাছের ডাল অপরিহার্য।

মিষ্টি তৈরির ছাঁচে শালপাতার ব্যবহারও চলে আসছে বহু বছর ধরে। এখনও ঝাড়গ্রামের কলেজ মোড়ের নিউ কুণ্ডু সুইটস্‌-এর মতো শহর ও জেলার কিছু দোকানে বিশেষ কয়েকটি মিষ্টি তৈরির ছাঁচ হিসেবে শুকনো শালপাতা ব্যবহার করা হয়। নিউ কুণ্ডু সুইটস্‌-এর প্রবীণ কারিগর শঙ্কর মিত্রের বাড়ি রানাঘাটে। বহু বছর ধরে ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন দোকানে মিষ্টি তৈরির অভিজ্ঞতা রয়েছে শঙ্করবাবুর। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ঝাড়গ্রামে আছেন তিনি।

শঙ্করবাবু জানালেন, শুকনো শালপাতার ছাঁচে তৈরি মিষ্টি দেখতে মনোহর। তাই শালপাতার ছাঁচে মণ্ডা, সন্দেশ, প্যাঁড়া বেশ ভালই তৈরি হয়। নিউ কুণ্ডু সুইটস্‌-এর কর্ণধার দেবীপ্রসাদ কুণ্ডু বলেন, ‘‘শালপাতার ছাঁচে তৈরি মিষ্টির ভালই কদর রয়েছে। তবে ক্রেতাদের অনেকেই জানেন না, স্রেফ শুকনো শালপাতায় ছানা ও খোয়ার মণ্ড চাপ দিয়ে এমন কারুকাজ করা মিষ্টি তৈরি হয়।’’

দেবীপ্রসাদ জানালেন, আধুনিক বাহারি ছাঁচ ব্যবহার করেও অন্যান্য মিষ্টি তৈরি হয়। তবে ঝাড়গ্রামের চিরাচরিত ঐতিহ্য হল শালপাতার ছাঁচের মিষ্টি। ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট লোকসংস্কৃতি গবেষক সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মিষ্টি তৈরি ক্ষেত্রে অনেক এখন অনেক আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। তবে জঙ্গলমহলে আদিকাল থেকে মিষ্টি তৈরির ছাঁচ হিসেবে শালপাতার ব্যবহার হচ্ছে। ঝাড়গ্রাম জেলার কিছু দোকানে এখনও শালপাতাকে মিষ্টি তৈরির ছাঁচ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।’’

তবে কতদিন এই সাবেক পদ্ধতি টিকে থাকবে সেটা অবশ্য আগামী সময়ই বলবে!

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য