ঝাড়গ্রাম

রাস্তার ধারে মরা গাছে মরণ-ফাঁদ অরণ্যশহর ঝাড়গ্রামে, আমফান ঝড়ের পরে বাড়ছে শঙ্কা

রাস্তার ধারে মরা গাছে মরণ-ফাঁদ অরণ্যশহর ঝাড়গ্রামে, আমফান ঝড়ের পরে বাড়ছে শঙ্কা

স্বপ্নীল মজুমদার, ঝাড়গ্রাম: বুধবার আমফানের ঝড়ে ঝাড়গ্রাম শহরের রাস্তার ধারের গোটা দশেক গাছ ভেঙে পড়েছিল। বুধবার দুপুরে শহরের মেন রোডে ভিশাল মলের কাছে আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বহু পুরনো একটি বহেড়া গাছ। ওই সময় রাস্তা দিয়ে ছাতা মাথায় যাচ্ছিলেন এলাকার এক মহিলা। অল্পের জন্য ওই মহিলা প্রাণে বাঁচেন। আবার বিকেলে ত্রাণ পৌঁছতে যাওয়ার সময় রেক রোডে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন পুরসভার এক আধিকারিক সহ তিনজন।

তাঁরা গাড়িতে যাওয়ার সময়ে আচমকা একটি শালগাছ ভেঙে পড়ে রাস্তার উপরে। গাড়িটির গতি কম থাকায় বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচেন পুরসভার আধিকারিক ও কর্মীরা। বুধবারের এমন সব ঘটনার পরে শহরবাসী কিন্তু চিন্তায় রয়েছেন। কারণ অরণ্যশহর ঝাড়গ্রামের সৌন্দর্য অসংখ্য শাল, পিয়াল, কেঁন্দ, বহেড়া, কৃষ্ণচূড়া, বট, অশ্বত্থের মতো বহু পুরনো সব গাছ। কিন্তু শহরের মেন রোড সহ কয়েকটি রাস্তার ধারে বেশ কিছু শালগাছ মরে কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অভিযোগ, বানি ও দোকানের সামনেটা পরিষ্কার রাখার জন্য একাংশ এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ী সুকৌশলে গাছগুলিকে মেরে ফেলেছেন। পরিবেশ কর্মীরা শহরের রাস্তার ধারের গাছগুলিকে বাঁচানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। গাছ বাঁচানো ও সবুজ ধ্বংসের বিরুদ্ধে বহুবার পথে নেমেছেন পরিবেশকর্মীরা। তবে শহরের রাস্ত্রা ধারের মরা গাছগুলি যে কোনও সময় ভেঙে পড়লে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশহ্কা রয়েছে সে কথা অবশ্য মানছেন পরিবেশ কর্মীরা। তাই বুধবারের ঘটনার পরে মরা গাছগুলিকে অবিলম্বে কেটে ফেলা প্রয়োজন বলে মনে করছেন শহরবাসী।

অন্যদিকে ভিশাল মলের কাছে শিকড় সমেত উপড়ে পড়া বহেড়া গাছটিকে দেখে পরিবেশকর্মীদের আশঙ্কা, রাস্তার সম্প্রসারণ ও কংক্রিটের নির্মাণ কাজের জন্য গাছটির শিকড় নষ্ট হয়ে দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। শহরের রাস্তার ধারে বেশ কিছু বহুতল তৈরি হচ্ছে। সেই সব নির্মীয়মান বহুতলের সামনে অনেক গাছ রয়েছে। ওই সব গাছও মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশ কর্মীরা। মরা গাছ কেটে ফেলে সেই জায়গায় নতুন গাছ রোপণের পাশাপাশি, শহরের অবশিষ্ট গাছগুলি রক্ষণাবেক্ষণের দাবি তুলেছেন তাঁরা। রাজ্যের বিশিষ্ট পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের আক্ষেপ ঝাড়গ্রাম শহর সবুজ হারিয়ে ফেলছে। এভাবে চলতে থাকলে ‘ঝাড়-গ্রাম’ তার কৌলিন্য হারিয়ে ‘ঝাড়-শহর’ হয়ে উঠবে।’’

আরও পড়ুন ::

Back to top button