কলকাতা

বিহারে দুর্গাপুজোর ভাসানে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ঐক্য বাংলার পথসভা

বিহারে দুর্গাপুজোর ভাসানে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ঐক্য বাংলার পথসভা

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা: গত ২৬ই অক্টোবর বিজয়া দশমীর পুণ্য তিথিতে বিহারের মুঙ্গের জেলায় বাঙালির প্রাণের দুর্গোৎসবের ভাসানে নির্মমভাবে লাঠিচার্জ ও গুলি চালায় বিহার পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী। এই ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। ক্ষোভ উগরে দেন অধিকাংশ বাঙালি।

এর প্রতিবাদে সরব হয়ে এবং মানভূম ভাষা আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে পুরুলিয়া জেলা গঠনের পুণ্য দিবসকে স্মরণ করে রবিবার ১লা নভেম্বর সন্ধ্যায় শ্যামবাজারে পথসভার আয়োজন করল বাংলার প্রথম মুক্তপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন ‘ঐক্য বাংলা’।

‘ঐক্য বাংলা’র সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতী সুলগ্না দাশগুপ্ত জানান, ” বিহারে হিন্দু বাঙালির মৌলিক ধর্ম পালনের স্বাধীনতার উপর এরকম বর্বরোচিত আক্রমণের প্রতিবাদে আমরা প্রথম থেকেই আমাদের সামাজিক মাধ্যমে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম।

আরও পড়ুন: ‘গিনেস বুকে নাম উঠবে আপনার,’ : গৌতম দেব

এছাড়াও এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এবং বিহারে বাঙালি জাতির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা যথাক্রমে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী , পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। আমাদের বার্তা কে আরো বলিয়ান করতে আমাদের সদস্য ও সমর্থকরা গণ ইমেইল ও করেছেন সংশ্লিষ্ট সমস্ত সরকারি দপ্তরে। ”

আজকের সভার মূল লক্ষ্য কী ছিল?

উত্তরে ‘ঐক্য বাংলা’র অন্যতম নেতৃস্থানীয় সদস্য অভিজিৎ গুহ নিয়োগী বলেন , ” সামাজিক মাধ্যমে জনমত গঠন ও প্রতিবাদ সবসময়ই চলবে। সামাজিক মাধ্যমে লড়াই করে ফলাফল আনতে ‘ঐক্য বাংলা’ সবসময়ই সক্ষম। আমাদের ট্র্যাক রেকর্ড তার সাক্ষী।

তবে মুঙ্গেরের নারকীয় ঘটনার প্রতিবাদ শুধু সামাজিক মাধ্যমে নয়, জানাতে হবে পথে নেমে। কলকাতা ও বাংলার পাড়ায় পাড়ায় বাঙালিকে সচেতন করতে হবে বাংলার বাইরে বাঙালির এইভাবে পদদলিত হওয়ার বাস্তব সম্পর্কে।

সে জন্যই আমাদের এই পথসভা। সেই সাথে সকল বাঙালি র সাথে মানভূম ভাষা দিবসের পূণ্য দিনটি উদযাপন করা এবং সকল বাঙ্গালীর সাথে এর গৌরব ভাগ করে নেয়া আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য।”

এদিনের অন্যতম বক্তা তরুণ ঐক্যযোদ্ধা রৌনক গুঁই ক্ষোভ উগরে দেন তাঁর বক্তব্যে: ” বিহার পুলিশ যেভাবে পুণ্যার্থীদের ওপর গুলি চালায় সেটা মেনে নেওয়া যায় না। বাঙালি এক না হলে ভবিষ্যতে দুর্গাপুজো কেন , সকল উৎসবেই বাঙালিকে সমস্যার মুখে পড়তে হবে।”

আরও পড়ুন: ‘শিয়ালদা – হাওড়া থেকে কবে চলবে লোকাল ট্রেন?

কার্যতঃ একই সুর ফুটে উঠল ‘ঐক্য বাংলা’র আর এক তরুণ তুর্কি প্রতিম চক্রবর্তীর বক্তব্যে যেখানে তিনি বলেন , ” শুধু বিহারে না কমবেশি বিভিন্ন রাজ্যেই বাঙালির ওপর অত্যাচার হচ্ছে। এর প্রতিবাদ যদি এখনই না করা তাহলে ভবিষ্যতে ভারতে বাঙালি জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। ”

ঐক্যযোদ্ধা ঋদ্ধি দত্ত বলেন , ” যদি আমরা এক হয়ে বাঙালি নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারি তবেই আমরা রুখে দাঁড়াতে পারব। ”

‘ঐক্য বাংলা’র অন্যতম নেতৃস্থানীয় সদস্য সৌম্য চৌধুরী র কন্ঠে ফুটে উঠল একটু অন্যরকম সুর। তাঁর সাফ বক্তব্য , ” আমরা যে আজকে বিহারের মুঙ্গেরের ঘটনার প্রতিবাদ করছি আর তার সঙ্গে যে আজকে আমরা মানভূম ভাষা দিবসকে উদযাপন করছি সেটা হয়তো কাকতালীয় হতে পারে। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে আমাদের পূর্বপুরুষরা কিন্তু দীর্ঘ চুয়াল্লিশ বছর হিন্দি আগ্রাসন সহ সামগ্রিক বাঙালি বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিয়েছিলেন। এটাই কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে যে নিজেদের অধিকারের জন্য সৎভাবে লড়লে সেটা আদায় করা সম্ভব । ”

পথসভায় কেমন সাড়া পেল ‘ঐক্য বাংলা’ ?

ঐক্য বাংলার তরুণ সদস্য দেবায়ন সিংহ বলেন , “পথসভার মূল উদ্দেশ্য এলাকার বাঙালির কাছে আমাদের বক্তব্য পৌঁছে দেয়া। এর ফলে যে কজন বাঙালি মুঙ্গেরের ঘটনার বিষয়ে জানলেন বা মানভূম ভাষা দিবস সম্পর্কে শুনলেন, সেটাই আমাদের আন্দোলনের সবথেকে বড় লাভ।”

আরও পড়ুন: ৫৫ বছরে পা রাখলেন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান

ছোট হলেও, মাত্র আট মাস বয়সী বাংলার প্রথম মুক্তপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন যেভাবে অনলাইনে এবং রাজপথে বিভিন্ন অভিনব কর্মসূচি তে সাফল্য এনে চলেছে তাতে বলতেই হয় ভবিষ্যতে তারা আপামর বাঙালি জাতির জন্য কাজ করতে বদ্ধপরিকর।

আরও পড়ুন ::

Back to top button