আশির দশকে টেলিভিশন সিরিজে অভিনয় দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৮৮ সালে ফৌজি টেলিভিশন সিরিয়ালে কমান্ডো অভিমন্যু রাই চরিত্রে একজন নতুন অভিনেতা হিসেবে সুযোগ পান কাজের। পরে ১৯৮৯ সালে সার্কাস সিরিয়ালে তিনি মোটামুটি কেন্দ্রীয় ভূমিকায় অভিনয় করেন, যেটি ছিল একজন সাধারণ সার্কাস অভিনেতার জীবন নিয়ে রচিত।
একই বছর অরুন্ধতী রায়ের ‘In Which Annie Gives it Those Ones’ টেলিভিশন চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তবে পিতা-মাতার মৃত্যুর পর নতুন জীবন শুরু করার জন্য সেই ছেলেটি নয়াদিল্লী ছেড়ে মুম্বাই পাড়ি জমান। হেমা মালিনী তার অভিষেক সিনেমা ‘দিল আশনা হ্যায়’তে অভিনয়ের সুযোগ করে দেন সেই ছেলেটিকে। তিনি আর কেউ নন, বলিউড বাদশা শাহরুখ খান।
আজ ২ নভেম্বর বলিউডের অন্যতম সেরা এই রোমান্টিক অভিনেতার জন্মদিন। তা জন্মদিনকে ঘিরে প্রতিবছরই নানা আয়োজন করে থাকেন ভক্তরা। শাহরুখের বাড়ি মান্নাতের সামনে জড়ো হয় হাজার হাজার ভক্ত অনুরাগী; শুধু তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানতে। শাহরুখও ভক্তদের সামনে এসে প্রতিবছর তার সেই চিরচেনা রোমান্টিক দৃশ্যের মত দুই হাত উঁচু করে ভক্তদের সাথে ভালোবাসা বিনিময় করেন। তবে এবার আর সেটি হচ্ছে না। সেই চিরাচরিত চেনা ছবির ছেদ ঘটতে চলেছে।
কারণ, জন্মদিন উপলক্ষ্যে শাহরুখ খান এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, এবার করোনার কারনে দয়া করে কেউ আমার বাড়ির সামনে আসবেন না। এবার আপনাদের ভালোবাসা দূর থেকে দিন আমাকে। প্রতিবছরই জন্মদিনের দিন শাহরুখ খান বাড়ির বাইরে থাকা অগণিত ভক্তদের কথা ভেবে দিনের কোনও এক সময়ে বাড়ির বাইরের বারান্দায় এসে কয়েক মুহূর্তের জন্য ভক্তদের দেখা দেন।
আরও পড়ুন: ৫৫ বছরে পা রাখলেন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান
কখন ও হাত তুলে ভক্তদের শান্ত হতে বলেন, আবার কখনও ভক্তদের কাছ থেকে শুভেচ্ছা নিয়ে দেখান থাম্বস আপ। কিন্ত এবার করোনার কারনে চিরাচরিত সেই রীতিতে বাধ সেধেছে। করোনার কারনে প্রত্যেককে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
বলেছেন, মান্নতের সামনে কেউ যেন কোনওরকম ভীড় না করেন। শাহরুখের এই সিদ্ধান্তে খুশি হয়ে সম্মান জানিয়েছে শাহরুখের বেশ কিছু ফ্যান ক্লাব। ওইসমস্ত ফ্যান ক্লাবের তরফে এবার অনলাইনে শাহরুখকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
ভারতের দিল্লিতে এক মুসলিম পরিবারে ১৯৬৫ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন চিরো তরুণ এই অভিনেতা। শাহরুখ খানের মায়ের নাম লতিফ ফাতিমা খান, বাবা তাজ মোহাম্মদ খান ও বোন শেহনাজ লালারুখ খান। পুরো নাম শাহরুখ খান হলেও এই ভারতীয় অভিনেতা, প্রযোজক ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব এসআরকে নামেও পরিচিত।
১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমা দিয়ে তার বলিউডে অভিষেক ঘটে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। একে একে ডর, বাজিগার, আনজাম, দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে, দিল তো পাগল হ্যায়, কুচ কুচ হোতা হ্যায়, কাভি খুশি কাভি গাম, স্বদেশ, দেবদাস, মাই নেম ইজ খান, চেন্নাই এক্সপ্রেস, হ্যাপি নিউ ইয়ার, রাম জানে, জোশ, ওম শান্তি ওম, রাব নে বানা দে জুড়ি, মোহাব্বাতেনের মতো সুপারডুপার হিট সিনেমা দিয়ে স্থান করে নিয়েছেন কোটি ভক্তের হৃদয়ে।
এই অভিনেতার পারিবারিক জীবনের গল্পও সিনেমার কাহিনীর মতোই। শাহরুখ ও গৌরি একই স্কুলে পড়াশুনা করলেও দুজনের মাঝে খুব বেশি পরিচয়-খাতির ছিল না। পরিচয় হয় এক অনুষ্ঠানে আবার দেখা হবার পর। ধীরে ধীরে গৌরি’র সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক থেকে ভালোবাসায় পরিণত হয়।
আরও পড়ুন:‘বীর জারা’সহ একাধিক সিনেমা থেকে ঐশ্বরিয়াকে বাদ দিয়েছিলেন শাহরুখ!
পুরো সিনেমার স্টাইলে পারিবারিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে গৌরির সঙ্গে সংসার শুরু করেন। ১৯৯১ সালের ২৫ অক্টোবর হিন্দু রীতি অনুযায়ী শাহরুখের হাতে মেয়েকে তুলে দেন গৌরীর মা-বাবা। শাহরুখ গৌরি দম্পতির প্রথম ছেলে আরিয়ান খান ও মেয়ে সুহানা খান।
২০১২ সালে শাহরুখের তৃতীয় সন্তান আবরামের জন্ম হয়। ক্যারিয়ার জীবনে এখন পর্যন্ত অসংখ্য বার ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন। পেয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্মাননাও।
