মদ্যপ পরিচারিকার নগ্ন ছবি তুলে হাজতে ধূপগুড়ির তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য
নজর অনেক আগে থেকেই ছিল। সুযোগ বুঝে মদ খাওয়ানোর অফারও দিয়েছিলেন। তা গ্রহণও করেছিলেন ওই পরিচারিকা। তার পরেই মদে বেঁহুশ সেই পরিচারিকাকে নগ্ন করে তাঁর ছবি তুলে নানা সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দিলেন গৃহকর্তা। সঙ্গে শরীরে হামলে পড়ে খাওয়াদাওয়া তো ছিলই। সেই ঘটনা সামনে আসতেই এলাকা জুড়ে পড়ে গেল শোরগোল।
ভিডিও ভাইরাল হতেই তা গেল পুলিশের হাতে। ভিডিও গেল বিরোধী দলের নেতাদেরও হাতে। ব্যাস তাঁরাও পেয়ে গেলেন এজেন্ডা। আবার এই ঘটনাকে সামনে রেখেই তাঁরা দাবি তুলে দিয়েছেন, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতেই হবে। এখানে আইনের কোনও শাসন নেই। যদিও এই ঘটনার জেরে বিস্তর প্রশ্নও উঠেছে। আর তা হল সত্যিই কী শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে নাকি তা দুইপক্ষের সম্পর্ক যার ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছে! ঘটনাস্থল জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি ব্লকের গদং-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোটপাড়া এলাকা।
জানা গিয়েছে, গদং-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত তৃণমূল সদস্য প্রতিমা সরকার ও তার স্বামী পার্থ সরকার বাড়িতেই কাজ করেন ওই পরিচারিকা। কিছুদিন আগে ওই পরিচারিকাকেই মদ খাইয়ে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় পার্থ। সেই সময় ওই পরিচারিকা মদ্যপ অবস্থায় বেঁহুশ তো হয়েইছিলেন, নগ্ন হয়েও গিয়েছিলেন। সেই সময়কার ছবিই পার্থ তুলে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছেড়ে দেয়। ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না প্রতিমা।
পরে ঘটনাটি জানাজানি হতে তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে অশান্তিও বাঁধে। প্রতিমা এখন সরাসরি অভিযোগ তুলেছেন পার্থ’র সঙ্গে ওই পরিচারিকার সম্পর্ক আছে। মজার কথা ওই পরিচারিকা তা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে যেমন স্বীকার করেছে তেমনি পুলিশের কাছেও পার্থকে নিয়ে কোনও অভিযোগ করেনি। তবে পুলিশ ওই ভিডিও হাতে পেতেই পার্থকে আটক করেছে ও তাঁর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় কুরুচিকর ও আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।
তবে ওই পরিচারিকার অন্য একটি অভিযোগের জেরে পুলিশ প্রতিমাকেই আটক করেছে। কেননা ওই পরিচারিকা প্রতিমার বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছে। এখন স্বামী-স্ত্রী দুইজনই পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।
তবে এই ঘটনায় তৃণমূলের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি। তাঁদের দাবি রাজ্যে যে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছুই নেই সেটা সামনে চলে এল। এই বিষয়ে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু এদিম আবার জানিয়েছেন, ‘ধূপগুড়ির ঘটনা বলে দিচ্ছে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার পরিবেশ তৈরী হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় সরকার যে কোনও দিন রাজ্যের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে পারে।’
সূত্র : এই মুহুর্তে