Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
রূপচর্চা

তারুণ্য ধরে রাখতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট

তারুণ্য ধরে রাখতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট - West Bengal News 24

কে না চায় তারুণ্য ধরে রাখতে? বয়স হলেই যে তারুণ্য ঝরে পড়ে, এ ধারণা ঠিক নয়। অনেকে কম বয়সেই বুড়িয়ে যায়। তারুণ্য দীপ্ত থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা দিয়ে থাকেন নানা পরামর্শ।

তারুণ্যদীপ্ত জীবন যাপন করার জন্য স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা পরামর্শ দেন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গ্রহণ করার জন্য। কীভাবে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মানুষকে তারুণ্যদীপ্ত রাখে, আসুন জেনে নেয়া যাক।

মানুষের দেহের কোষগুলোতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম রাসায়নিক বিক্রিয়া চলছে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য এসব বিক্রিয়া অত্যাবশ্যক। এসব বিক্রিয়ার কারণে মুক্ত মৌল তৈরি হয় এবং তারা দেহে জমা হতে থাকে। সামান্য পরিমাণ মুক্ত মৌল হয়তো বা তেমন ক্ষতিকর নাও হতে পারে। কিন্তু যখন বয়স আগায় এবং বেশি পরিমাণ মুক্ত মৌল জমা হয় দেহে, তখন মুক্ত মৌলগুলো দেহকোষের ধ্বংস বা মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

দেহের যেসব কোষ স্বল্প সময়ে প্রতিস্থাপিত হওয়ার সামর্থ্য রাখে (ত্বক, মুখের ভেতরের মিউকাস স্তরের কোষ ও পাকস্থলীর আবরণী কোষগুলো ইত্যাদি) তাদের বেলায় মুক্ত মৌল ঘটিত কোষ মৃত্যু তেমন বড় কোনো ক্ষতি করতে পারে না। কিন্তু যেসব কোষ খুবই ধীরে ধীরে প্রতিস্থাপিত হয় বা আদৌ প্রতিস্থাপিত হতে পারে না (যেমনÑ স্নায়ুকোষ, হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশি ইত্যাদি) তাদের প্রতিটি কোষের মৃত্যুই ক্ষতির কারণ হয়। আর বেশি সংখ্যক এমন কোষের মৃত্যু বা ধ্বংস ঘটলে দেহের বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।

মুক্ত মৌলগুলো যেকোনো মানুষের একক কোষীয় ক্রিয়াকর্ম থেকে শুরু হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত জমা হতে থাকে। দেহ কিছুটা বের করে দিতে পারে। তবে বেশির ভাগই দেহের ভেতরে থেকে যায় এবং কোষের ক্ষতি করতে থাকে। মুক্ত মৌলগুলো অক্সিডেটিভ বিক্রিয়া উপজাত। অক্সিডেটিভ বিক্রিয়া কোষের শক্তি উৎপাদনের প্রধান বিক্রিয়া। তাই অক্সিডেটিভ বিক্রিয়াগুলোকে বন্ধ বা হ্রাসও করা সম্ভব নয়। তবে দেহের ভেতরে যদি মুক্ত মৌলগুলোর উৎপাদন বন্ধ করা যায়, এদের জমা হওয়া হ্রাস বা বন্ধ করা যেত, তবে কোসের ধ্বংস বা মৃত্যুর একটি অভ্যন্তরীণ কারণ রহিত হতো; কিন্তু তা তো আর সম্ভব নয়। মুক্ত মৌলের উৎপাদন বন্ধ করতে গেলেও কোষের ক্ষতি হবে। তাই কোষের আয়ু বৃদ্ধির বিকল্প চিন্তা করতে হয়। আর তা হলো রাসায়নিকভাবে মুক্ত মৌলগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা। আর সেটা সম্ভব। এ কাজে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সহায়তা করে।

দেখা গেছে, যেসব প্রাণী দীর্ঘ বছর বেঁচে থাকে তাদের দেহে সুপার অক্সাইড ডিসপুটেজ নামক এনজাইম তৈরি হয়, যা মুক্ত মৌলকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে। মানুষের দেহের অভ্যন্তরেও মুক্ত মৌলকে নিষ্ক্রিয় করার মতো পদার্থ আছে। যেমন-বিলিরুবিন, গ্লুটাথিওন ইত্যাদি। আবার কিছু খাদ্য উপাদান থেকেও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। যেমন- বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই।

এসব অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলোকে প্রবলভাবে কাজ করতে দেখা যায় না। তবে ধীরে ধীরে হলেও ওরা মুক্ত মৌলের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের বিরোধিতা করে এবং কোষকে রক্ষা করতে সচেষ্ট হয়। তাই এসব অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাদ্য যেমন গাজর, মুলা, আপেল, আমলকীসহ তাজা ফলমূল ও শাকসবজি বয়স বাড়া গতিকে ধীর করতে সহায়ক হয়। কারো কারো মতে, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলো হৃৎপিণ্ডকে রক্ষা করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

দীর্ঘদিন সুস্থ দেহে যৌবনময় জীবনযাপনের জন্য কেউ কেউ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ওষুধ হিসেবে খাচ্ছেন; কিন্তু এসব ওষুধ মানুষের জন্য যথেষ্ট উপকারী হওয়ার সম্ভাবনা কম। তার প্রধান কারণ হলো, এসব ওষুধে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট একজন প্রাত্যহিক চাহিদার চেয়ে বহুগুণ বেশি থাকে। অতিরিক্ত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোষের অক্সিডেটিভ প্রক্রিয়া কমাবে, যা কোষের শক্তি উৎপাদনকে ব্যাহত করবে। পরিণামে কোষের মৃত্যু ত্বরান্বিত হবে। একই সাথে বিপুল পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহের জন্য ক্ষতিকর হবে।

আমরা প্রতিদিনের খাদ্য থেকেও কিছু পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পেয়ে থাকি। এদের সম্মিলিত প্রভাবে কোষের মৃত্যুই শুধু এগিয়ে আসবে। এ ক্ষেত্রে একটাই কাজ করা যেতে পারে। তা হলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাদ্য উপাদানগুলো প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়া। একই সাথে প্রাণিজ আমিষ বিশেষত গরু-ছাগলের গোশত খাওয়া কমিয়ে আনা এবং প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে অন্তত তিন দিন পরিমিত ব্যায়াম করা। জীবনের শৃঙ্খলাও দীর্ঘায়ু লাভে সহায়ক।

আরও পড়ুন ::

Back to top button