খেলা

পোলিওকে হার মানিয়ে প্রয়াত বাবা-মাকে দেওয়া কথা রাখতে পেরে আবেগতাড়িত সোনার ছেলে প্রমোদ

পোলিওকে হার মানিয়ে প্রয়াত বাবা-মাকে দেওয়া কথা রাখতে পেরে আবেগতাড়িত সোনার ছেলে প্রমোদ - West Bengal News 24

প্যারালিম্পিকের ব্যাডমিন্টনে দেশের হয়ে প্রথম সোনা জিতে ইতিহাস রচনা করেছেন প্রমোদ ভগত। বিশ্বমঞ্চে দেশকে গর্বিত করতে পেরে তিনি আপ্লুত বলে জানিয়েছেন। স্মরণ করেছেন নিজের প্রয়াত বাবা-মাকে। যাঁদের দেখানো পথে হেঁটে স্বপ্নপূরণ করতে পেরেছেন প্রমোদ। তাঁকে সর্বোতভাবে সমর্থন করা দেশের প্রতি নাগরিকদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্যারা শাটলার।

টোকিও প্যারালিম্পিকের ব্যাডমিন্টন সিঙ্গলসের এসএল থ্রি ইভেন্টের ফাইনালে গ্রেট ব্রিটেনের ড্যানিয়েল বেথেলের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলেন প্রমোদ ভগত। ম্যাচের প্রথম গেম দাপটের সঙ্গে ২১-১৪ পয়েন্টে জেতেন ভারতীয় প্যারা শাটলার। ম্যাচের দ্বিতীয় গেমে প্রত্যাবর্তনের মরিয়া চেষ্টা চালান উক্ত ইভেন্টে বিশ্বের দুই নম্বর তথা গ্রেট ব্রিটেনের প্যারা শাটলার।

শুরু থেকে এগোতে শুরু করেন ড্যানিয়েল। দ্বিতীয় গেমে অনেকটা পিছিয়েও যান প্রমোদ। তবু তিনি দুর্দান্ত ফিরে ম্যাচ জিততে সক্ষম হন। ২১-১৭ পয়েন্টে ওই গেম এবং ম্যাচ জিতে দেশকে সোনা দিয়ে আবেগতাড়িত প্রমোদকে চোখের জল মুছতে দেখা যায়। লাফিয়ে উঠে পড়েন কোচের কোলে।

আরো পড়ুন : ‘অলিম্পিক্সে ইচ্ছাকৃতভাবে ম্যাচ হারতে বলেন কোচ সৌম্যদীপ’, বিস্ফোরক মানিকা বাত্রা

ম্যাচ শেষে এক সাক্ষাত্‍কারে প্রমোদ জানান যে প্যারিলিম্পিকের মতো মঞ্চে দেশের হয়ে সোনা জিততে পেরে তিনি গর্বিত। তাঁর প্রয়াত বাবা-মা একই স্বপ্ন দেখতেন বলে জানিয়েছেন প্যারা শাটলার। প্যারালিম্পিক থেকে পদক জিতবেন বলে অভিভাবকদের কথা দিয়েছিলেন প্রমোদ। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পারাটা তাঁর কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার বলেও জানিয়েছেন ও়ড়িশার যুবক। সেই সঙ্গে নিজের ফাইনালের প্রতিপক্ষকেও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন তিনি।

প্রমোদ ভগতের কথায়, ড্যানিয়েল বেথেল দুর্দান্ত শাটলার। একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে টোকিও প্যারালিম্পিকের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ তিনি হেরেছিলেন বলে জানিয়েছেন ভারতীয় প্যারা শাটলার। সেই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে প্যারালিম্পিক ফাইনালে নিজের ভুলগুলি শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলেও বক্তব্য প্রমোদের। ম্যাচের দ্বিতীয় গেমে পিছিয়ে পড়ার পর যে তিনি খানিকটা চাপে পড়ে গিয়েছিলেন, তা জানাতেও ভোলেননি প্যারালিম্পিকে সোনাজয়ী দেশের প্রথম শাটলার। পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে পারার কারণেই এই সফলতা বলে মনে করেন ওড়িশার প্যারা শাটলার।

আরো পড়ুন : জন্ম থেকে ডান হাত তুলতে অক্ষম মনীশ বাঁ হাতে দেশকে সোনা দিলেন প্যারালিম্পিক্সে

ছয় বছর বয়সে প্রমোদ ভগতের পায়ের পঙ্গুত্ব প্রথম ধরা পড়ে। তাতে হাল না ছেড়ে বরং আরও কঠিন লড়াইয়ের জন্য তিনি প্রস্তুতি নেন। ১৩ বছর বয়সে এক ব্যাডমিন্টন ম্যাচ দেখতে গিয়ে এই খেলার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন ৩৩ বছরের যুবক।

এরপর প্যারা ব্যাডমিন্টনে নিজেকে নিয়োজিত করেন আতাবিরা গ্রামের প্রমোদ। এ লড়াইয়ে পরিবারকে সর্বোতভাবে পাশে পেয়েছেন ওড়িশার প্যারা শাটলার। পেয়েছেন বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণা। বিশ্ব প্যারা চ্যাম্পিয়নশিপে চার ও এশিয়ান প্যারা গেমসে একটি সোনা জেতা প্যারা শাটলার যে দেশের নতুন ক্রীড়া আইকন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া

আরও পড়ুন ::

Back to top button