জাতীয়

SEBI তে রয়েছেন আদনিদের আত্মীয়! শেয়ার বাজারের অন্দরেও ‘প্রভাবশালী’ আদানি

ওয়েস্ট বেঙ্গল নিউজ ২৪

SEBI তে রয়েছেন আদনিদের আত্মীয়! শেয়ার বাজারের অন্দরেও ‘প্রভাবশালী’ আদানি

সেবিতেও রয়েছেন আদানির (Adani Group) আত্মীয়! শেয়ার বাজারের অন্দরেও ‘প্রভাবশালী’ আদানি ? শেয়ার বাজারে বিপর্যয়ের মুখে একে একে প্রকাশ্যে আসছে আদানিকে ঘিরে থাকা বিতর্ক। তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম করে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে ইতিমধ্যেই দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। এবার আদানির সঙ্গে নাম জড়াল ভারতের শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি (সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া)।

আমেরিকার লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে শেয়ার বাজারে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। তারপর থেকেই ধস নেমেছে আদানিদের (Adani Group) শেয়ারের দামে। গত কয়েক দিনে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানির (Goutam Adani) বিপুল সম্পত্তিহানি হয়েছে। সেবির সঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর যোগাযোগের নেপথ্যে সিরিল শ্রফ (Siril Sroof)। তিনি একটি কর্পোরেট আইন সংস্থা চালান। এ ছাড়া শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবির কমিটির সক্রিয় সদস্য তিনি।

সিরিল আদানি গোষ্ঠীকে বিভিন্ন বিষয়ে আইনি পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সেবির সঙ্গে তিনি যুক্ত থাকায় ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের অভিযোগ জোরালো হয়েছে। অভিযোগ, শেয়ারের দাম সম্পর্কে সংস্থার গোপন তথ্য তিনি ফাঁস করে দিতেন আদানি এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠদের কাছে। সিরিল সম্পর্কে গৌতম আদানির (Goutam Adani) পুত্র কর্ণ আদানির শ্বশুর। সিরিলের কন্যা পরিধির সঙ্গে কর্ণের বিয়ে হয় ২০১৩ সালে। সেই থেকেই আদানিদের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছেন সিরিল।

শুধু সিরিল নন, আদানি পরিবারের অন্য সদস্যদের নামও জড়িয়েছে দুর্নীতিতে। হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে অনেকের নাম রয়েছে। সেখানে উঠে এসেছে হাজার কোটি টাকার হিরে দুর্নীতির প্রসঙ্গ। শেয়ার বাজারে লাগাতার বিপর্যয়ের মুখে আচমকা ২০ হাজার কোটি টাকার এফপিও বাতিল করে দিয়েছে আদানি গোষ্ঠী (Adani Group)।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সেই এফপিও এবং আদানিদের সামগ্রিক স্টকের উপর নজর রেখেছে সেবি (SEBI)। আদানিদের ২০ হাজার কোটি টাকার এফপিও নিয়ে পরামর্শ দিয়েছিল যারা, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল সিরিলের সংস্থা। আদানিদের (Adani Group) ব্যবসায় সিরিলের ভূমিকা তাই প্রশ্নের মুখে।

পরিবার ও আত্মীয় স্বজন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। হিন্ডেনবার্গের ১০৬ পাতার রিপোর্টে গৌতম আদানির দাদা বিনোদ আদানির নাম রয়েছে। তিনি আদানি গোষ্ঠীর একটি ভুয়ো সংস্থার পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। এ ছাড়া, ২০১৬ সালে পানামা দুর্নীতি এবং ২০২১ সালে প্যান্ডোরা পেপার দুর্নীতিতেও নাম জড়িয়েছিল তাঁর।

গৌতমের ভাই রাজেশ আদানির বিরুদ্ধে বেআইনি হিরে ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ভারত সরকারের ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স বা ডিআরআই তাঁকে এই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত করেছিল। ১৯৯৯ এবং ২০১০ সালে দু’বার রাজেশকে গ্রেফতারও করা হয়। হিন্ডেনবার্গের নজরে রয়েছেন গৌতমের শ্যালক সমীর ভোরা। অভিযোগ, হিরে দুর্নীতির অন্যতম হোতা ছিলেন তিনি। দুর্নীতি ঢাকার জন্য একাধিক মিথ্যার আশ্রয়ও নিয়েছিলেন তিনি।

আমেরিকান সংস্থার রিপোর্টে হিরে দুর্নীতির আর এক কাণ্ডারি হিসাবে যতীন মেটার নাম করা হয়েছে। যতীনের পুত্র আদানির ভাইয়ের কন্যার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ। এছাড়াও, হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টে গৌতম আদানির স্ত্রী প্রীতি আদানির নামও উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি পেশায় দাঁতের চিকিৎসক। আদানি ফাউন্ডেশনের চেয়ারওম্যান প্রীতি। অভিযোগ, তিনিও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।

তবে এত কিছু ঘটনা মধ্যে একটি বিষয় চোখে পড়ার মতো। আর তা হল আদানিদের শেয়ারে মিউচুয়াল ফান্ডের লগ্নি। দেখা যাচ্ছে, যে গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম মাত্র দু’বছরে ত্রিশ গুণেরও বেশি বেড়েছে, ফান্ড ম্যানেজাররা সেই সংস্থাকে সচেতন ভাবে এড়িয়ে গিয়েছেন।

প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, যে গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম মাত্র দু’বছরে ত্রিশ গুণেরও বেশি বাড়ে, ফান্ড ম্যানেজাররা সেই সংস্থাকে এড়িয়ে চললেন কেন? তবে কি ঘটনা এই যে, ভারতের আর্থিক নিয়ন্ত্রকরা যে গোলমালকে দেখেও না-দেখার ভান করে ছিলেন, অভিজ্ঞ ফান্ড ম্যানেজাররা সেই ঝুঁকিগুলিই এড়িয়ে চলতে চেয়েছিলেন ?

আরও পড়ুন ::

Back to top button