সম্পর্ক

বিয়েতে মানসিক প্রস্তুতি আছে তো?

বিয়েতে মানসিক প্রস্তুতি আছে তো?

চলে এলো বিয়ের মৌসুম। এসময় বাড়ির লোকেরা ব্যস্ত থাকেন সাজগোজ, গহনা, অতিথি আপ্যায়নসহ নানা কিছু নিয়ে। তবে সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া দরকার বর-কনের মানসিক অবস্থা নিয়ে। সবাইকে পাশে দাঁড়াতে হবে হবু বর-কনের মানসিক অবস্থার প্রস্তুতির জন্য।

বিয়ের আগে বিভিন্ন কারণেই মানিসক চাপ অনুভব হতে পারে। জীবনসঙ্গী কেমন হবে, শশুরবাড়ির লোকজন কেমন হবে, নিজেকে ঠিকঠাকভাবে উপস্থাপন করা যাবে কি না এসব বিষয়গুলো সবার মনেই হয়।

তবে কিছু বিষয় মেনে মনকে প্রস্তুত রাখতে হবে অন্তিম সময়ে। জেনে নিই বিয়ের মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে-

১. বিয়ের আগে মনের যত্ন নিন। হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন। জীবনের সব দুশ্চিন্তা বাদ দিতে হবে। সময় কাটাতে রূপচর্চা করতে পারেন। এতে চাপ কমবে, সেই সঙ্গে ত্বক ও চুলও সুন্দর হবে।

আরও পড়ুন :: সন্তান জন্মের পর সম্পর্কে রোম্যান্স আনার ৫ উপায়

২. বিয়ের বাড়ির ঝক্কি কম নয়। কনের ওপর অনেক বেশি মানসিক চাপ পড়ে। যখনই চাপ অনুভব করবেন, কিছুক্ষণের জন্য কাজ থেকে বিরতি নিন। কফি বা চা নিয়ে বারান্দায় বসুন, প্রিয় বন্ধু কিংবা হবু জীবনসঙ্গীকে ফোন দিয়ে কথা বলুন, অথবা একান্তে নিজে নিজেই সময় কাটান। পছন্দের গান শুনুন।

৩. নতুন পরিবেশে যাওয়ার আগে নিজ পরিবারের সঙ্গে জমিয়ে সময় কাটান। সময় বের করে বাইরে কোথাও খেতে যান, একসঙ্গে বসে বিয়ের পরিকল্পনা করুন, দায়িত্বগুলো ভাগ করে দিন।

৪. ঘুম হচ্ছে সুস্থতার চাবিকাঠি। রাত জাগলে আপনার অস্থিরতা আরও বাড়বে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে সব ধরনের যন্ত্র থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন, পারলে এক গ্লাস দুধ পান করুন।

৫. বন্ধুরা হলো জীবনের অক্সিজেনের মতো। তাই মানসিক অস্থিরতা দূর করতে খোলামেলা পরিবেশে বেড়িয়ে আসতে পারেন। মন খুলে গল্প করুন। তাদের সঙ্গে গায়ে হলুদ, মেহেদি সন্ধ্যা, বিয়ে নিয়ে পরিকল্পনা করুন।

৬. বিয়ে নিয়ে আপনার মনে যদি নানা ধরনের নেতিবাচক বিষয় ঘুরপাক খায়, তাহলে কাউন্সিলরের পরামর্শ নিন। আপনার মনোভাব এ ধরনের থাকলে আপনি বিবাহিত জীবনে সুখী হতে পারবেন না। তাই কাউন্সিলিং করুন, প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন বিয়ের আগে। এতে বিয়ের আগে উদ্বেগ বা ভয় কাটিয়ে উঠবেন সহজেই।

আরও পড়ুন :: যেসব অভ্যাসে সঙ্গীর সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী হবে সম্পর্ক

৭. বিয়ের আগেই হবু দম্পতির উচিত দুজনের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলে নেওয়া। কারণ বিবাহবিচ্ছেদের বেশিরভাগ ঘটনাই ঘটে আর্থিক বিষয়কে কেন্দ্র করে। তাই বিয়ের আগেই হবু জীবনসঙ্গীর সঙ্গে আপনার বেতন, ঋণ, সম্পদ, বিনিয়োগ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলুন।

৮. ক্ষমা একটি সফল বিবাহের অন্যতম চাবিকাঠি। সঙ্গীর ছোটখাট ভুল ক্ষমা করেই একে অপরের সঙ্গে বসবাস করতে হবে। তাই এর জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত থাকুন। না হলে পরবর্তী সময়ে একে অন্যের প্রতি ভুল বোঝাবুঝি, তিক্ততা ও দূরত্বের সৃষ্টি হবে।

৯. প্রতিটি পরিবারের আলাদা নিয়মকানুন, আচার-ব্যবহার। এসব ক্ষেত্রে দুজনকেই সহযোগিতা পরায়ণ হতে হবে।

১০. লাভ বা অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ উভয় ক্ষেত্রেই ছেলে-মেয়েকে সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। দুজনকেই পরস্পরের পরিবারের সঙ্গে মানিয়ে চলার মানসিকতা থাকতে হবে।

বিয়ের আগে পাত্র-পাত্রীর শারীরিক প্রস্তুতিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিয়ের আগে উভয়ের বয়স বেশি না কম, শারীরিক উচ্চতা, ওজন, রক্তচাপ ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমেই জানা যায়। আবার মেয়েদের ক্ষেত্রে শারীরিক সমস্যা, হেপাটাইটিসসহ সব টিকা দেওয়া আছে কি না এসব বিষয়েও জানা যায়। এ ছাড়া তাদের কেউ ধূমপান বা অন্য কোনো নেশায় আসক্ত কি না সে বিষয়েও নিশ্চিত ধারণা পাওয়া যায়। তাই বিয়ে করার আগে ছেলে-মেয়ে উভয়কে লজ্জা পরিহার করে সুখী জীবনের উদ্দেশ্যে মেডিকেল চেকআপ করানো উচিত।

আরও পড়ুন ::

Back to top button