যে কারণে বাড়ি ছাড়লেন মিয়া খলিফা
কেউ যদি বলেন মিয়া খলিফা নামটির সঙ্গে তিনি পরিচিত নন, তাহলে হয় তিনি মিথ্যা বলছেন, নতুবা তিনি ইচ্ছে করেই মুখে কুলুপ এঁটেছেন। একটি ওয়েবসাইট বলছে, মাত্র চার বছর আগেই এক নম্বর আকর্ষণীয় ব্যক্তির তালিকায় মিয়া খলিফার নাম উঠেছিল।
সারা দুনিয়ায় তার পরিচিতি নীল ছবির তারকা হিসেবে। চোখে চশমা। মুখে যুবতীর সারল্য। তিনি মিয়া খলিফা। আপাতদৃষ্টিতে সাদামাঠা দেখতে হলেও গোটা দুনিয়ায় তাকে চেনে অন্যভাবে। নীল ছবিতে কাজের জন্য মিয়া নাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লেও, অনেকেই হয়ত জানেন না এই পেশা তিনি ছেড়েছেন বহু আগেই।
মাত্র ৩ মাস নীল ছবির জগতে কাজ করেছেন মিয়া খলিফা। অল্প বয়েসে অনেক টাকা রোজগার, অজানা রঙিন জগতে হারিয়ে যাওয়ার হাতছানি থেকেই এই পেশায় আসেন তিনি। অথচ মোহভঙ্গ হয় মাত্র তিন মাসেই। সম্মান ও সময়ের বিনিময়ে সেভাবে টাকাও রোজগার করতে পারেননি মিয়া।
সম্প্রতি বিবিসি-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে নিজের অভিজ্ঞতার কথা খোলসা করছেন প্রাক্তন পর্ণ তারকা মিয়া খলিফা।
২০১৫ সালে তিন মাস কাজ করার পরেই এই পর্ণ ছবির জগৎ থেকে বেরিয়ে এসেছেন। অথচ হারাণো সম্মান আর ফিরে পাননি মিয়া। পর্ণ জগতের নীল আলো থেকে বেরিয়ে আজও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি তিনি। তার ব্যক্তিগত জীবন তছনছ হয়ে গিয়েছে। ‘আজও রাস্তাঘাটে লোকজনের মাঝে নিজেকে নিয়ে ভীষণ হীনমন্যতায় ভুগি’, এমনটা বললেন আবেগপ্রবণ মিয়া।
মিয়ার কথায়, নীল ছবির জগত থেকে বের হওয়াটা সহজ নয় কখনওই। এই ইন্ডাস্ট্রিতে ঢোকার পর একের পর এক পাকচক্রে জড়িয়ে পড়েন অল্পবয়সী মেয়েরা। পর্ণ ইন্ডাস্ট্রির ব্ল্যাক হোল টেনে নেয় অল্পবয়সী মেয়েদের। নারী পাচারকারীদের মাধ্যমেও কীভাবে ছোট ছোট মেয়েরা পর্ণ ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে বাধ্য হয়, সেই বিষয়েও জানিয়েছেন মিয়া।
তিনি বললেন, ‘বহু মেয়ে অপরিণত মনে, ভুল সিদ্ধান্ত ও কিছু খারাপ মানুষের পাল্লায় পড়ে নিজের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। আমায় এ ধরনের অনেক মেয়েই মেইল করে সে কথা জানিয়েছে।’
মিয়ার কথায়, পর্ণ ইন্ডাস্ট্রির আসল রূপ বুঝতে পেরেই কোনওমতে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। মিয়া জানান, তাঁর পর্ণ ছবি করার কথা জানতে পেরেই তাকে ত্যাগ করেছেন মা-বাবা। সেই পর্ণ ছেড়ে দেওয়ার পরেও আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি।
তবে, সময়ের সঙ্গে ক্ষত কমতে থাকে। তাই আজও আশার আলো মিয়ার চোখে। নীল ছবির জগত থেকে বেরিয়ে মিয়া এখন আইনসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করেন। হিসাবরক্ষকের কাজ করেন তিনি। মিয়া বললেন, ‘কিছু ভুলের ক্ষমা হয় না, কিন্তু সময়ের সঙ্গে পরিস্থিতি বদলাবে, সেই আশা রাখি।’