জানা-অজানা

বর্ষবরণের আজব রীতি যে সব দেশে

বর্ষবরণের আজব রীতি যে সব দেশে

নতুন বছরে পান্তা-ইলিশ খেতেই হবে! আমাদের কাছে স্বাভাবিক মনে হলেও বাইরের কেউ কিন্তু হুট করে ব্যাপারটা বুঝতে পারবে না। অবাক হবেই। ঠিক তেমনি দুনিয়ায় এমন অনেক অঞ্চল আছে, যাদের বর্ষবরণের তরিকা দেখে চমকে উঠব আমরাও।

বর্ষবরণের প্রস্তুতিতে এতটুকু কমতি নেই বিশ্বজুড়ে! সূর্য ডুবতেই শুরু হয়ে যায় পার্টি, আতসবাজি, হইহুল্লোড়। এর মধ্যে বেশ কিছু দেশে বর্ষবরণের রীতি একটু আলাদা। শুধু আলাদাই না বেশ মজাদারও।

বর্ষবরণের আজব রীতি যে সব দেশে

ফ্রান্স
বর্ষবরণ নিয়ে রয়েছে দেশভেদে বেশ কিছু মজাদার সংস্কারও। যেমন ধরা যাক ফ্রান্সের কথা। বছরের শেষ দিনে ঘরে থাকা সব মদ শেষ করতেই হবে। নতুন বছরে ঘরে পুরনো মদ পড়ে থাকা অশুভ। সৌভাগ্য ঘরে আসবে না। তবে ঘরে-থাকা মদ ফেলে দিলে চলবে না। খেয়েই শেষ করতে হবে৷। মদে মশগুল রাত, নতুন ভোর!

বর্ষবরণের আজব রীতি যে সব দেশে

প্যারাগুয়ে
কিংবা ধরুন প্যারাগুয়ের কথা। সেখানে বছরের শেষ পাঁচদিন তাদের ঘরে কোনও আগুন জ্বলে না। হয় না কোনও রান্না। ওই পাঁচদিনকে তারা পালন করে ‘ঠান্ডা খাবার খাওয়ার দিন’ হিসেবে৷। ৩১ ডিসেম্বর রাত ১২টার পর নতুন বছরের ঘণ্টা বাজলে হেঁসেলে আগুন জ্বেলে নতুন নতুন পদ, একসঙ্গে খেয়ে নতুন বছরে পা দেন তারা।

বর্ষবরণের আজব রীতি যে সব দেশে

পোল্যান্ড
পোল্যান্ডেও বর্ষবরণটা বেশ মজার। এখানকার তরুণীরা বর্ষবরণের রাতে খরগোশের মতো পোশাক পরে জড়ো হয়। এরপর খরগোশের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি জোগাড়ের পালা। তারপর ওই শাক-সবজির যতটা সম্ভব চিবিয়ে খায়! তাদের ধারণা, শাকসবজি খেয়ে নতুন বছরে পা দিলে নতুন বছরের দিন সুন্দর হবে। থাকবে শাম্তি।

বর্ষবরণের আজব রীতি যে সব দেশে

বুলগেরিয়া
বুলগেরিয়াবাসীর কাছে বর্ষবরণের দিন হাঁচি দেয়া বেশ মঙ্গলের। বর্ষবরণের দিন তাঁদের বাড়িতে আসা কোনও অতিথি যদি হেঁচে ফেলেন, তাহলে বাড়ির কর্তা তাঁকে নিজের খামারে নিয়ে যান। এরপর হেঁচে-ফেলা ব্যক্তির প্রথম নজর খামারে যে পশুটির ওপর পড়বে, সেই পশুটিকে গৃহকর্তা ওই ব্যক্তিকে উপহার দেন। ভাগ্য সাথে থাকলে অনেক অতিথি ঘোড়াও উপহার হিসেবে পেয়ে থাকেন। বুলগেরিয়ানদের ধারণা, হেঁচে-ফেলা অতিথি পুরো পরিবারের জন্য সুখ ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসবেন।

বর্ষবরণের আজব রীতি যে সব দেশে

হাঙ্গেরি
বছরের শেষ দিন হাঙ্গেরিবাসী হাঁস, মুরগি বা কোনও ধরনের পাখির মাংস খান না। তাঁদের মতে, ওই দিন উড়তে পারে, এমন পাখির মাংস খেলে নতুন বছরে জীবন থেকে সব সৌভাগ্য উড়ে যাবে! এর পাশাপাশি, তাঁরা নতুন বছরে পরিচিত বা বন্ধুদের যে উপহার দেন, তাতে চিমনি পরিষ্কার করছেন এমন একজন শ্রমিকের ছবি থাকে৷‌ এর কারণ হিসেবে তাঁদের ব্যাখ্যা, উপহারে এই ছবিটি থাকলে পুরনো বছরের সমস্ত দুঃখ নতুন বছরে মুছে যাবে।

বর্ষবরণের আজব রীতি যে সব দেশে

ভিয়েতনাম
ভিয়েতনামের উত্তরে কিছু সংখ্যালঘু জাতি রয়েছে, যারা বছরের শেষ দিনে যে জলাধার থেকে প্রতিদিন জল সংগ্রহ করে, সেই জলাধারে দল বেঁধে গিয়ে মোমবাতি জ্বেলে মাটিতে মাথা ছুঁইয়ে প্রণাম করে জলাধার থেকে এক কলসী জল নিয়ে আসে। এরপর ওই জল দিয়ে বছরের প্রথম দিন রান্না করে পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে উৎসর্গ করার পর নিজেরা খায়। তবে বছরের প্রথম দিনের রান্নায় স্যুপ জাতীয় খাবার থাকা চলবে না। বছরের প্রথম দিন স্যুপ জাতীয় খাবার খেলে নাকি মাঠের ফসল বন্যায় ভেসে যাবে।

বর্ষবরণের আজব রীতি যে সব দেশে

আফ্রিকা
আফ্রিকার মাদাগাস্কারায় নতুন বছর শুরুর সাতদিন আগে থেকে মাংস খাওয়া বন্ধ। বছরে প্রথম দিন বাড়িতে মুরগির মাংস রান্না হবে। প্রথমে তা খেতে দেওয়া হবে বাবা-মাকে। বাবা-মাকে খেতে দেওয়া হয় মুরগির লেজের দিকের অংশটা। আর ভাই-বোনেদের দেওয়া হয় মুরগির পা।

আরও পড়ুন ::

Back to top button