Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
স্বাস্থ্য

হেয়ার কালার কি চুলের মারাত্মক ক্ষতি করে?

হেয়ার কালার কি চুলের মারাত্মক ক্ষতি করে?

ফ্যাশন ট্রেন্ডকে অবজ্ঞা করে থাকাটা জেনওয়াইদের পক্ষে একেবারেই সম্ভব নয়। “যুগের সঙ্গে পা না মেলালে যে অবলুপ্ত হয়ে যেতে হয়”- এমন ধরনায় বিশ্বাসী নব প্রজন্মের ধ্বজাধারীরা তো তাই কিছুটা পিয়ার প্রেসারে, আর কিছুটা না বুঝেই এমন কিছু ফাঁদে পরে যান যে তাদের শরীরের মারাত্মত ক্ষতি হয়ে যায় এবং এই বিষয়ে তারা জেনে ওটার আগেই যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে যায়। যেমন ধরুন, চুলে রং করার প্রবণতা প্রায় সব কম বয়সিদের মধ্যেই দেখা যায়।

কিন্তু এই ফ্যাশন আমাদের শরীর এবং চুলের স্বাস্থ্যের জন্য কি আদৌ ভাল? চিকিৎসা বিজ্ঞান কিন্তু অন্য কথা বলছে। গবেষকরা প্রশ্ন তুলেছেন কতগুলি বিষয় নিয়ে, যেগুলির উত্তর জেনে নেওয়াটা সবারই একান্ত প্রয়োজন। যেমন, হেয়ার কালার চুলে লাগান মাত্র ঝাঁঝালো একটা গন্ধ বেরতে শুরু করে। এমনটা কেন হয়? আমাদের চুলের স্বাভাবিক গাড় কাল রং হঠাৎই অন্য রঙে বদলে যায় কীভাবে? আমাদের চুলের স্বাভাবিক রঙকে মুছে ফলতে যে যে উপদানগুলি ব্যবহার করা হয়, সেগুলি কি চুলের পক্ষে আদৌ ভাল? এই প্রশ্নগুলির উত্তর জানলে আপনাদের চোখ যে একেবারে কপালে উঠে যাবে, সে কতা হলফ করে বলতে পারি। কারণ বাস্তবটা যে খুব ভয়ঙ্কর। প্রসঙ্গত, চুলে রং করা মাত্র চুলের এবং শরীরের কী কী ক্ষতি হয়ে থাকে? চলুন এই কঠিন সত্যটির সন্ধানে বেরনো যাক।

১. রঙে উপস্থিত অ্যামোনিয়া চুলের বাইরের স্তরকে একেবারে নষ্ট করে দেয়: চুলে রং করা মাত্র সেটি বেশ কয়েকটি বাঁধা পেরিয়ে তবে চুলের অন্দরে গিয়ে পৌঁছায়। তবেই কালারটা দীর্ঘ দিন থাকে। এই বাঁধাগুলি পেরনোর সময় ধীরে ধীরে চুলের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যায়। প্রথমে চুলের একেবারে বাইরের যে দেওয়াল রয়েছে সেটিকে ভেঙে দেয় অ্যামোনিয়া, তবেই হেয়ার কালারটি ভিতরে ঢুকতে পারে। আর এই দেওয়ালটা ভেঙে যাওয়ার কারণে চুলের প্রথম রক্ষাকবচটা আর কর্মক্ষম তাকে না। ফলে চুলের ক্ষতি শুরু করে দেয়।

২. হেলার কালারে উপস্থিত পারোক্সাইড চুলের প্রকৃত রঙকে টেনে তুলে দিতে শুরু করে: চুলের প্রথম রক্ষাকবচ ভেঙে দেওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপে হেয়ার কালারে উপস্থিত ব্লিচ বা পারোঅক্সাইড ধীরে ধীরে আমাদের চুলের যে কোলো রং কয়েছে তাকে ঘষে ঘষে তুলে দিতে শুরু করে। আর প্রাকৃতিক কালারের জায়গা নেয় কৃত্রিম কালার। প্রসঙ্গত, এই পুরো প্রক্রিয়াটি শুনতে যতটা সহজ মনে হল, আদতে কিন্তু তেমন নয়। একবার ভাবুন, চুলের রক্ষাকবচ নষ্ট হয়ে গেছে, আর অন্যদিকে পরোক্সাইডের মতো বিষ চুলের অন্দরে প্রবেশ করছে। এমনটা হলে চুলের স্বাস্থ্য কি আর ভাল থাকে! একেবারেই নয়।

৩. আরও যে ক্ষতিগুলি হয়ে থাকে: তৃতীয় ধাপে হেয়ার কালারে উপস্থিত মনোমারস নামে একটি কেমিক্যাল চুলের একেবারে শেষ রক্ষাকবচ পর্যন্ত পৌঁছে গিয়ে সেখানে নিজের মতো আরো একাধিক কেমিক্যাল তৈরি করে এবং সেগুলি একে অপরের সঙ্গে মিশে গিয়ে আয়তনে বড় হতে শুরু করে। সেই সঙ্গে পলিমারস নামে একটি উপাদানের জন্ম দেয়, যা হেয়ার কালারকে চুলের অন্দরে চিরস্থায়ী জয়গা করে দেয়। সেই কারণেই তো দেখবেন দীর্ঘ দিন রং একই রকম থেকে যায়। স্নানের পরও রঙের কোনও হেরফের হয় না।

৪. অ্যামিনায় ছাড়া যে রঙগুলি পাওয়া যায় সেগুলি একেবারেই ক্ষতিকারক নয়? এই ধরনা একেবারেই ভুল যে অ্যামোনিয়া ফ্রি কালার চুলের কোনো ক্ষতি করে না। একটা সহজ বিষয় হয়, চুলের প্রাকৃতিক রং না ওঠা পর্যন্ত কৃত্তিম রং নিজের জায়গা করবে কীভাবে! আর এমনটা যখনই হবে, তখনই তো চুলের দফারফা হয়ে যাবে। তাহলে একথা কী করে সত্যি হয় যে অ্যামিনিয়া ফ্রি রং চুলের কোনও ক্ষতি করে না। প্রসঙ্গত, অ্যামিনিয়া ছাড়া যে রঙগুলি পাওয়া যায় সেগুলি চুলের কিছুটা কম ক্ষতি করে এই যা, বাকি কোনও পার্থক্য়ই হয় না।

৫. ডাইটা যত বেশি সময় চুলে রাখবেন, তত বেশি ক্ষতি হবে: ডাইটা লাগানোর পর অনেকেই দীর্ঘ সময় পর স্নান করেন। ভাবেন ডাইটা যত বেশি সময় রাখবেন, তত ভাল রং হবে। একথার মধ্যে কোনো ভুল নেই যে ডাইটা বেশি সময় রাখলে চুলের রং আরো উজ্জ্বল হয়। কিন্তু সেই সঙ্গে রঙে উপস্থিত ক্য়ামিকেলগুলি বেশি বেশি করে চুলের অন্দরে প্রবেশ করে চুলের ক্ষতি সাধন করার সুযোগও পেয়ে যায়। তাই তো বলি একটা সহজ কথা মাথায় রাখবেন, চুলের কৃত্তিম রং যত উজ্জ্বল হবে, তত চলের বেশি বেশি করে ক্ষতি হবে।

৬. হেয়ার কালার থেকে ঝাঁঝালো গন্ধ কেন বেরয়? রঙে উপস্থিত পারোঅক্সাইড চুলের অন্দরে থাকা প্রোটিনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে সালফারের জন্ম দেয়। সেই কারণেই এমন ঝাঁঝালো গন্ধ বরতে শুরু করে। সেই সঙ্গে অনেকের চোখ জ্বালা করার মতো সমস্যাও দেখা দেয়।

৭. রং করলে কি চুল পরা বেড়ে যায়? এই ধরণা একেবারেই ঠিক নয় যে রং করা মাত্র চুল পরা শুরু হয়ে যাবে। হেয়ার কালারের সঙ্গে চুল পরার সরাসরি কোনো যোগাযোগ নেই বললেই চলে। তবে চুলে রং করার আগে এবং পরে যদি ভাল করে কন্ডিশনার লাগানো যায়, তাহলে চুল পরার আশঙ্কা আরো কমে যায়।

৮. হেয়ার কালার কি আমাদের শরীরের উপরও কুপ্রভাব ফেলে? একাদিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে চুলের রঙে উপস্থিত একাদিক কেমিক্যাল, যেমন- অ্যামিনোফেনল, ডায়ামিনোবেনঞ্জিন এবং ফেনিলেনডিয়ামাইন শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে। শুধু তাই নয়, ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি করে। তাই তো কম সময় অন্তর অন্তর চুলে রং করার অভ্যাস ছাড়ুন। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!

আরও পড়ুন ::

Back to top button