বিচিত্রতা

যে গ্রামে বরের বদলে বিয়ে করে তার বোন!

যে গ্রামে বরের বদলে বিয়ে করে তার বোন!

বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন। বিয়ের সাজে প্রস্তুত কনে। বরযাত্রীও চলে এসেছে। বিয়ে পড়াতে প্রস্তুত পুরোহিতও। কিন্তু বর কই?

গুজরাটের ছোটে উদেপুরের গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলে এই প্রশ্ন আপনার মনে জাগতে বাধ্য। কারণ বরযাত্রী নিয়ে যিনি এসেছেন, তিনিও বিয়ের সাজে এক মহিলা! হয় বরের অবিবাহিতা বোন বা বরের পরিবারের কোনও এক অবিবাহিত মহিলা।

চমক এখানেই শেষ নয়। বিয়ের সব অনুষ্ঠান- সিঁদুর দান থেকে সাত পাক, সব কিছুই সম্পন্ন করেন বরের বাড়ির সেই অবিবাহিত কনে।

আর বর? তিনি শেরওয়ানি পরে, সাফা মাথায়, কোমরে ঐতিহ্যবাহী তলোয়ার ঝুলিয়ে থেকে যান বাড়িতেই, তার মায়ের কাছে।

[ আরও পড়ুন : তরুণীকে বিয়ে করলেই আড়াই কোটি টাকা দেয়ার ঘোষণা বাবার! ]

বিয়ের মণ্ডপে বরের হয়ে বিয়ে সারেন তার বোন বা অবিবাহিতা আত্মীয়া। এমন আজব রীতিই চলে আসছে গুজরাটের তিন গ্রাম সুরখেদা, সানাদা ও আম্বালায়।

কিন্তু এই রীতির কারণ কী?

আম্বালা গ্রামের সরপঞ্চ বেচান রাথওয়ার কথায়, ‘কথিত আছে, আমাদের পুরুষ দেবতা ব্রহ্মদেব অন্য দেবতাদের বিয়ে দেওয়ার কাজে এত ব্যস্ত ছিলেন, যে নিজে বিয়েটা করে উঠতে পারেননি। তাকে সম্মান জানাতেই আমাদের গ্রামের ছেলেরা নিজেদের বিয়েতে উপস্থিত থাকে না। বরের হয়ে তার বোনই বিয়ের সব নিয়ম-নীতি পালন করে। নতুন বৌ-ও সে-ই সঙ্গে করে নিয়ে আসে। লোকের বিশ্বাস, এই রীতিতে বিয়ে হলে দেবতা নবদম্পতিকে সুরক্ষিত রাখেন।’

সুরখেদা গ্রামের সরপঞ্চের দাবি, যারাই এই রীতি মানেন না, বিয়ের পর তাদেরই জীবনে অশান্তি ঘনিয়ে আসে। তার কথায়, ‘যারাই এটাকে অন্ধবিশ্বাস বলে অস্বীকার করেন, তাদেরই বিয়ে হয় ভেঙে যায়, না হলে পরিবারে অশান্তি বেড়ে যায়।’

এই বিশ্বাসের ভিত্তিতেই বৌদিকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে যান ননদ। সিঁদুর দান, মালা বদল, সাত পাকে ঘোরা- সব রীতি পালন করেন তিনি। পরদিন বৌ শ্বশুরবাড়ি পৌঁছনোর পর বরকে পাশে বসিয়ে ছোটখাটো ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বিয়ের আচার পালন হয়।

[ আরও পড়ুন : খবর পড়তে পড়তে দাঁত খুলে গেল পাঠিকার! ভিডিও ভাইরাল ]

বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশই পড়াশোনা শিখেছেন, কেউ কেউ বাইরেও কাজ করেন। তারা কি মানেন এসব রীতি?

আম্বালা গ্রামের প্রধান কিশোর রাথওয়ার কথায়, ‘অনেকে বিশ্বাস মেনে এই রীতিতেই বিয়ে করে। অনেকে আবার এসব মানে না। কিন্তু সেক্ষেত্রে বাড়ির লোককে বোঝানো রীতিমতো কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।’

পাশে থেকে এক প্রবীণা বলে ওঠেন, ‘বাড়ির লোকের তো অমঙ্গলের ভয় রয়েছে। ২৫-৩০ বছর আগে এক শিক্ষিত দম্পতি এই রীতি না মেনে বিয়ে করেছিল। বিয়ের কয়েক দিনের মধ্যে দু’জনেই মারা যায়। তার পর আর কে ঝুঁকি নেবে?’

তথ্যসূত্র: এবেলা

আরও পড়ুন ::

Back to top button