বলিউড

অমিতাভের ৭৮তম জন্মদিন, একঝলকে পুরো ক্যারিয়ার

অমিতাভের ৭৮তম জন্মদিন, একঝলকে পুরো ক্যারিয়ার
অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন

বলিউডের শাহেনশাহ। ভক্তদের প্রিয় বিগ বি। কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনকেই এমন সব বিশেষণ মানায়। আজ (১১ অক্টোবর) বলিউডের এই মেগাস্টারের ৭৮তম জন্মদিন। চলুন এক ঝলকে ফিরে দেখা যাক গুণী এই তারকার বর্ণিল ক্যারিয়ার।

পদবি পরিবর্তন:
অমিতাভের পদবি ছিলো ‘শ্রীবাস্তব’। কিন্তু বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন নামের শেষে `বচ্চন’ ব্যবহার করায় তিনি আর তা বদলাননি।

নাম পরিবর্তন:
হরিবংশ রাই বচ্চন ছেলের নাম রাখতে চেয়েছিলেন ‘ইনকিলাব’। কিন্তু কবি সুমিত্রা নন্দন পান্তের পরামর্শে তিনি বেছে নেন ‘অমিতাভ’।

পড়াশোনা-চাকরি:
দিল্লি থেকে পড়াশোনা শেষ করে কলকাতার একটি শিপিং ফার্মের নির্বাহী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন অমিতাভ। এটাই ছিলো তার প্রথম চাকরি। তখন ৫০০ রুপি বেতন পেতেন তিনি।

বেতন:
চলচ্চিত্র জগতে পা রাখার আগে অমিতাভের সবশেষ চাকরির বেতন ছিলো ১৬৮০ রুপি।

বাংলা ছবির মধ্য দিয়ে রূপালি পদায় অভিষেক:
হিন্দি ছবির অভিনেতা হলেও অমিতাভের অভিষেক হয়েছিল বাংলা চলচ্চিত্রের মাধ্যমে! ১৯৬৯ সালে মৃণাল সেনের বাংলা ছবি ‘ভুবন সোম’-এ ধারাবর্ণনা দিয়ে চলচ্চিত্রাঙ্গনে পা রাখেন তিনি। একইবছর হিন্দি ছবিতে অভিনয়ে অভিষেক হয় তার।

গড়পড়তা অভিষেক:
অমিতাভ বচ্চন বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন ১৯৬৯ সালে ‘সাত হিন্দুস্তানি’ ছবির মধ্য দিয়ে। কিন্তু তার অভিনীত এই ছবিটি আশানুরূপ সফলতা অর্জন করতে পারেনি।

সাদাকালো ছবি:
রূপালি পর্দার তারকা অমিতাভ একটি সাদাকালো ছবিতে অভিনয় করেছেন। সেটি হলো তার প্রথম ছবি ‘সাত হিন্দুস্তানি’।

দীর্ঘদেহী অভিনেতা:
বলিউড ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে লম্বা তারকা হচ্ছেন অমিতাভ বচ্চন। সত্তর দশককে নির্মাতা হৃষিকেশ মুখার্জির যুগ হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। ১৯৭৩ সালে হৃষিকেশের ‘নামাক হারাম’ ছবিতে রাজেশ খান্নার সঙ্গে কাজ করেছিলেন অমিতাভ। আর সেসময় থেকে তাকে দর্শক উচ্চতা ও অভিনয় গুণে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির শাহেনশাহ হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন।

রাজকীয় সুপারস্টার:
৭০ দশকে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করছিলেন রাজেশ খান্না। ১৯৭১ সালে হৃষিকেশ মুখার্জির ‘অভিমান’ ছবিতে রাজেশের সঙ্গে কাজ করেন অমিতাভ বচ্চন। কিন্তু ছবিটিতে রাজেশের উপস্থিতি সত্ত্বেও ড. ভাস্কর ব্যানার্জীর চরিত্রে অভিনয় করে নজর কাড়েন অমিতাভ।

অমিতাভের সেরা:
‘দিওয়ার’, ‘শোলে’, ‘ত্রিশূল’, ‘ডন’, ‘কালা পাথর’, ‘দোস্তানা’, ‘শান’, ও ‘শক্তি’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে রাগী যুবক হয়ে রূপালি পর্দায় ধরা দিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। এগুলোই বিগ বি’কে এনে দিয়েছে তারকা খ্যাতি এবং ইন্ডাস্ট্রিতে তার অবস্থান শক্তভাবে তুলে ধরেছিলো।

বিশেষ কারণ:
সুনীল দত্ত পরিচালিত ও অভিনীত ‘রেশমা অউর শেরা’য় (১৯৭১) বিশেষ কারণে জায়গা পেয়েছিলেন অমিতাভ। সুনীলের স্ত্রী অভিনেত্রী নার্গিস ছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর বান্ধবী। আর অমিতাভ ছিলেন ইন্দিরা গান্ধীর ছেলে রাজীব গান্ধীর বন্ধু। সেই সুবাদে অমিতাভকে সুযোগ দিতে নার্গিসকে চিঠি লেখেন ইন্দিরা।

ছিলো না কোনো কাজ:
ক্যারিয়ারের মধ্যবর্তী সময়ে হাতে কোনো কাজ ছিলো না অমিতাভের। তখন যশ চোপড়ার সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলেন তিনি। তার প্রযোজিত ‘মোহাব্বাতে’ (২০০০) ছবির মাধ্যমে সেটি পূরণ হয়। এটি পরিচালনা করেন যশ চোপড়ার ছেলে আদিত্য চোপড়া।

কিছুদিনের বিরতি:
১৯৯২ সালে কিছুদিনের জন্য রূপালি পর্দার আড়ালে চলে গিয়েছিলেন অমিতাভ। এরপর ১৯৯৭ সালে ‘মৃত্যুদাতা’র মধ্য দিয়ে প্রত্যাবর্তন করেন তিনি।

লেখার দক্ষতা:
ডান-বাম দুই হাত দিয়েই সমানভাবে লিখতে পারেন সিনিয়র বচ্চন।

দ্বৈত চরিত্র:
মোট ১০টি ছবিতে দ্বৈত চরিত্রে হাজির হয়েছেন অমিতাভ। আর ‘মহান’ (১৯৮৩) ছবিতে তিনটি চরিত্রে দেখা গেছে তাকে।

৩০ ফুট ঝরনা থেকে লাফ:
‘আকস’ (২০০১) ছবির জন্য বিশেষ কারিগরি সহায়তায় অভিনেতা মনোজ বাজপেয়িসহ ৩০ ফুট উঁচু ঝরনা থেকে লাফিয়ে পড়েন বিগ বি।

টানা শুটিং:
২০০৬ সালে ‘শুটআউট অ্যাট লোখান্ডওয়ালা’য় টানা পাঁচ ঘণ্টায় ২৩টি দৃশ্যে অভিনয় করে ইউনিটের সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন অমিতাভ।

ভয়ানক দুর্ঘটনা:
‘কুলি’ ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে ভয়াবহ এক ‍দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। ছবির একটি অ্যাকশন সিকোয়েন্স চলাকালীন ঠিকভাবে নামতে না পারার ফলে একটি টেবিলের কিনারায় ধাক্কা লেগে ভয়ানকভাবে আহত হন বিগ বি! শরীরের প্লীহা ফেটে যায়। অনেকে তো ধরেই নিয়েছিলেন তিনি আর বাঁচবেন না। কিন্তু তবুও হাল ছাড়েননি তিনি। ১৯৮৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিটি ছিলো ব্লকবাস্টার হিট।

রূপালি পর্দায় পছন্দের নাম:
রূপালি পর্দার জন্য ‘বিজয়’ নামটি বেশি পছন্দ করতেন বিগ বি। অন্তত ২০টি ছবিতে এই নামের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন:
বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে এক দশক কঠোর পরিশ্রমের পর ১৯৯০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘অগ্নিপথ’ ছবির জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘরে তোলেন অমিতাভ বচ্চন।

বেসামরিক সম্মাননা:
ভারত সরকারের কাছ থেকে বেসামরিক সম্মাননা হিসেবে ১৯৮৪ সালে পদ্মশ্রী, ২০০১ সালে পদ্মভূষণ ও ২০১৫ সালে পদ্মবিভূষণ খেতাব পান অমিতাভ।

ভিন্ন চরিত্র:
‘ব্ল্যাক’, ‘পা’ ও ‘পিকু’ এই ছবি তিনটিতে একেবারে ভিন্ন চরিত্রে ধরা দিয়েছিলেন অমিতাভ বচ্চন। চমকপ্রদ তথ্য হলো- এই তিনটি ছবির জন্যই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়া হিন্দি সিনেমায় অনবদ্য ভূমিকা পালনের জন্য দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে তাকে।

টেলিভিশনে অভিষেক:
কুইজ শো ‘কৌন বানেগা ক্রোড়পতি’র মধ্য দিয়ে ২০০০ সালে ছোটপর্দায় অভিষেক হয় অমিতাভ বচ্চনের।

চিরসবুজ তারকা:
বয়স ৭৮। কিন্তু এখনও বলিউডের ব্যস্ততম তারকাদের একজন তিনি।

 

আরও পড়ুন ::

Back to top button