সন্তান জন্মদানের জন্য কতটা কষ্ট করতে পারেন একজন মা? দেখুন একটি মর্মস্পর্শী কাহিনী
গর্ভের সন্তানের জন্য কতোই না কষ্ট করে থাকেন মায়েরা। গর্ভে থাকা অবস্থাতে তো বটেই, জন্মদানের পরেও সারা জীবন ধরে সন্তানের যত্ন নিয়ে থাকেন তারা। কিন্তু সবচাইতে বেশি কষ্টটা হয়ে থাকে জন্ম দেবার সময়েই। আরও বেশি কষ্ট হয় যখন এই জন্মদানের প্রক্রিয়ায় থাকে কোনো জটিলতা।
অনেকেই হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন, এরপর তাকে আদরে মুড়িয়ে বাড়ি নিয়ে যান। কিন্তু সবার কি সেই ভাগ্য হয়? ভারতের লাদাখ অঞ্চলের এই পরিবারের সেই ভাগ্য হয়নি। পায়ে হেঁটে ৪৫ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে গর্ভবতী এই মা-কে হাসপাতালে পৌঁছাতে হয়।
বাড়ির কাছে কোনো হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের প্রতিষ্ঠান না থাকায় পায়ে হেঁটেই ৯ দিন যাবত এই পথ পাড়ি দেন তারা। শুধু তাই নয়, সে সময়ে তাপমাত্রা ছিলো শূন্যেরও ৩৫ ডিগ্রী নিচে। পাহাড়ি নদীর জমাট বেঁধে থাকা বরফের ওপর দিয়ে হেঁটে চলেন তারা। নিজেদের দরকারি জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে যান পিঠে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের জঘন্যতম ৬টি পানীয়
দিনের বেলায় ক্রমাগত হাঁটতে থাকেন এবং প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মাঝে গুহায় আগুন জ্বালিয়ে রাত পার করেন। কখনও কখনও বরফগলা পানির মাঝে দিয়েও হেঁটে চলতে হয়েছে তাদের।
হাসপাতালে নিরাপদে সন্তান জন্ম দেবার পরেও শেষ হয়নি এই কষ্ট। আবারও সেই বরফ ঢাকা পুরো পথ পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাদের সবাইকে, কেননা বেশিদিন হাসপাতালে থাকার অর্থ এই দরিদ্র পরিবারের নেই। সাথে সেই নবজাতককেও ভোগ করতে হয়েছে হিমশীতল আবহাওয়া।
আরও পড়ুন: মাত্র ১ মিনিটেই ময়লা জমে যাওয়া সিলিং ফ্যান পরিষ্কার করার দারুণ কৌশল
সন্তান প্রসবের পর ক্লান্ত শরীর নিয়েই মা-কেও পাড়ি দিতে হয়েছে এতটা পথ। তার সুবিধের জন্য বড় স্লেজ নিয়ে আসা হয় বটে, কিন্তু হাড়কাঁপানো শীতের কামড় উপেক্ষা করতে হয়েছে তাকে এবং সেই সাথে নবজাতক শিশুটিকেও।
গরমকালে এই পথ চলচলের জন্য মোটামুটি উপযুক্ত থাকলেও শীতকালে তা হয়ে পড়ে চলাচলের অযোগ্য এবং বিপদসংকুল। পরিবারটির এই সংগ্রামই প্রমাণ করে, নতুন একজন মানুষকে পৃথিবীতে আনতে আপনজনেরা কতোটা কষ্ট করতে প্রস্তুত!