ঝাড়গ্রাম

ঝাড়গ্রামে শুভেন্দুকে কালো পতাকা দেখাল টিএমসিপি, জেলার চারটি বিধানসভায় জেতার দাবি ‘মুক্তিসূর্যের’

স্বপ্নীল মজুমদার

ঝাড়গ্রামে শুভেন্দুকে কালো পতাকা দেখাল টিএমসিপি, জেলার চারটি বিধানসভায় জেতার দাবি ‘মুক্তিসূর্যের’ - West Bengal News 24

ঝাড়গ্রাম: আগে ছিলেন জঙ্গলমহলে তৃণমূলের মুক্তিসূর্য। এখন তিনি গেরুয়া শিবিরে ভোটের মার্জিন বাড়ানোর কারিগর! বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে প্রথমবার ঝাড়গ্রামে এসে অবশ্য কালো পতাকা দেখতে হল শুভেন্দু অধিকারীকে।

সোমবার বিকেলে ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি কার্যালয়ে দলের জেলা কার্যকর্তাদের সঙ্গে সাংগঠনিক সভা করতে এসেছিলেন শুভেন্দু। লোধাশুলি থেকে ঝাড়গ্রাম শহরে আসার ১৫ কিমি রাস্তায় বিজেপি কর্মীরা শুভেন্দুর গাড়ির আগে কয়েকশো মোটর বাইকের র‍্যালি করে তাঁকে নিয়ে আসেন। আসার পথে গাডরো এলাকায় তৃণমূলের লোকজন তাঁকে লক্ষ্য করে মাইকে ‘গো ব্যাক’ শ্লোগান দেন। ঝাড়গ্রাম শহরের ঢোকার মুখে টিএমসিপির শহর সভাপতি দেবনাথ দে-র নেতৃত্বে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা কালো পতাকা দেখিয়ে ‘শুভেন্দু অধিকারী গো ব্যাক’ শ্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ অবশ্য তাঁদের আটকে দেয়।

ঝাড়গ্রামে শুভেন্দুকে কালো পতাকা দেখাল টিএমসিপি, জেলার চারটি বিধানসভায় জেতার দাবি ‘মুক্তিসূর্যের’ - West Bengal News 24

এদিন জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “আমি দেখেছি পাঁচজন ছিল। তাঁদের তিনজনকে আমি চিনি। আমি তাঁদের দেখে নমস্কার করেছি। তাঁরা আমাকে দেখে মাথা নিচু করলেন।’’ ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের সভা বাতিল করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে শুভেন্দু বলেন, ‘‘তৃণমূলের কর্মসূচি সম্পর্কে আমি বলতে পারব না। আমি তৃণমূলের কেউ নই। তৃণমূল দল তো নয় কোম্পানি। সেই কোম্পানিতে কখন কী হবে সেটা ওই কোম্পানি ঠিক করবে। আমি কেন বলতে যাব। আমি তৃণমূলের সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করে বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণ করেছি।’’

আরও পড়ুন : এসপি সহ একঝাঁক আইপিএসের রদবদল ডায়মন্ড হারবারে

৭ জানুয়ারি লালগড়ে নেতাই গ্রামে শহিদ স্মরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন কিনা জানতে চাওয়া হলে শুভেন্দু বলেন, ‘‘নেতাই দিবসে আমার কর্তব্য আমি পালন করি। কারণ নেতাই গ্রামে লাশগুলো আমিই কুড়িয়েছিলাম। সেদিন কে ছিল। আমি তো একা এসে লাশ কুড়িয়েছিলাম। নেতাই গ্রামে যে শহিদবেদিতে সবাই ফুল দেন সেটা আমার তৈরি করা। নেতাই নিয়ে আমাকে কারও কাছ থেকে সার্টিফিকেট নিতে হবে না। নেতাই গ্রামের আহত, নিহতদের পরিবার ও গ্রামবাসীর কাছ থেকে উত্তর পেয়ে যাবেন।’’ ছোট আঙারিয়াও কী এবার বিজেপির ব্যানারে হবে?

শুভেন্দুর জবাব: ‘‘সেটা পশ্চিম মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা ঠিক করবে। ওঁরা আমার কাছে ডেট নিয়েছেন। শমিত দাস মহোদয়ের (পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপির সভাপতি) সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি ৪ জানুয়ারি আসব। জনসভা করা হবে। তৎকালীন এনডিএ সরকারের বড় ভূমিকা ছিল। ওই সময়ে অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবাণীরা দেশ চালাচ্ছিলেন। তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে এনডিএ টিম পাঠিয়েছিলেন। ছোট আঙারিয়ায় মানুষকে প্রোটেকশন দিয়েছিলেন। সে কথা গুলো বলার দরকার রয়েছে।’’ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে ঝাড়গ্রামে এসে কেমন রেসপন্স পেলেন? শুভেন্দু বলেন, ‘‘এখানে জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী, সাংসদ কুনার হেমব্রম ও তাঁদের পুরো টিম অনেক দূর এগিয়ে রেখেছেন। বিজেপি তো একজন বা দেড়জনের পার্টি নয়, এটা একটা বড় পরিবার। একটা পুরো টিম। এই জেলায় বিজেপির টিমই যথেষ্ট।

আরও পড়ুন : স্বামী বিবেকানন্দের স্বপ্ন পূরণ করছেন নরেন্দ্র মোদী! বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মমতা ব্যানার্জি : নিত্যানন্দ রাই

চারটি বিধানসভার প্রতিটায় হাফ লাখের বেশি ভোটে বিজেপি জিতবে। আমি জেতানোর জন্য আসিনি। জেতানোর জন্য বিজেপি টিম কাফি। আমি এসেছি মার্জিন বাড়ানোর জন্য।’’ শুভেন্দু অভিযোগ করেন, গত পঞ্চায়েতের ভোটে ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদ তো বিজেপিই জিতেছিল। মাঝরাতে পুলিশ দিয়ে গণনায় গোলমাল করে বিজেপিকে হারানো হয়েছে।জঙ্গলমহলের ভোটে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতো কোনও ফ্যাক্টর হবেন কিনা জানতে চাওয়া হলে শুভেন্দুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কোনও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী লোকের সম্পর্কে আমি মন্তব্য করব না। যাঁদের বাড়ির লোকজনকে খুন-গুম করা হয়েছে, স্বজন হারানো পরিবারগুলি এই সব লোকের সম্পর্কে উত্তর দিতে পারবে।’’

আরও পড়ুন ::

Back to top button