ঝাড়গ্রাম

স্বর্ণযুগের সুর ফেরার স্বপ্ন দেখেন কৌশিক

স্বপ্নীল মজুমদার

স্বর্ণযুগের সুর ফেরার স্বপ্ন দেখেন কৌশিক - West Bengal News 24

ঝাড়গ্রাম: পেশায় শিক্ষক। কিন্তু তাঁর জীবন জুড়ে রয়েছেন মান্না দে। তিনি কৌশিক মুখোপাধ্যায়। মান্না দে-র গান গেয়েই বিখ্যাত তিনি। ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দা কৌশিক মুখোপাধ্যায় অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার গানের জগতে একটি সুপরিচিত নাম।

ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের নলবোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক কৌশিকবাবু মনে করেন, ভাল গান আবার ফিরবে। এখনও মান্না, হেমন্ত, সতীনাথ, মানবেন্দ্র, নির্মলা মিশ্রের গানের শ্রোতা রয়েছে।

নব্বইয়ের দশকে কবি ভবতোষ শতপথীর লেখা ছোটদের ছড়ায় সুর করেছিলেন কৌশিক মুখোপাধ্যায়। ‘লাল-নীল ফুলগুলি পাপড়িতে রং তুলি/ এমন সকাল খুঁজে পাবো না/ আজ আমি ইস্কুলে যাব না।’ এক শিশুশিল্পীর কন্ঠে রীতিমতো জনপ্রিয় হয়েছিল সেই গান। কৌশিক মুখোপাধ্যায় যে সুরকার হিসেবেও সফল সেকথা নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছেই অজানা। বছর ৫৮-র কৌশিকবাবুর পরিচিতি তাঁর সুকন্ঠের জন্য। দূরদর্শনে একসময় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান করেছেন। এছাড়াও অবিভক্ত মেদিনীপুর, কলকাতা, হাওড়া ও দিল্লিতেও বহু অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। তবে তিনি মান্না দের গান গেয়েই বেশি পরিচিত হয়ে ওঠেন।

আরও পড়ুন : কাটমানি চেয়ে প্রধানের ফোন-বার্তা ভাইরাল (অডিও সংযুক্ত)

ঝাড়গ্রাম শহরের নতুনপল্লীর বাসিন্দা কৌশিকবাবুর গানের হাতেখড়ি মা শীলাদেবীর কাছে। তারপর ঝাড়গ্রামেই রত্না বসুর কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের তালিম নেন। পরে হাওড়ার সঙ্গীতগুরু রঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের কাছে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের পাশাপাশি শিখেছেন আধুনিক ও নজরুলগীতি। তবে কিশোরবেলা থেকেই মান্না দে-র গান তাঁকে বেশি টানত। স্কুল কলেজে পড়ার সময়ে মান্না দে-র গান গেয়ে সহপাঠী ও শিক্ষক মহলে পরিচিত হয়ে ওঠেন। এর পরে একের পর এক অনুষ্ঠানে গান করার আমন্ত্রণ আসতে থাকে। ততদিনে বাণিজ্যের স্নাতক কৌশিকবাবু প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়ে গিয়েছেন।

মান্না দে-র গান করলেও তাঁর নিজস্ব শৈলির জন্য শ্রোতাদের কাছে এখনও সমান কদর তাঁর। তবে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত আচার্য, পুরনো দিনের লঘু সঘুসঙ্গীত, সব ধরনের গানই অনুষ্ঠানে পরিবেশন করেন তিনি। হলদিয়া উৎসব, মৌলালি যুব কেন্দ্রে ছাত্র-যুব উৎসব, দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্ক, কালীবাড়িতেও অনুষ্ঠান করেছেন কৌশিকবাবু। কৌশিকবাবুর ছেলে পেশায় হাইস্কুলের শিক্ষক রাতুল ও মেয়ে বিবাহসূত্রে নাগপুরে প্রবাসী রাগেশ্রীও সঙ্গীতশিল্পী। সন্তানদের সঙ্গেও অনুষ্ঠান করেন তিনি। তবে সুরকার হিসেবে তিনি দু’বার কাজ করেছেন। ভবতোষ শতপথীর একটি গানেও সুর করেছিলেন তিনি। ১৯৯১ সালে ঝাড়গ্রামের শিল্পধ্বনি উৎসবের সূচনার সেই গানটিও কৌশিকবাবুর গাওয়া। কৌশিকবাবু অবশ্য কোনওদিন গানের রেকর্ড করেননি। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষকে আনন্দ দিয়েই আমার আনন্দ।” এক সময় গানও শেখাতেন। তাঁর কাছে অনেকেই গান শিখেছেন।

আরও পড়ুন ::

Back to top button