দঃ ২৪ পরগনা

কোদালিয়ায় বসু পরিবারের উত্তরসূরিদের সঙ্গে নেতাজি প্রসঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানাল ‘ঐক্য বাংলা’

কোদালিয়ায় বসু পরিবারের উত্তরসূরিদের সঙ্গে নেতাজি প্রসঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানাল ‘ঐক্য বাংলা’ - West Bengal News 24

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা : নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু মানেই বাঙালির প্রিয় একজন মহানায়ক। চিরকাল বাঙালি সুভাষ – বন্দনায় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে। ‌কোভিড পরবর্তী সময়েও তার ব্যতিক্রম হল না।

খুব স্বাভাবিকভাবেই সুভাষ-স্মরণে পথে নামল বাংলার প্রথম মুক্তপন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন ‘ঐক্য বাংলা’ও।

২৩শে জানুয়ারি সকালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর পৈতৃক বাড়ি কোদালিয়ায় গিয়ে সেখানে গিয়ে বহুমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করলেন ‘ঐক্য বাংলা’র সদস্যরা।

তবে স্থান হিসেবে কোদালিয়া বেছে নেওয়া হল কেন ?
উত্তরে ‘ঐক্য বাংলা’র সাধারণ সম্পাদিকা শ্রীমতী সুলগ্না দাশগুপ্ত জানালেন, ” নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বলতেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে সেই বিখ্যাত এলগিন রোডের বাড়ি, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়। কারো কাছে নেতাজি মানে প্রেসিডেন্সি কলেজ। এছাড়াও উডবার্ণ রোডের বিখ্যাত বাড়িটাও আলোচিত হয়।

কিন্তু জানকীনাথ বসুর জন্মস্থান, সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে থাকা সুভাষগ্রামের কাছেই কোদালিয়ায় অবস্থিত বসু পরিবারের এই বিখ্যাত বাড়িটা স্মৃতির অন্তরালে চলে গিয়েছে। তাই শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করার জন্য আমরা এই স্থানকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ”

আরও পড়ুন : দুঃস্থদের শীত কাটাতে বিরাট-ভক্তদের সেবার ঊষ্ণ পরশ

এই দিন কি কি বহুমুখী কর্মসূচি গ্ৰহণ করল ‘ঐক্য বাংলা’ ?
ঐক্য বাংলা সংগঠনের সভাপতি শ্রী অভিজিৎ গুহ নিয়োগী বললেন, ” নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁর আদর্শ নিয়ে কেউ কথা বলেন না। সেইজন্য আমরা তাঁর পৈতৃক বাড়ি সংলগ্ন মাঠে তাঁর মূর্তিতে মাল্যদানের পাশাপাশি স্থানীয় বাঙালি সহ বসু পরিবারের উত্তরসূরিদের সঙ্গে কথা বলি। এর পাশাপাশি একটা ছোট্ট সভারও আয়োজন করা হয়। ”

এদিনের সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ‘ঐক্য বাংলা’ সংগঠনের সদস্য অরিন্দম চক্রবর্তী বলেন, ” ভাবতেই অবাক লাগে আমরা সুভাষচন্দ্র বসুর জাতির প্রতিনিধি। বাংলার ‌ মাটিতে ৮৬% হওয়া স্বত্তেও আমরা নিজেদের মাটিতে কার্যতঃ দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত হয়েছি।”

এইদিনের সভায় উপস্থিত আর এক জন নতুন সদস্য অরূপ মুখোপাধ্যায় জানান যে এই মুহূর্তে বাঙালির জোটবদ্ধ হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

তবে পথসভা থেকে বেশ ঝাঁঝালো ভাষায় হিন্দি বলয়ের রাজনৈতিক নেতাদের আক্রমণ করেন ঐক্য বাংলার তরুণ সদস্য যাজ্ঞবল্ক্য সিংহ। তিনি বলেন, ” সুভাষচন্দ্র বসু বাঙালি বলেই তাঁর সঙ্গে এত বঞ্চনা করা হয়েছে, তাঁর মেধা ও যোগ্যতাকে সম্পূর্ণ মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তাই তো এখনও তাঁর নামের পাশে যুদ্ধাপরাধীর তকমা লেগে রয়েছে।”

আরও পড়ুন : নরেন্দ্র মোদির মায়ের কাছে এক কৃষকের খোলা চিঠি

ঐক্য বাংলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ঐক্যযোদ্ধা সৌম্য চৌধুরী সুভাষচন্দ্র বসুর ‘ আদ্যোপান্ত বাঙালি’ চরিত্র সম্পর্কে বলেন যে, ” যতই সুভাষচন্দ্র বসু ইউরোপে গিয়ে বিশ্ব রাজনীতি সম্পর্কে জানুন বা যতই তিনি একজন সর্বভারতীয় দলের সভাপতি হন, তিনি দিনের শেষে ছিলেন মনে প্রাণে একজন বাঙালি। তাঁর বাঙালিত্ব ছিল অপরিসীম,এই বিষয়টা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না।”

ঐক্য বাংলা সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রঞ্জন কুমার সাহু জানান, ” তিনি ছিলেন একজন মহানায়ক যিনি হারতে,হারতেও জিতে যান। সেইজন্যই তিনি বাঙালির হৃদয়ে চিরস্মরণীয় আসন লাভ করেছেন।”

ঐক্য বাংলার তরুণ সদস্য দেবায়ন সিংহ নেতাজির পৈতৃক বাড়ি দেখে আপ্লুত। তিনি জানালেন, ” এই মহামানবের বাড়ি, তাঁর ব্যবহার করা খাট ও বালিশ দেখে আমি সত্যি আপ্লুত ও ধন্য। আজকের দিনটা আমার চিরকাল মনে থাকবে।”

অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে কর্মসূচি গ্রহণ ও রূপায়ণের ক্ষেত্রে যেরকম অন্যান্য বাঙালি জাতীয়তাবাদী দলগুলোর সঙ্গে পার্থক্য রেখে চলে ঐক্য বাংলা, সেই তফাত এবারেও বজায় রাখল তারা। এখন এটাই দেখার পরবর্তীকালে ঐক্য বাংলা তাদের কাজের মধ্যে এইরকম অভিনবত্বের ছাপ বজায় রাখতে সক্ষম হয় কি না।

আরও পড়ুন ::

Back to top button