Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
রাজনীতিরাজ্য

বঙ্গে প্রচার বন্ধ করে যে বার্তা দিলেন Rahul Gandhi

West Bengal Election News : বঙ্গে প্রচার বন্ধ করে যে বার্তা দিলেন Rahul Gandhi - West Bengal News 24

আগেই ইঙ্গিত মিলেছিল এআইসিসি-র তরফে। এ বার রাহুল গাঁধী নিজেই জানিয়ে দিলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে বাংলায় সব জনসভার কর্মসূচি বাতিল করছেন তিনি। অন্য সব দলের নেতাদেরও বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া উচিত কি না, তা ভেবে দেখতে অনুরোধ করেছেন রাহুল।

তাঁর এই সিদ্ধান্তকে সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহদের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস ও সিপিএম। কারণ, বাংলা দখলের লক্ষ্যে তাঁদের ঘন ঘন কর্মসূচির কোনওটাই এখনও স্থগিত করেননি মোদী-শাহ। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রশ্ন, মোদী-শাহের সভা কি মানুষের জীবনের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ?

তবে রাহুল রবিবার টুইট করে কোভিড পরিস্থিতির কথা বললেও তাঁর সিদ্ধান্তকে ঘিরে আরও একটি জল্পনাও রাজনৈতিক শিবিরে গুঞ্জন তুলছে। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম নির্বাচন কমিশনের যুক্তি অস্বীকার না করেও বাংলায় ভোটের পর্ব নিয়ে তৃণমূলের দাবির সঙ্গে সুর

মিলিয়েছেন। পরে এ দিন টুইটেও তাঁর প্রশ্ন, প্রচারে এসে মোদী যে ভাবে ‘দিদি, ও দিদি’ বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উত্ত্যক্ত করছেন, তা কি কোনও প্রধানমন্ত্রীর শোভা পায়? চিদম্বরমের মন্তব্য, ”জওহরলাল নেহরু, মোরারজি দেশাই বা বাজপেয়ীও এই সুরে কথা বলতে পারতেন বলে কল্পনা করতে পারছি না!” এ সবের প্রেক্ষিতেই রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের প্রশ্ন, তা হলে বিজেপির মোকাবিলায় মমতার সঙ্গে সরাসরি সংঘাত এড়াতেই কি কোভিডকে ঢাল করে রাহুল বাংলা থেকে আড়ালে চলে গেলেন?

আরও পড়ুন : সংক্রমিত হচ্ছে রেল কর্মীরা, কমছে লোকাল ট্রেনের সংখ্যা

সংযুক্ত মোর্চার নেতারা অবশ্য বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর ওই আক্রমণকে ‘অশোভন ও রুচিহীন’ বলেছেন সিপিএম নেতৃত্বও। তার মানে কি সিপিএমও তৃণমূলের প্রতি ‘নরম’! তা ছাড়া, এক দিন প্রচারে এসে রাহুল তৃণমূলকেও নিশানা করে গিয়েছেন।

রাহুল টুইটে এ দিন বলেছেন, ”কোভিড পরিস্থিতি মাথায় রেখে আমি পশ্চিমবঙ্গে সব জনসভা স্থগিত রাখছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে বড় সভা বা কর্মসূচি করলে তার ফল কী হতে পারে, সব দলের নেতাদেরই তা গভীর ভাবে ভেবে দেখার পরামর্শ দেব।” পঞ্চম দফার ভোটের আগে উত্তরবঙ্গে দু’টি সভা করে গিয়েছিলেন রাহুল। কংগ্রেস সূত্রের খবর, পরবর্তী পর্যায়ে দলের প্রাক্তন সভাপতিকে নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার নোয়াপাড়া, বাদুড়িয়ার মতো কেন্দ্রে, মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলায় সভা এবং কলকাতা শহরে রোড-শো করার পরিকল্পনা ছিল সংযুক্ত মোর্চার। কিন্তু করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করায় এবং মুর্শিদাবাদে মোর্চারই দুই প্রার্থীর মৃত্যুর পরে সে সবই আপাতত বাতিল হচ্ছে।

রাহুল অন্যান্য দলকে বার্তা দিতে চাইলেও বিজেপির নেতৃত্বের ভাবনা-চিন্তায় অবশ্য পরিবর্তনের কোনও ইঙ্গিত এখনও পর্যন্ত নেই। তাঁরা বাংলায় ‘পরিবর্তনের’ কথাই বলে চলেছেন। তৃণমূল নেতৃত্বও জানিয়েছেন, কমিশনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রচার কর্মসূচি চলবে।

কংগ্রেসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে দুই জেলা মালদহ ও মুর্শিদাবাদে রাহুলের কর্মসূচি স্থগিত হয়ে গেল, সেখানেই এই সপ্তাহে সভা করার কথা প্রধানমন্ত্রী মোদীর। রাজ্যে এ দিনও শাহের কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী ‘হুঙ্কার’ দিয়েছেন, ”এ বার তৃণমূলের বিদায় নিশ্চিত। বাংলায় এসেছেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জনসভা থেকে উঠবে আসল পরিবর্তনের হুঙ্কার!”

বিজেপি নেতাদের এই মনোভাবকেই তুলোধোনা করেছেন ইয়েচুরি। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্য, ”আমরা আগেই জানিয়ে দিয়েছি বাংলায় বড় কর্মসূচি আর করব না। কংগ্রেসও সে রকমই জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু শাহের মতো বিজেপি নেতা, যিনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বটে, কোভিড সম্পর্কে হাস্যকর, অবৈজ্ঞানিক ও অর্থহীন কথা বলে চলেছেন! তাঁর ও মোদীর সভা কি মানুষের জীবনের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ?” প্রসঙ্গত, একটি সাক্ষাত্‍কারে শীঘ্রই লকডাউনের পরিস্থিতি নেই বলে জানিয়ে শাহ দাবি করেছেন, অবিলম্বেই করোনার বিরুদ্ধেও তাঁরা বিজয় ঘোষণা করবেন!

বাম ও কংগ্রেসের সিদ্ধান্তকে ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেই প্রসঙ্গ তুলে বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ”ভোট আসবে-যাবে কিন্তু মানুষের জীবনের দাম অনেক বেশি। সেই কারণেই বামপন্থীরা বড় কর্মসূচি বন্ধ করার কথা বলেছেন, একই সিদ্ধান্ত রাহুলজিও নিয়েছেন। তার জন্য বিজেপি ও তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা আমাদের কটাক্ষ, বিদ্রুপ করেছেন। হতে পারে, ওঁরা মানুষের জীবনকে অন্য ভাবে দেখেন। সেই রাজনীতির বিচার মানুষই করবেন।”

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা

আরও পড়ুন ::

Back to top button