জাতীয়

কীভাবে বুঝবেন আপনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত কিনা? গাইডলাইন প্রকাশ AIIMS-এর

কীভাবে বুঝবেন আপনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত কিনা? গাইডলাইন প্রকাশ AIIMS-এর - West Bengal News 24

করোনার (Corona Virus) দোসর ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (Black Fungus) । করোনাকালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ (Infection) উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের (Central Govt) । ইতিমধ্যেই দেশের একাধিক রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে, কয়েকজনের মৃত্যুও হয়েছে। কীভাবে বুঝবেন আপনি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত কিনা? AIIMS এবিষয়ে একটি গাইডলাইন প্রকাশ করেছে।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরমাইকোসিসের সংক্রমণ বুঝতে AIIMS-এর তরফে নয়া একটি গাইডলাইন (Guideline) প্রকাশ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই একাধিক রাজ্যে করোনা আক্রান্ত বেশ কয়েকজন রোগী পরবর্তী সময়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হয়েছেন। AIIMS-এর তরফে সতর্ক করে জানানো হয়েছে ডায়াবেটিক (Diabetic) রোগীদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। এরই পাশাপাশি স্টেরয়েড (Steroid) জাতীয় ওষুধ যাঁরা নেন, তাঁরাও এই মারণ ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন।

মহারাষ্ট্রে করোনাকালে আতঙ্ক কয়েক গুণে বাড়িয়ে দিয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। ইতিমধ্যেই সেরাজ্যে ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হয়ে। রাজস্থানে (Rajasthan) ইতিমধ্যেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হয়েছেন একশোর বেশি মানুষ। বুধবার ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে রাজস্থান সরকার। জয়পুরের (Jaipur) সোয়াই মান সিং হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিতদের চিকিত্‍সায় আলাদা ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে।

কাদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি?

AIIMS-এর প্রকাশিত গাইডলাইন অনুযায়ী, ডায়েবেটিক রোগী যাঁদের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকে না তাঁদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এছাড়াও স্টেরয়েডে ডায়াবেটিস বা টসিলিজুমাবে আক্রান্ত রোগীদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি রয়েছে।

ইমিউনোসপ্রেসেন্ট বা ক্যান্সার (Cancer) রোগের চিকিত্সা যাঁদের চলছে বা দীর্ঘকাল ধরে যাঁদের কোনও শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে, এমন রোগীদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

যে রোগীরা হাই ডোজের স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দীর্ঘকাল ধরে খেয়ে চলেছেন তাঁদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকেরই শারীরিক পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে পড়ছে। তাঁদের নাসাল প্রংস বা মাস্ক, ভেন্টিলেটরের মাধ্যমে অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। এমন রোগীদেরও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকছে।

এক্ষেত্রে AIIMS-এর তরফে প্রকাশ করা ওই গাইডলাইনে বলা হয়েছে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি যাঁদের বেশি, তাঁদের নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করতে হবে চিকিত্‍সকদের। যে রোগীরা করোনামুক্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন তাঁদের দিকেও নজর রাখতে হবে। বিশেষত চক্ষু বিশেষজ্ঞদের এক্ষেত্রে আলাদা করে সজাগ দৃষ্টি রাখার পরামর্শ দিয়েছে AIIMS।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বুঝবেন কী করে?

সদ্য করোনামুক্ত রোগীরা বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন। এই লক্ষ্মণগুলি দেখলেই চিকিত্‍সকের পরামর্শ নিন।

নাক থেকে অস্বাভাবিক কালো রঙের তরল বা রক্ত ঝরতে পারে। এটি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হওয়ার অন্যতম একটি লক্ষ্মণ।

নাক আটকে যাওয়া বা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা তৈরি হওয়া। মাথা ব্যথা বা চোখের ব্যথা, চোখের চারদিকে ফোলাভাব, একই জিনিসের দ্বিতীয় প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠা , চোখে লালচে ভাব, দৃষ্টিশক্তি হারানো, চোখ বন্ধ করতে অসুবিধা হওয়া, চোখ খোলার ক্ষেত্রে সমস্যা হওয়া, এসবই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হওয়ার লক্ষ্মণ।

মুখের অসাড়তা এলেও সাবধান হতে হবে।

মুখ খুলতে সমস্যা হওয়া বা চিবিয়ে খেতে গেলে অসুবিধা হওয়াও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হওয়ার লক্ষ্মণ।

নাক, গাল, চোখের চারপাশে বা কালো হয়ে যাওয়া বা ফ্যাকাসে হয়ে গেলে বা ব্যাথা হলে সতর্ক হোন।

দাঁতের পাটি আলগা অনুভ করলেও সতর্ক হতে হবে। মুখের মধ্যে কালো ছোপ তৈরি হতে পারে। মুখ, হাতের তালু, দাঁত বা নাকের ভিতরেও ফোলা ভাব তৈরি হতে পারে। এসবই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হওয়ার লক্ষ্মণ।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার উপায় কী?

AIIMS-এর তরফে প্রকাশিত গাইডলাইনে বলা হয়েছে,

উপরোক্ত কোনও লক্ষ্মণ দেখা দিলেই ইএনটি ডাক্তার, চক্ষু বিশেষজ্ঞ বা অন্য যে কোনও বিশেষজ্ঞ চিকিত্‍কের পরামর্শ নিতে হবে।

লক্ষ্মণ দেখা দিলেই চিকিত্‍সকদের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে।

নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে। শারীরিক পরিস্থিতির দিকে খেয়াল রাখতে হবে। অন্য কোনও উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কিনা সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখা একান্তভাবে জরুরি।

চিকিত্‍সকের পরামর্শ না নিয়ে নিজে থেকে স্টেরয়েড বা অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাঙ্গাল জাতীয় কোনও ওষুধ খাওয়া চলবে না।

সূত্র :কলকাতা ২৪*৭

আরও পড়ুন ::

Back to top button