টলিউডরাজ্য

বিশ্বাসের মর্যাদা রাখবেন সায়নী

বিশ্বাসের মর্যাদা রাখবেন সায়নী - West Bengal News 24

টালিউডের অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে শনিবার (৫ জুন) দলের যুব সংগঠনের সভাপতি পদে দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

যা দেখে টলিউডের একাংশ বলছেন, সায়নীর মতো কপাল ক’জনের হয়? তবে সায়নী কি শুধু কপাল জোরেই এতো দূর এলেন? তা ঠিক নয়। তার ব্যক্তিগত ক্যারিশমাও কম নয়। তিনি যেখানে গেছেন একটা ছাপ ফেলেছেন। খুব যে সিনেমা করেছে তাও নয়। তবুও তার অভিনয় বাঙালি দর্শকদের মন কেড়েছে।

তার অভিনীত ‘ভবিষ্যতের ভূত’ সিনেমাটি শাসকদলের অঙ্গুলি হিলনেই মুক্তি পায়নি বলে দাবি করা হয়। সিনেমাটিতে ফুটে উঠেছিল মমতার সরকারের কালো দিক। সেখানেও সিনেমামুক্তির দাবিতে সায়নী পথে নেমেছিলেন সরকারের বিরুদ্ধে। যে কারণে একসময় শাসকদলের চোখের কাঁটাও হয়েছেন তিনি।

আবার যে কোনোদিন সেভাবে রাজনীতিই করেননি সেই সায়নীকে প্রার্থী করেছিলো তৃণমূল।

পাক্কা রাজনীতিবিদের মতো পোড়খাওয়া অগ্নিমিত্রা পালের বিরুদ্ধে ফাইট করেন সায়নী। তার স্টাইল আসানসোলবাসীর এতটাই মনে ধরেছিলো যে, ফল ঘোষণার পর আসানসোল যুবদের পক্ষ থেকে তৃণমূল দলে অনুরোধ আসে সায়নীকে সরকারি কোনো দায়িত্ব দেওয়া হোক। ফলে যে পদে এতোদিন ছিলেন মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মুখ, সেই পদে সায়নীর মতো রাজনীতিতে নতুন পা রাখা মুখেই ভরসা রাখলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

দায়িত্ব দেওয়ার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পশ্চিমবঙ্গের যুব ইউনিটের দায়িত্ব তোমার হাতে দিলাম। সায়নী তোমাকে অনেক বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সামনের সারির সৈনিক হিসেবে কাজ করতে হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, লড়াকু নেত্রী মমতার এটাই মাস্টারস্ট্রোক। তারা বলছেন, প্রথমত ২০২৪-এর সংসদ ভোটের আগে মমতার পাখির চোখ দিল্লি দখল। সে কারণে অভিষেকের দায়িত্ব বাড়ানো। অপরদিকে, ভোট প্রচারে সায়নীর স্টাইল, মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার প্রবণতা মুগ্ধ করেছে। এছাড়া ভোটে পরাজিত হয়েও সায়নীকে আসানসোলের কোনো সরকারি দায়িত্বে আনার জন্য পথে পর্যন্ত নেমেছিলো দলের বহু মুখ। তাই সায়নীর মতো দাপুটে মেয়েকে দিয়ে দলের যুব সংগঠনের কাজ সফলভাবে চালানো সম্ভব বলেই মনে করেছেন তৃণমূল নেত্রী।

তৃণমূল সূত্রের খবর, এতোদিন দলের যুব সংগঠনের দায়িত্বে অভিষেক থাকলেও নিচু স্তরের অনেক যুব নেতা-কর্মীই অভিষেকের কাছে পৌঁছে নিজেদের বক্তব্য রাখতে কিছুটা সংকোচবোধ করতেন। আর সেখানে সায়নীকে এনে সেই বাঁধ ভেঙে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সেসঙ্গে দলের যুব সংগঠনের সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে একজন মহিলাকে এনেও বিশেষ বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী। যাতে সায়নীর মতো অল্পবয়সী নেতৃত্বকে দেখে নতুন প্রজন্মও আরও বেশি করে দলে আসে। তৃণমূলের আশা সায়নীকে দেখে বহু যুবক-যুবতী রাজনীতিতে আসতে চাইবেন। সে কারণে দলের ভবিষ্যতের কথা বলতে গিয়ে বারবার তৃণমূল নেত্রীর মুখে উঠে এসেছে নবীন প্রজন্মের কথা।

তবে দায়িত্ব নিয়েই সায়নী কাজ শুরু করে দিতে চান শিগগিরই। সায়নীর কথায়, শুধুমাত্র অভিনেত্রী হয়ে বিজেপির মতো ধ্বংসাত্মক শক্তির সঙ্গে এঁটে ওঠা যাবে না। রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজন। একসময় সিনেমার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করেছি। তাও উনি আমার প্রতি আস্থা রেখেছেন।

তিনি বলেন, তারকারা শুধু গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াবে। শুধু ফেসবুকে রাজনীতি করবেন, এই মিথ ভাঙতে হবে। দল, সিনিয়র নেতৃত্ব, সুপ্রিমো মনে করেছেন আমাকে দায়িত্ব দেওয়া যায়। আমি তাদের বিশ্বাসের মর্যাদা রাখবো। খুব শিগগিরই দলের সঙ্গে কথা বলে কাজ শুরু করে দেবো।

আরও পড়ুন ::

Back to top button