রাজ্য

অনুব্রতর নেতৃত্ব মেনে বৈঠকে হাজির শতাব্দী

অনুব্রতর নেতৃত্ব মেনে বৈঠকে হাজির শতাব্দী - West Bengal News 24

পাক্কা ৩ বছরে পরে পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলল বীরভূমের জোড়াফুল শিবিরে। সেই পরিবর্তন নিছক কোনও ব্যক্তি বিশেষের পদের পরিবর্তন। এই পরিবর্তন মানসিক দূরত্ব কমার। আর সেটাও জেলায় শাসক দলের সভাপতির সঙ্গে জেলারই শাসক দলের সাংসদের। রবিবার দুপুরে জেলা কমিটির বৈঠকে তাই হাজিরা দিতে দেখা গেল বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী শতাব্দী রায়কে।

বিগত ৩ বছর ধরে তাঁর সঙ্গে দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কার্যত ঠাণ্ডা যুদ্ধ চলছিল। তিন তিন বার বীরভূমের সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পরেও শতাব্দীর সঙ্গে অনুব্রত মণ্ডলের সুসম্পর্ক স্থাপিত না হওয়ার বিষয়টি দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও চিন্তায় রেখেছিল। সব থেকে বড় ধাক্কা আসতে চলেছিল গত বছরের শেষ দিকে যখন শতাব্দী তৃণমূল ছাড়ার সিদ্ধান্ত প্রায় নিয়েই ফেলেছিলেন। কার্যত দলের শীর্ষ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তখন শতাব্দী দলে থেকে যান। এখন প্রশ্ন হচ্ছে শতাব্দী অনুব্রতকে নিয়ে নমনীয় হয়েছেন নাকি অনুব্রত শতাব্দীকে নিয়ে নমনীয় হয়েছেন?

রবিবার দুপুরে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস ভবনে জেলা কমিটির বৈঠকে এসে উপস্থিত হন শতাব্দী রায়। ঠিক তার কিছুক্ষণ পরেই আসেন অনুব্রত মণ্ডল। এদিন প্রায় তিন বছর পর বৈঠকে মুখোমুখি হলেন শতাব্দী আর অনুব্রত। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে একবার মাত্র জেলা কমিটির বৈঠকে দেখা গিয়েছিল শতাব্দীকে।

তিনবছর পর আবার তিনি এদিন থাকলেন বৈঠকে। এদিনের বৈঠকটি আসলে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের জন্য ডাকা হয়েছিল। সেই পরিকল্পনা মাথায় রেখেই এই বৈঠকে কেবল সাংসদ বিধায়করা নন, উপস্থিত থাকছেন ব্লক সভাপতি থেকে শুরু করে বুথ স্তরের নেতৃত্বও। নির্বাচনের পর থেকেই দলের আভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীকোন্দলে রাশ টানতে একাধিক কড়া পদক্ষেপ করেছে ঘাসফুল। ফলে, শতাব্দীর সঙ্গে অনুব্রত’র দ্বন্দ্ব মিটুক বা না মিটুক দলের স্বার্থেই কার্যত বৈঠকে উপস্থিত থেকেছেন শতাব্দী ও অনুব্রত।

তবে জেলা তৃণমূল সূত্রে ভিন্ন সুরও শোনা গিয়েছে। জেলায় এবারে ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১০টিতেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। মাত্র ১টিতে জয়ী হয়েছে বিজেপি। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে অনুব্রত মণ্ডলের নিজের বাড়ি যে শহরে সেই বোলপুর তো বটেই জেলায় থাকা আর বাকি ৫টি শহরেও বিজেপির কাছে কার্যত হেরে ভূত হয়েছে তৃণমূল।

মানে একুশের ভোটযুদ্ধ বলে দিচ্ছে বীরভূমের গ্রামীণ জনতা তৃণমূলের পাশে থাকলেও শহুরে জনতা ভোট দিয়েছে বিজেপিকে। আর শতাব্দীর রাজনৈতিক অনুগামীর সংখ্যা শহরেই বেশি। বীরভূমের শহরের লোকেরা অনুব্রতকে খুব একটা পছন্দ করেন না। সেই শহরের ভোটেই এবার মুখ থুবড়ে পড়েছে তৃণমূল। এদিকে সামনেই পুরনির্বাচন।

বীরভূমের ৩টি শহরে এবার ভোট হতে চলেছে। এই ৩ শহর হল সিউড়ি, বোলপুর ও রামপুরহাট। ৩ শহরেই বিজেপি অনেকটা এগিয়ে থেকেই লড়াই শুরু করবে। বিধানসভা ভোটের ফল বলে দিচ্ছে শহরে অনুব্রত ম্যাজিক কার্যত কাজ করছে না। এবার তাই দলকেও ভাবতে হচ্ছে শহরে সাফল্য পেতে শতাব্দীর গ্রহণযোগ্যতাকে কীভাবে ব্যবহার করা যায়। আবার শতাব্দীকেও ২০২৪ সালের লোকসভা যুদ্ধের কথা মাথায় রাখতে হচ্ছে। তাই তিনিও খুব একটা বেসুরো হতে চাইছেন না। কার্যত তাই অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্ব মেনে নিয়েই এদিন তিনি হাজিরা দিলেন জেলা কমিটির বৈঠকে।

সূত্র : এই মুহুর্তে

আরও পড়ুন ::

Back to top button