জীবন যাত্রা

যে কারণে স্ত্রীদের সাথে প্রতারণা করেন স্বামীরা!

যে কারণে স্ত্রীদের সাথে প্রতারণা করেন স্বামীরা!

স্বামীরা স্ত্রীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে কেন? অনেকেই বলবেন যৌনতার জন্য! তা কিন্তু নয়‚ আপনি বিশ্বাস করুন বা না করুন সব সময় সেক্স প্রধান কারণ হয় না। সম্প্রতি একটা সার্ভে করা হয় বিশ্বাসঘাতক স্বামীদের নিয়ে। সেখানে অর্ধেকের ওপর স্বামীরা জানিয়েছেন তারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন কারণ স্ত্রীরা তাদের উপেক্ষা করেছে সেই কারণে।

ওদের মধ্যে মাত্র ৭ শতাংশ স্বামীরা জানিয়েছেন তারা শুধুমাত্র অন্য মহিলাদের সঙ্গে যৌন সম্ভোগ করার কারণে বিশ্বাসঘাতকতা করেছ। কিন্তু আপনার পার্টনার যাতে পথভ্রষ্ট না হয় তার জন্য আপনি কী করবেন? এর উত্তর দিতে আজকে তাই আমরা একটা তালিকা বানিয়েছি যার থেকে ধারণা করতে পারবেন পুরুষরা বিশ্বাসঘাতক হয় কেন এবং তা রোধ করবেন কী করে।

১) পুরুষরা নিজেদের আর সেক্সি ভাবে না: বহু পুরুষ এমন আছেন যারা মনে করেন স্ত্রীরা ওদের আর তেমন আকর্ষণীয় মনে করে না। এই ধারণা অবশ্য এমনি এমনি হয় না পুরুষদের। মহিলারা কিছু না ভেবেই তাদের স্বামীদের বা পার্টনারকে সিনেমার বা টিভির কোন আন অ্যাট্রাক্টিভ চরিত্রের সঙ্গে তুলনা করেন। স্ত্রীদেরও একবার ভাবা দরকার তাদের স্বামীরা যদি তাদের সঙ্গে এমনটা করতো তাহলে তাদের কেমন লাগতো? তাই সব সময় আপনার স্বামী কে স্পেশাল ফিল করানোর চেষ্টা করুন এবং কোনদিন তাদের আন অ্যাক্ট্রাটিভ বস্তুর সঙ্গে তুলনা করবেন না।

২) পুরুষরা মনে করে তারা সহজেই এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে পারবে: কিছু পুরুষ এমন আছেন যারা মনে করেন বিশ্বাসঘাতকতা করলে ফল খুব একটা মারাত্মক হবে না। এই যেমন ধরুন স্বামী বিবাহ বার্ষিকী ভুলে গেল এবং নিজের কাজ নিয়ে কাটালো‚ আর স্ত্রীরা এতে কিছুই মনে করলো না বা স্ত্রীর জন্মদিনের দিনটা তাকে সময় না দিয়ে টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখে কাটানোর পরেও স্ত্রী খুব একটা ঝামেলা করলো না। এর ফলে পুরুষরা বিশ্বাস করতে শুরু করে স্ত্রীরা তাদের এক্সট্রা ম্যারিটাল অ্যাফেয়ারের কথা জানতে পারলে দুঃখ পাবে কিন্তু মানসিক ভাবে খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। স্ত্রীরা স্বামীকে ক্ষমা করে দিন কিন্তু বাউন্ডারি বানিয়ে দিন যাতে সে জানতে পারে তার লিমিট কতটা।

৩) পুরুষদের ইগো হার্ট হয় বলে: অনেক সময় কঠিন অভিজ্ঞতা থেকে পুরুষরা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে। ফলে তখন ইগো বুস্ট করতে অন্য কোন মহিলার হাত ধরেন। যেমন ধরুন একজন হাজব্যান্ড এবং ওয়াইফ দুজনেই চাকরিজীবী। কোন কারণে স্বামী তার চাকরি হারায়। স্ত্রী কে ভালোবাসা সত্ত্বেও দিনের পর দিন যখন স্বামী দেখে স্ত্রী চাকরি করতে যাচ্ছে আর সে ঘরে বসে আছে তখন কিন্তু তার নিজের ওপর থেকে আত্মবিশ্বাস চলে যায়। তখন হয় সে মদ্যপ হয়ে ওঠে না হলে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে।

৪) স্ত্রীর ফিলিংসের কোনো গুরুত্বই থাকে না : অনেক সময় পুরুষরা এতটাই সেল্ফ সেন্টারড হয় যে কে কী ভাবলো তার তোয়াক্কাই করে না। যেমন রিয়ানের কথাই ধরুন‚ সে জানিয়েছে ‘ আমি স্ত্রীকে খুব ভালোবাসি তাও অন্য সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। কারণ আমার একবারও মনে হয় নি এই সম্পর্কের কথা স্ত্রী জানতে পারলে সে কী মনে করবে। আমি খালি নিজের কথাই ভেবেছি। ‘ স্ত্রীদের তাই হাবিদের বুঝিয়ে দিতে হবে তারা যেন স্ত্রীর ফিলিংসকে সমান গুরুত্ব দেয়।

৫) স্বামী মনে করেন স্ত্রীদের কাছে তারা তাদের গুরুত্ব হারিয়েছে: হেকটিক শেডিউল‚ বা বিয়ের কয়েক বছর পর স্ত্রীরা অনেক সময় স্বীকার করতে ভুলে যান স্বামীরা তাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা হতে দেবেন না। নতুন সম্পর্ক যখন তৈরি হয় আমরা দিন রাত একে অপরের ফিলিংসের কথা ভাবি, কিন্তু সময়ের সঙ্গে তা কমে যায়। এমন একটা সময় আসে যখন স্ত্রীরা স্বামীদের টেকেন ফর গ্রান্টেড নিয়ে নেন। স্ত্রীর কাছে তখন স্বামী ছাড়া আর সব কিছুই গুরুত্বপূর্ন হয়ে যায়। ফলে সেক্সের থেকেও অন্য কারুর কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার তাগিদে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে তৈরি করে স্বামী।

৬) সে স্ত্রীর ওপর রাগ করেছে কিন্তু তা প্রকাশ করে না: অনেকেই আছেন কোন কারণে হয়তো স্ত্রীর ওপরে রেগে গেছেন কিন্তু তা প্রকাশ না করে মনে মধ্যে চেপে রেখে দেন। সাইকোলজিস্টরা মনে করেন এই ধরণের পুরুষর বেশি বিশ্বাসঘাতক হন। আপনার স্ত্রী পর পর দুবার আপনার অফিসের পার্টিতে গেল না কোনো কারণ ছাড়াই। আপনি এতে তার ওপর রেগে গেলেন, কিন্তু সেটা প্রকাশ না করে পার্টিতে মদ খেয়ে অন্য কোন সহকর্মীর সঙ্গে শুয়ে পড়লেন। স্বামে স্ত্রী দুজনেই কেউ কারুর মাইন্ড রিড করতে পারে না। তাই দুজনকেই একে অপরের সঙ্গে সঠিক যোগাযোগ রাখতে হবে। তাই স্ত্রীরা‚ মেক সিওর আপনাদের হাজব্যান্ড যখন কোন বিষয় নিয়ে আপসেট থাকবে তার সঙ্গে কথা বলুন।

৭) পুরুষরা মনে করে স্ত্রীরা তাদের আন্ডার অ্যাপ্রিসিয়েট করছে: স্বামী স্ত্রীর মধ্যে সেক্স লাইফ হয়তো খুব ভালো। কিন্তু তাকে আরো মজবুত বানাতে স্ত্রীদের উচিত তার স্বামীদের তারিফ করা। স্ত্রীরা তাই রোজ দিনে অন্তত একবার স্বামীর প্রশংসা করুন। তা সে যত ছোট কারণের জন্যেই হোক না কেন।

৮) স্ত্রীরা স্বামীদের বার বার চিটার বলে অভিযুক্ত করে: অনেক সময় স্ত্রীরা অকারণ তাদের স্বামীর ওপর সন্দেহ করে। এই পরিস্থিতে স্বামীরা ভবতে পারে স্ত্রী তো আমাকে এমনি এমনিই এতদিন সন্দেহ করছে। তাহলে আমি অন্য কারুর সঙ্গে অ্যাফেয়ার করলেও পরিস্থিতি এক থাকবে। স্ত্রীদের যদি কোন কারণে স্বামীর ওপর সন্দেহ হয় তাহলে নিজেকে বার বার প্রশ্ন করুন কেন আপনার এমনটা মনে হচ্ছে। দরকার হলে স্বামীর সঙ্গে এই ব্যাপারে খোলাখুলি আলোচনা করুন।

৯) স্ত্রীকে নিয়ে সে কতটা অখুশি তাই জানাতে চায় সে: একটা ঘটনার কথা বললেই বুঝতে পারবেন কী বলতে চাইছি। রাহুল আর ওর স্ত্রীর মধ্যে ইদানিং সম্পর্ক খারাপ হয়েছে। রাহুল ম্যারেজ কাউন্সিলিং করে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে চেয়েছে। কিন্তু ওর স্ত্রী রাজি হয়নি। ফলে রাহুল বাধ্য হয়ে অন্য এক মহিলার সঙ্গে একটা রাত কাটান। যাতে স্ত্রী বুঝতে পারে সে কতটা অখুশি। পরে দুজনেই থেরাপি নেন। এবং দুজনের সম্পর্ক আগের থেকেও দৃঢ় হয়। পার্টনারের কথা মন দিয়ে শুনলে বা তার প্রতি মনোযোগী হলে সময়‚ অর্থ এবং সম্পর্কও বাঁচানো যায়। বিয়েকে সফল করে তুলতে দুজনের পার্টনারশিপের দরকার। মানে স্বামী এবং স্ত্রী দুজনকেই বিয়ে বাঁচিয়ে রাখার জন্য পরিশ্রম করতে হবে ।

আরও পড়ুন ::

Back to top button