রাজনীতিরাজ্য

বাবুলের পর লকেট? বেসুরোর সংখ্যা বেড়েই চলেছে বিজেপিতে, এবার লকেটকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব

Locket Chatterjee : বাবুলের পর লকেট? বেসুরোর সংখ্যা বেড়েই চলেছে বিজেপিতে, এবার লকেটকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব - West Bengal News 24

বিজেপিতে বেসুরোর সংখ্যা বেড়েই চলেছে ক্রমশ। অনেকে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করছেন, অনেকে দলের অন্দরে বেসুরো বাজছেন। মোট কথা নেতৃত্ব বদলেও স্বস্তিতে নেই বিজেপি। রাজ্য সভাপতি হিসেবে সুকান্ত মজুমদারের নিয়োগের উত্তরবঙ্গের বিদ্রোহী বিধায়ক ফের সরব হয়েছিলেন মঙ্গলবার, এবার প্রকাশ্যে এল সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বিরাগভাজনের কাহিনি।


সূত্রের খবর, হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ও নাকি বেসুরো বাজতে শুরু করেছেন কিছুদিন ধরে। কিন্তু বিজেপি তাঁকে হারাতে চায় না। তাই লকেটকে দলে রাখতে বদ্ধপরিকর বিজেপি। সম্প্রতি প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাই লকেট যাতে বিজেপি না ছাড়েন, তার জন্য আগেভাগে ব্যবস্থা নিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগত্‍প্রকাশ নাড্ডা।


মঙ্গলবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা দিল্লিতে তাঁর বাসভবনে লকেটের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। এই বৈঠককে ঘিরেই জল্পনা তৈরি হয়েছে। লকেটের মানভঞ্জনেই কি এই দীর্ঘ বৈঠক? বিজেপি নেতৃত্ব বা লকেট চট্টোপাধ্যায় দাবহি করেছেন, এই বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল। আমাকে উত্তরাখণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনের সহ-পর্যবেক্ষক করা হয়েছে, সেখানে দুদিনের সফর করে এদিনই দিল্লি ফিরেছিলাম। সেইসব নিয়েই সভপাতির সঙ্গে বৈঠক ছিল।


লকেট বলেন, নাড্ডাজি আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন মূলত উত্তরাখণ্ড নিয়ে আলোচনার জন্য। জাতীয় রাজনীতিতে আমাকে বড় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করছি আমি। আমাদের সভাপতি আমাকে সেই পরামর্শই দিয়েছেন। সভাপতির পরামর্শ অনুযায়ী জাতীয় রাজনীতিতে কাজ করতে আগ্রহী আমি।


লকেট তাঁর দবলবদল নিয়ে জল্পনা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, এসব নিয়ে কোনও আলোচনার প্রশ্নই নেই। নাড্ডাজি জানতেনই না এইসব খবর আমাকে নিয়ে রটেছে। আমিই তাঁকে বললাম। তিনি শুনে বেশ অবাকই হয়েছেন। লকেট বলেন, নাড্ডাজির সঙ্গে কথা বলার পর বুধবার যোশীজির সঙ্গে আলোচনা করব উত্তরাখণ্ড নিয়ে। সে ব্যাপারেও এদিন সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে।

আরও পড়ুন : ভারী বৃষ্টি হলেই ডুলুং নদীর কজওয়ে ডুবে বিচ্ছিন্ন জামবনি ব্লকের দু’প্রান্ত, সেতু না হওয়ায় ক্ষোভ

রাজনৈতিক মহল অবশ্য এ কথা মানতে নারাজ। রাজনৈতিক মহলের একাংশের যুক্তি, উত্তরাখণ্ডের পর্যবেক্ষক কেন্দ্রীয়মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী। আর লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ-পর্যবেক্ষক। পর্যবেক্ষককে ছাড়া সহকারী পর্যবক্ষেককে নিয়ে একটি রাজ্যের বিষয়ে বৈঠক হবে, তা সচরাচর বিজেপিতে দেখা যায় না। লকেটের সঙ্গে এদিন বাংলার রাজনীতি নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ। তা লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কথাতেই উঠে এসেছে বলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাঁরা।


লকেট বলেছেন, উত্তরাখণ্ডের পাশাপাশি বাংলা নিয়েও কথা হয়েছে সভাপতির সঙ্গে। নতুন রাজ্য সভাপতির কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। একথা জানিয়েছেন সভাপতিকে। সভাপতি গুরুত্ব দিয়ে আমার কথা শুনেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন। রাজ্যে যাতে দলের মধ্যে ফাটল না তৈরি হয়, সে ব্যাপারে নজর রাখছে নেতৃত্ব।


বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর থেকেই লকে্ট চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে জল্পনা বাড়তে থাকে। গুঞ্জন শুরু হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের গোপন বৈঠক হয়েছে বলে। লকেট টুইট করে তা উড়িয়ে দিয়েছিলেন আগেই। এদিনও তিনি সেই কথা বলেছেন।

জোর গলায় বলেন, বিজেপি ছাড়ার কোনও পরিকল্পনা নেই, কেন তিনি বিজেপি ছাড়বেন? পাল্টা প্রশ্ন করেন লকেট। তারপর বলেন, এতবড় সুযোগ অন্য কোনও দলে কি পাব। আমাকে উত্তরাখণ্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাহলে কেন শুধু রাজ্য রাজনীতিতে সীমাবদ্ধ রাখব নিজেকে।


বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপিতে ভাঙন রেখা দেখা দিয়েছে। উপরতলা থেকে নিচুতলা- সর্বত্রই বিজেপি নেতা-কর্মীরা দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। মকুল রায়-শুভ্রাংশু রায়কে দিয়ে শুরু হয় বিজেপির ভাঙন। তারপর মুকুল-অনুগামীরা ধীরে ধীরে তৃণমূলে ভিড়তে শুরু করেন।

ইতিমধ্যে চারজন বিধায়ক বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আরও অনেকে বেসুরো বাজতে শুরু করেছেন। তাঁদের মধ্যে সবার উপরে নাম রয়েছে রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর। এবার লকেটকে নিয়েও জল্পনার বাতাবরণ তৈরি হল রাজ্য বিজেপিতে। বঙ্গ বিজেপিতে ফাটল বেড়েই চলেছে, নেতৃত্ব বদলেও তা থামার লক্ষণ নেই।

সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া

আরও পড়ুন ::

Back to top button