রাজ্য

কী ভাবে হল চাকরি? জানে না কমিশনও! অবিলম্বে ২৫ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ আদালতের

Group D Recruitment : কী ভাবে হল চাকরি? জানে না কমিশনও! অবিলম্বে ২৫ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ আদালতের - West Bengal News 24

প্যানেলের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার পরও কী ভাবে নিয়োগ হল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে গ্রুপ- ডি পদে নিয়োগ নিয়ে হওয়া সেই মামলায় আজ ২৫ জন কর্মীর বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ডিআই-কে এই নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলেছেন বিচারপতি।

আজ সেই মামলার শুনানিতে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়, কী ভাবে ওই ২৫ জনের নিয়োগ হল, তার ব্যাখ্যা নেই তাদের কাছে। এমনকি নিয়োগ নিয়ে তদন্তের দাবিও জানায় কমিশন। এরপরই ২৫ জনের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত ২ বছর ধরে চাকরি করে আসছেন ওই কর্মীরা।

গতকাল এই মামলায় নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। আজ সকালেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের সচিবকে তলব করা হয়েছিল আদালতের তরফে। সেই মতো উপস্থিত হন সচিব। সিবিআই, সিআইএসএফ দিয়ে কমিশনের অফিস ঘিরে ফেলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি। এ দিন দুপুর ৩ টে পর্যন্ত কমিশনকে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন : আবারও ধাক্কা হাওড়া-বিজেপিতে ! দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বহিষ্কৃত সুরজিৎ সাহার ঘনিষ্ঠ বিমল প্রসাদ

৩ টের পর আদালতে কমিশনের তরফ থেকে আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, কমিশন এই ২৫ জনের নিয়োগের বিষয়ে কিছু জানে না। এমনকি কমিশনের নামের সঙ্গে এই ধরনের অভিযোগ জুড়ে যাক, সেটা কমিশনও চায় না বলে জানান তিনি। কমিশনের তরফে বলা হয়, কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করানোর হোক। যদিও এ দিন কাউকেই তদন্তভার দেওয়া হয়নি।

২ বছর ধরে কী ভাবে চাকরি করছেন, কার মারফৎ চাকরি পেলেন ওই ২৫ জন, সেই খবর কমিশনের কাছেও যেহেতু নেই, তাই আপাতত ওই ২৫ জনের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দিল আদালত। মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনও টাকা দেওয়া হবে না। ২৫ জনকে আগামিকাল আদালতে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা কী ভাবে চাকরি পেলেন, তা তাঁদের মুখ থেকেই শুনতে চান বিচারপতি।

কমিশনকে এ দিন হলফনামা দিতে বলা হয়েছিল। হলফনামায় কমিশন জানিয়েছে, তারা এই চাকরির সুপারিশ করেনি। কমিশনের কোনও আঞ্চলিক অফিস থেকে চাকরি হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ দিন মামলাকারী আইনজীবীরা আদালতে জানান, শুধু ২৫ জন নয়, এরকম অন্তত ৫০০০ জন রয়েছে, যাদের নিয়োগ নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা নেই।

আরও পড়ুন : ‘কাজ করার থেকে টাকা চাওয়ার লোক বেশি’, এবার বিস্ফোরক প্রবীর ঘোষাল

এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘এই ২৫ জন এতদিন বেতল পেল কী করে? এসএসসির কি কোনও জ্ঞান নেই?’ তাঁর দাবি, নিজেদের দুর্নীতি চাপা দিতেই কমিশন এ কথা বলেছে। এসএসসির ভিতরে আরও বেশি তদন্তের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি।

বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘অন্তত ৪ থেকে ৫ হাজার এমন ভুয়ো নিয়োগ হয়েছে। কমিশন আপাতত ২৫ জনের কথা স্বীকার করেছে।’ তিনি বলেন, কমিশনের যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন, তাঁকে ভাইস চান্সেলর করে দেওয়া হয়েছে। যারা অপরাধ করছে, তাদের সরকার প্রোমোশন দিচ্ছে, তাই এই অবস্থা।

আইনজীবী লোকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেন, টেট থেকে শুরু করে একের পর এক নিয়োগে বারবার মুখ থুবড়ে পড়তে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। দুর্নীতি অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। তিনি মনে করেন, রাজ্য সরকারের কারা এ সবের মধ্যে সামিল রয়েছে, কী ভাবে এত বড় একটা ষড়যন্ত্র রয়েছে, সেটাও দেখার প্রয়োজন আছে।

২০১৬ সালে রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। সেই মতো ১৩ হাজার নিয়োগ হয়। ২০১৯ সালের মে মাসে সেই গ্রুপ ডি প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। তারপরেও একাধিক নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশের কথা জানা গিয়েছে। সেই তথ্য হাইকোর্টের হাতে আসে। কী ভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ নিয়োগ তালিকা থেকে নিয়োগ তারই কৈফিয়ত চায় হাইকোর্ট।

সুত্র : টিভি ৯

আরও পড়ুন ::

Back to top button