কলকাতা পুরভোটে শাসক দল কারচুপি চালাবে, শুরু থেকে এই আশঙ্কা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্বাবধানে ভোট চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু, সেই দাবি আদালতে বিচারাধীন। অন্যদিকে, ভোটে প্রচারের শেষ পর্বে শুক্রবারই তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, শহরের ৫-৭টা ওয়ার্ডে গন্ডগোল করতে পারে বিজেপি।
যা থেকে শাসকের বলপ্রয়োগের শঙ্কা দ্বিগুণ হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলের নেতাদের। এই পরিস্থিতিতে শাসকের দাপট, বলপ্রয়োগের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ও তা প্রকট করতে পাল্টা কৌশল নিয়েছে মুরলীধর সেন লেনের নেতারা।
বিজেপি সূত্রে খবর, জেলার সাংসদ, বিধায়ক ও নেতাদের সতর্ক করা হয়েছে। তাঁরা কর্মীদের সঙ্গে জেলার দলীয় দফতরে থাকবেন। কলকাতার ভোটে কোনও অভিযোগ উঠলেই তা জেলা নেতাদের কাছে জানানো হবে। তারপরই রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ দেখাতে পারে বিজেপি। মূলত জোরাল বিক্ষোভের বন্দোবস্ত থাকছে কলকাতা সংলগ্ন জেলাগুলিতে। ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি সম্পন্ন বলেও খবর।
ভোটে অগণতান্ত্রিক পক্রিয়াকে কমিশন বা পুলিশ মাথাচাড়া দিতে সহায়তা করলেই রাজ্য নেতৃত্ব নির্দেশ মুরলীধর সেন লেন থেকে কলকাতা রাজ্য নির্বাচন কমিশন দফতর পর্যন্ত মিছিলের পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। মাঝে মিছিল পুলিশ মিছিল আটকালে মহানগরের সড়কে বসে পড়বেন নেতা, কর্মীরা। চলবে অবরোধ।
রাজ্য বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘আমরা আমাদের শক্তি অনুযায়ী লড়াই করব। কিন্তু লুঠ হলে সিট দিয়ে তদন্তের জন্য বাধ্য করব। কমিশনের দফতর ঘেরাও করব। মনে রাখবেন, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের পর বাংলার বহু এলাকায় সিবিআই তদন্তকারীরা গিয়েছেন। সেখানে তৃণমূল নেতা, কর্মীরা উধাও হয়ে গিয়েছেন। সেরকম যাতে পরিস্থিতি না হয় তা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে শাসক দলকে।’
আরও পড়ুন: ‘‘আমি করলে আর্জেন্টিনা, তোমরা করলে টুনটুনা’? :মুখ্যমন্ত্রী
পাল্টা তৃণমূল উত্তর কলকাতার সভাপতি তাপস রায় বলেন, ‘ওরা ফলাফল আগে থেকেই জানে। গোহারা হারবে সেটা জেনেই এখন নানা ফন্দি-ফিকির তৈরি করছে। আসলে এইসব বলেই হেরে যাওয়ার ব্যাখ্যা দেবে ওরা।’
রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বর্তমানে রয়েছেন বালুরঘাটে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও কলকাতায় নেই। ফলে কলকাতায় বেগতিক দেখলেই এঁরা দু’জন জেলায় বিক্ষোভে সামিল হবেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর। অন্য একটি সূত্র জানাচ্ছে, কলকাতার ঠিক আশপাশেই থাকবেন বিরোধী দলনেতা।
প্রয়োজনে শহরে ঢুকে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিতে পারেন তিনি। তবে, সকাল থেকে গুরু দায়িত্বের ভার থাকছে, কলকাতার ভোটার তথা আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের উপর। থাকবেন, বঙ্গ বিজেপির তরফে কলকাতা পুরভোটের দায়িত্বে থাকা দুই গেরুয়া সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো ও অর্জুন সিং।
প্রচারে কলকাতায় সংগঠনের বেহাল ছবি উঠে এসেছে। তাই ভোটের দিন পরিকল্পনা মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পাল সম্ভহ হবে তো? তা নিয়েই গেরুয়া নেতা, কর্মীদের অনেকের মনে সংশয় রয়েছে।