নাবালিকা মেয়েটির বিয়ে হয়েছিল চোদ্দ বছর বয়সে। ষোলো বছর বয়সে যমজ সন্তান প্রসব করতে গিয়ে প্রসূতি ও দুই সন্তানের মৃত্যু হয়। পরে মৃত ওই বধুর নাবালিকা বোনেরও জোর করে বিয়ের ঠিক করেন অভিভাবকরা। কিন্তু সেই নাবালিকা পুলিশকে গোপনে খবর জানিয়ে দেয়।
বিয়ের আসরে হাজির হয়ে পুলিশ এসে বিয়ে আটকে দেয়। মেয়েটি এখন পড়াশোনা করছে। বছর খানেক আগের ওই বাস্তব ঘটনাটিকে নাটকের মাধ্যমে উপস্থাপিত করে ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাল্য বিবাহ রোধে সচেতনতা কর্মসূচি শুরু হল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিনে। এদিন প্রশাসনের উদ্যোগে বেলপাহাড়ি ব্লকের বালিচুয়া বিদ্যাপীঠে ‘আগুনের পরশমণি’ নাটকটি মঞ্চস্থ করা হল। আশেপাশের কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়া ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও নাটকটি দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, যে সব এলাকায় নাবালিকা-বিয়ের প্রবণতা রয়েছে, সেই সব এলাকার স্কুলগুলিতে বছরভর এই কর্মসূচি চলবে। এই প্রয়াসের মূল ভাবনটি অবশ্য জেলাশাসকের। জেলা প্রশাসনের তরফে ঝাড়গ্রামের ‘কুরকুট’ নাট্যসংস্থাকে নাটক নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কুরকুটের কর্ণধার ও নাটকের পরিচালক উপল পাহাড়ি বলছেন, ‘‘জেলার একটি বাল্য বিবাহের করুণ পরিণতি অবলম্বনে নাট্যরূপ দিয়েছি।
স্টোরিলাইনটি জেলাশাসক বলে দিয়েছিলেন। সেই মতো নাটকটি তৈরি করা হয়েছে। নাটকে রয়েছে সরকারি কন্যাশ্রী প্রকল্প ও স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুযোগের কথাও।’’ নাটকে এদিন অভিনয় করেন তের্সা পাহাড়ি, সঞ্জীব খাঁ, অনির্বাণ মাহাতো, সুশোভন পাল, তাপস নন্দী, শ্রীপর্ণা পাহাড়ি, নবনীতা দে ও উপল পাহাড়ি।
নাটকটি দেখার জন্য উপস্থিত ছিলেন পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকরা। ‘বাল্য বিবাহ আমার ঠাকুমা-দিদিমার কাহিনী’ শিরোনামে তাৎক্ষণির তাৎক্ষণিক বক্তৃতা দেয় জনা দশেক পড়ুয়া।