ঝাড়গ্রাম

কুমুদকুমারী স্কুলের শতবর্ষে মাধ্যমিকে রাজ্যে দশম অরিত্র মণ্ডল

স্বপ্নীল মজুমদার

কুমুদকুমারী স্কুলের শতবর্ষে মাধ্যমিকে রাজ্যে দশম অরিত্র মণ্ডল

ঝাড়গ্রাম: স্কুলের শতবর্ষে মাধ্যমিকে রাজ্যের মধ্যে অন্যতম দশম স্থান পেল ঝাড়গ্রাম কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের ছাত্র অরিত্র মণ্ডল। অরিত্রের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৪। তবে পরীক্ষা দেওয়ার আগেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল অরিত্র। সেই অবস্থাতেই পরীক্ষা দিয়েছিল বছর ষোলোর ছাত্রটি। অরিত্র জানাচ্ছে, ভবিষ্যতে চিকিৎসক হতে চায়। সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। একাদশে নিজের স্কুলেই বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হবে বলে জানায় ঝাড়গ্রাম শহরের নতুনডিহির বাসিন্দা অরিত্র। আগামী বছর শুরু হচ্ছে কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের শতবর্ষের অনুষ্ঠান। তার আগে অরিত্রের ফলে খুশির আবহ স্কুলে।

প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘স্কুলের শতবর্ষের প্রারম্ভে অরিত্রের এই ফলে আমরা সকলেই খুব খুশি। স্কুলের মুখ উজ্জ্বল করেছে অরিত্র।’’ শুক্রবারই স্কুলে এক অনুষ্ঠানে অরিত্রকে শুভেচ্ছা জানানো হয়। অরিত্রের হাতে ফুলের স্তবক, মিষ্টি ও উপহার তুলে দেন প্রধান শিক্ষক। ছিলেন অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

অরিত্র পঞ্চম শ্রেণি থেকেই কুমুদকুমারীর পড়ুয়া। প্রতি বছর প্রত্যেক শ্রেণিতে প্রথম হয়ে এসেছে সে। তবে এবার মাধ্যমিক দেওয়ার আগের দিন অরিত্রের দাদু হিতেশকুমার মণ্ডলও অসুস্থ হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হন। সংক্রমণ জনিত কারণে অরিত্রও অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে চিকিৎসক সুদেষ্ণা ঘোষের পরামর্শে পরীক্ষা দেয় অরিত্র।

কুমুদকুমারী স্কুলের শতবর্ষে মাধ্যমিকে রাজ্যে দশম অরিত্র মণ্ডল

অরিত্রের বাবা অনিন্দ্য মণ্ডল ঝাড়গ্রাম ব্লকের চন্দ্রি চন্দ্রশেখর উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শারীরশিক্ষার শিক্ষক। মা প্রিয়াঙ্কাদেবী ঘর সংসার সামলান। ছোট বোন আদিত্রী চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়া। অরিত্রের দাদু শিলদা কলেজের ইতিহাসের প্রাক্তন অধ্যাপক হিতেশকুমার মণ্ডল জানালেন, নাতি ভাল ফল করবে সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত ছিলেন। তাই সকাল থেকে টিভি চালিয়ে বসেছিলেন তিনি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি দশম স্থান প্রাপ্তদের মধ্যে অরিত্রের নাম ঘোষণা করতেই আবেগে নাতিকে জড়িয়ে ধরেন হিতেশবাবু। অরিত্র জানায়, নিয়ম করে পড়াশোনা করে যাওয়ার ফলও পেয়েছে সে। তবে আরও একটু বেশি নম্বর আশা করেছিল। তবে অসুস্থতার জন্য পরীক্ষা দিতে বেশ কষ্ট হয়েছিল। ইতিহাস পরীক্ষার দিনে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। অরিত্রের বাবা অনিন্দ্য মণ্ডল বলেন, “অসুস্থতার জন্য একসময় ভেবেছিলাম ছেলে বোধহয় পরীক্ষাই দিতে পারবে না। ওই অবস্থায় পরীক্ষা দিয়ে ও যে দশম স্থানে আছে, সেটাই যথেষ্ট।”

অঙ্ক, ভৌতবিজ্ঞান ও ভূগোলে একশো নম্বর পেয়েছে অরিত্র। ইতিহাসে ৯৪, জীবন বিজ্ঞানে ৯৯, বাংলায় ৯৫ ও ইংরেজিতে প্রাপ্ত নম্বর ৯৬। অরিত্রের ঠাকুমা কল্পনাদেবী বলেন, ‘‘অসুস্থ অবস্থাতেই অরিত্র পরীক্ষা দিয়েছিল। প্রথম দশে নাতির নাম থাকবে আশা করিনি। তাই ভীষণই ভাল লাগছে।’’ একই কথা বলছেন অরিত্রের মা প্রিয়াঙ্কাদেবীও।

শুক্রবার ফল বেরোনোর পরে অরিত্রের বাড়িতে শুভেচ্ছা জানাতে যান সরকারি আধিকারিক থেকে জনপ্রতিনিধি ও নেতা-নেত্রীরা। আর বিকেলে বাবার সঙ্গে চিল্কিগড় কনক দুর্গা মন্দিরে পুজো দিয়ে এসেছে অরিত্র।

আরও পড়ুন ::

Back to top button