আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রয়ছে কেন্দ্রের কাছে। সেই বকেয়া অর্থ পেতে মুখ্যমন্ত্রী দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। কিন্তু রাজ্যে সরকারের অভিযোগ, দিল্লি হাত উপুড় করেনি। এবার বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিন রাজ্যের কৃষিক্ষেত্রে সারের যোগান কম থাকার জন্য চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দলের সহযোগিতা চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। যদিও শর্তও চাপিয়ে দিলেন শুভেন্দু।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের তরফে সারের দাবিতে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মে মাসে চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনও তাদের তরফে সাড়া পাওয়া যায়নি। আমি বিরোধী দলকে বলব এই বিষয়ে উদ্যোগী হতে।’’ সার না দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে দায়ী করে মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, “রাজ্যের জন্য বরাদ্দ ২ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন সার এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত কেন্দ্র মাত্র ৭৭ হাজার মেট্রিক টন সার পাঠিয়েছে।”
১০০ দিনের বকেয়া অর্থ ও রাজ্যে আসন্ন চাষের মরশুমের জন্য প্রয়োজনীয় এই সার পেতে বিজেপি বিধায়কদের অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিকে মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের মন্ত্রীদের এই ‘ সহযোগিতা’র আর্জিতে আড়ালে কৌশল দেখছে বিজেপি।
অধিবেশন শেষে শুভেন্দু কিছু শর্তের কথা জানিয়েছেন। বিধানসভার অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রী বলার পর তিনি বলতে চেয়েছিলেন, তবে তাঁদের সময় দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন বিরোধী এই দলনেতা। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সার নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আমাদের সারের ঘাটতি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যখন আমাদের সাহায্য চেয়েছেন, আমরা নিশ্চয়ই করব।’’
এর পরেই শর্ত আরোপ করেন শুভেন্দু। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঠানো চিঠি হয় রাজ্য বিজেপির সভাপতি অথবা বিরোধী দলনেতাকে দিতে হবে। তবেই আমরা রাজ্যে সারের চাহিদা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলতে পারি।’’
অবশ্য সাহায্য বা সত্তর শর্ত দিয়ে থেমে থাকেননি বিরোধী দলনেতা। একই সঙ্গে তিনি সার নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “সার নিয়ে রাজ্যে কালোবাজারি হচ্ছে। ১২০০ টাকার সার কৃষকদের কিনতে হচ্ছে ২৫০০ টাকা দিয়ে। কালোবাজারি বন্ধ করুক রাজ্য সরকার।”