ঐতিহ্য এই মুহূর্তের সৃষ্টি নয়, তার শিকড় গভীরে এবং বিস্তার সুদূরপ্রসারী। ঐতিহ্যের ভিত অতীতে প্রোথিত; কিন্তু আগামী প্রজন্মগুলোর কাছে তা গ্রহণযোগ্য হলে তবেই তা ঐতিহ্যের শিরোপা পাওয়ার যোগ্য।
পূর্ব বর্ধমানের সরস্বতী পূজার ইতিহাসে শিপতাই ইনকা ক্লাব একটি উজ্জ্বল নাম, প্রায় ৫২ বছর আগে কয়েকজন তৎকালীন কয়েকজন প্রবীন নাগরিকদের হাত ধরে এই পূজার শুভ সূচনা হয়।প্রথম দিকে তাদের হাত ধরে নাটক কবিতা গান অনুষ্ঠিত হতো। ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও হতো। তারপর ধারাবাহিকভাবে সময়ের পরিবর্তন ঘটে কিন্তু নিরবিচ্ছিন্নভাবে ইনকা ক্লাবের এই সরস্বতী পূজার ক্রমবিকাশ ঘটতে থাকে, আজ এই পূজা একটি ঐতিহ্যবাহী পূজায় পরিণত হয়েছে ।
আজ বহু কিশোর- যুবক এই পূজার সঙ্গে জড়িত থাকে। এখানে প্রতিবছর চলে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।বিভিন্ন এলাকা থেকে শয়ে শয়ে মানুষ ভিড় জমান পূজার আনন্দ উপভোগ করতে। আজ তাদের ৫২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয় একটি বিশাল নৃত্য প্রতিযোগীতার ।
বিচারক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী এবং নৃত্য শিল্পী সুনন্দা মুখার্জী এবং পিয়াসী ব্যানার্জী। সারা বর্ধমান জেলার রুচিবান সংস্কৃতিবান বিভিন্ন সদস্য এই পূজোয় শামিল হয়েছেন বা হচ্ছেন।যারা এই ইনকা ক্লাবে যোগ দিয়েছেন বা দিচ্ছেন, তারা এখানে একটা পরিবারের সঙ্গে থাকার আনন্দ উপভোগ করেন, কত অচেনা কিশোর থেকে যুবক জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে এই সংঘে পূজার সময় এসে যোগ দেন।
ক্লাবের বর্ষীয়ান সদস্য তথা সভাপতি অনন্ত শীকলি জানান : তারা ছোটো থেকে দেখছেন তাদের পিতা,ঠাকুরদা সকলে সমাজের সর্বধর্ম সম্বন্ধয়ে এই পূজাটি করে আসছেন এবং তাদের সেই দেখানো পথকে পাথেয় করেই তারা এগিয়ে চলেছেন এবং একদল রুচিশীল যুবক কে তৈরি করে নতুন মন্ত্রে দীক্ষা দান করার কাজটি সুনিপুণ ভাবে করে আসছেন এই ইনকা ক্লাবের মাধ্যমে।
আজ যেখানে মানুষ একত্রিত হয়ে আনন্দ করা শব্দটা ক্রমশ ভুলতে বসেছে সেখানে নিজেদের সংস্কৃতি এই ভাবেই ইনকা ক্লাব বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।