বর্ধমান

পূর্ব বর্ধমান পুলিশের জালে এম.বি.বি.এস প্রতারণা চক্রের এক বিরাট চেন, রাঘব বোয়াল খুঁজতে জিজ্ঞাসাবাদ পুলিশের

দীপন চ্যাটার্জী

পূর্ব বর্ধমান পুলিশের জালে এম.বি.বি.এস প্রতারণা চক্রের এক বিরাট চেন, রাঘব বোয়াল খুঁজতে জিজ্ঞাসাবাদ পুলিশের

রাজ্যে একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতি কারণে কার্যত ব্যাকফুটে রাজ্যসরকার। কিছুদিন আগেই শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে অনেক বড়ো বড়ো রাঘব বোয়াল।কিন্তু এখানেই শেষ নয় এবার বড়োসড়ো দুর্নীতি দেখা গেলো এম.বি.বি.এস ভর্তিতে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে এম.বি.বি.এস. কোর্সে ভর্তির নামে একটি প্রতারণা চক্র সক্রিয়। প্রতারকরা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের সই জাল করে ভর্তির নথিপত্র দিচ্ছে।

কলকাতার কসবা থানার রাজডাঙা মেন রোডের বাসিন্দা শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এবছরের ৭ জানুয়ারি একটি ফোন আসে। তাঁর মেয়ে নিট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কিন্তু, র‌্যাঙ্কের কারণে তিনি সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাননি। তিনি কাউন্সেলিংয়েও হাজির হননি।

ফোনে মেয়েকে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। নমিনি কোটায় তাঁর মেয়েকে ভর্তি করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয় তাঁকে। ভর্তির জন্য সরকারি ফি ছাড়াও তাদের কমিশন দিতে হবে বলে জানানো হয়। প্রথমে প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি। বেশ কয়েকবার ফোন আসার পর তিনি রাজি হন।

১৭ জানুয়ারি দুপুরে তাঁকে বর্ধমানে আসতে বলা হয়। সেইমতো তিনি বেলা দেড়টা নাগাদ মেয়েকে নিয়ে বর্ধমানে আসেন। বর্ধমান স্টেশনে শচীন নামে এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। বর্ধমান থানার পুলিশ ওই প্রতারণা চক্রের চারজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করেছে। চক্রের বাকিদের নাগাল পুলিশ জোরদার তত্‍পরতা শুরু করেছে।

বিক্রম ঠাকুর, রহমান শেখ, শেখ সান্টু ও পীযূষকান্তি ঘড়াই। পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড় এলাকায় বিক্রমের বাড়ি। উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থানার বামনগাছি এলাকায় রহমানের বাড়ি। কলকাতার কসবা থানার প্রসন্ন নস্কর লেনে সান্টুর বাড়ি। কলকাতার নরেন্দ্রপুর থানার তেঁতুলবেড়িয়ায় পীযূষের বাড়ি।

শুক্রবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে বেআইনি নথি পুলিশ উদ্ধার করেছে তার মধ্যে গ্রুপ ডি পদের একটি নিয়োগপত্রও রয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ধৃতদের ব্যবহৃত একটি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রতারণা চক্রে আরও কয়েকজন জড়িত বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। চক্রের জাল জেলায় জেলায় ছড়িয়ে রয়েছে বলেও পুলিশের অনুমান।

অধ্যক্ষ কৌস্তভ নায়েক বলেন, আমার কাছে এনিয়ে দু’টি অভিযোগ আসে। অধ্যক্ষের অভিযোগ পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিস পরিকল্পনামাফিক জাল নথিপত্র তৈরি করে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় মামলা রুজু করেছে। ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। তার সাথে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে আরো বড়ো কোনো রাঘব বোয়াল এই চক্রে জড়িত আছে কিনা।

আরও পড়ুন ::

Back to top button