Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
বর্ধমান

রাজু ঝা খুন হবার উনিশ দিনের মাথায় ব্রেক থ্রু পেল পুলিশ ।গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক অভিযুক্তকে

রাজু ঝা খুন হবার উনিশ দিনের মাথায় ব্রেক থ্রু পেল পুলিশ ।গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক অভিযুক্তকে

রাজ্যের খনি অঞ্চলের বেতাজ বাদশা রাজু ঝা খুন হবার উনিশ দিনের মাথায় ব্রেক থ্রু পেল পুলিশ ।গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক অভিযুক্তকে। পুলিশ জানিয়েছে,৩৪ বছর বয়সী ওই অভিযুক্তের নাম অভিজিত্‍ মণ্ডল ।তার আসল বাড়ি বাঁকুড়া জেলার গঙ্গাজলঘাটি থানার থামকোনরা গ্রামে। বর্তমানে সে পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকশা থানার বামুনাড়ার তপোবন সিটিতে থাকে। তদন্তকারী পুলিশ দল গভীর রাতে দুর্গাপুরের অম্বুজানগরী থেকে অভিজিত্‍ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের দাবি,ধৃত যুবক রাজু ঝা খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা কবুল করেছে।

ধৃতের বিরুদ্ধে ৩০২/৩০৭/৩২৬/১২০ বি/৩৪ আই পি সি ধারা ছাড়াও পুলিশ ২৫/২৭/৩৫ আর্মস এক্টেও মামলা রুজু করেছে। বুধবার ধৃতকে বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করে পুলিশ তদন্তের প্রয়োজনে তাকে ১৪ দিন নিজেদের হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানায়। বিচারক সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। পাশাপাশি পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা যাতে কঠোরভাবে মানা হয় তা দেখার জন্যেও সিজেএম তদন্তকারী অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন।অভিজিত্‍ মণ্ডল ছাড়াও আরো দু’জনকে আটকে রাখার বিষয় নিয়ে সিজেএম এদিন আদালতে তদন্তকারী অফিসারের কাছে জানতে চান। ভরা আদালতে তদন্তকারী অফিসার স্বীকার করে নেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে আটক করা হয়েছে । ধৃতের পক্ষের আইনজীবীরা যদিও দাবি করেছেন তাঁদের মক্কেল অভিজিত্‍ মণ্ডল নিরপরাধ।

কয়লা পাচার মামলায় রাজু ঝার গত ৩ এপ্রিল ‘ইডি’ দপ্তরে হাজিরা দেওয়ার দিন ছিল। তার ঠিক একদিন আগে অর্থাত্‍ গত ১ এপ্রিল রাত পৌনে ৮ টা নাগাদ শক্তিগড়ে কলকাতা মুখী ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি ল্যাংচার দোকানের সামনে খুন হন রাজু ঝা। ওই দিন রাজু সাদা রঙের যে ফরচুনা গাড়িতে চড়ে শক্তিগড়ে এসেছিলেন সেই গাড়ির পিছন পিছন শক্তিগড়ে এসে পৌছায় নীল গাড়িতে সওয়ার থাকা শার্প শুটাররা। তারা গুলির পর গুলি চালিয়ে ঝাঁজরা করে দেয় রাজু ঝার শরীর। রাজু ঝার সঙ্গে থাকা ব্রতীন মুখোপাধ্যায়ের হাতে গুলি লাগে। হাড়হিম করা ঘটনা চলার মহুর্তেই ঘটনাস্থল ছেড়ে পালায় রাজুদের সঙ্গে শক্তিগড়ে আসা। সিবিআইয়ের তদন্তাধীন গরু পাচার মামলায় ফেরার অভিযুক্ত আব্দুল লতিফ।

গুলি কাণ্ডের মধ্যেও রাজু ঝার গাড়ির চালক নূর হোসেন অক্ষত থাকেন।এই ঘটনা নিয়ে নূর হোসেনের দায়ের করা অভিের ভিত্তিতে শক্তিগড় থানার পুলিশ মামলা রুজু করে। পরে জেলা জেলা পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেনের নেতৃত্বে গঠিত শীট এই খুনের ঘটনার তদন্তে নামে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তদন্তে নেমে শক্তিগড় থানার পুলিশ ঘটনার দিন গভীর রাতে শুটারদের ব্যবহার করা নীল গাড়ির হদিশ পায়। সেই গাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালাতেই মেলে বেশকিছু কার্তুজ, আগ্নেয়াস্ত্র, মদের বোতল ও একাধিক নম্বার প্লেট।

তারপরেই তদন্তকারী শীটের সদস্যদের তদন্তের যাবতীয় কেন্দ্র বিন্দুতে জায়গা করে নেয় ওই নীল চারচাকা গাড়িটি। শার্প শুটাররা কোথা থেকে ওই নীল গাড়িতে চাপে এবং কোন কোন পথ ধরে এসে তারা শক্তিগড়ে পৌছায়,তার তথ্য অনুসন্ধানে নামে তদন্তকারীরা। তথ্য পাবার জন্য শিটের তদন্তকারী দল এই রাজ্যের বাঁকুড়া,পুরুলিয়া সহ পড়শী রাজ্য বিহার ও ঝাড়খণ্ড চষে বেড়ায়।ওইসব জায়গার বিভিন্ন পয়েন্টের ও দীর্ঘ সড়ক পথের একাধিক ‘টোল প্লাজার সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিশ আততায়ীদের ব্যবহৃত নীল গাড়িটির যাতায়াতের অকাট্য তথ্য প্রমাণও পায়।ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক ঝালমুড়ি বিক্রেতার দেওয়া বর্ণানা অনুযায়ী পুলিশ আততায়ীদের স্কেচ ও তৈরি করায়। এমনি আতায়ীদের সন্ধান পেতে পুলিশ হাজারিবাগ জেলে গিয়েও খোঁজ খবর চালায়।

এত কিছুর পর কি ক্লুর ভিত্তিত পুলিশ দুর্গাপুরের একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মী অভিজিত্‍ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করলো তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার কামনাশীষ সেন এদিন শুধু বলেন,”তদন্তের স্বার্থে সবকিছু এখনই বলছি না। তবে এই গ্রেপ্তারির পিছনে কিছু না কিছু কারণ তো আছে। অনেক ফলোআপ আছে ধৃতকে পুলিশ হেপাজতে নিয়ে রাজু ঝা খুনের ঘটনার থরোলি তদন্ত করে সব বের করা হবে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন”।

পুলিশ সুপার এদিন সবকিছু খোলশা না করলেও সূত্রের খবর,রাজু ঝা খুনের তদন্তে নেমে পুলিশের এসওজি সেল মোবাইল সম্পির্কত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা শুরু করে। কল ডিটেলস্ রেকর্ড থেকে তদন্তকারীরা কয়েকটি ফোন নম্বরকে চিহ্নিত করেন।তার সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন,ঘটনার দিন রাজু তাঁর সিটি সেন্টারের হোটেল থেকে যাত্রা করার সময় একটি মোবাইল নম্বরের টাওয়ার লোকেশন সেখানে ছিল। একই নম্বরের টাওয়ার লোকেশন ঘটনার দিন কাটোয়ার জাজিগ্রামের কাছে পাওয়া যায়। সেই মোবাইল নম্বরটির সম্পের্ক বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। তার ভিত্তিতে ঘটনায় অভিজিত্‍-এর জড়িত থাকার বিষয়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন তবে, অভিজিত্‍ গ্রেপ্তার হলেও তার মোবাইলটি এখনও উদ্ধার হয়নি।

তবে ধৃতের পক্ষের দুই আইনজীবী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় এদিন দাবি করেন,কি কারণে তাঁদের মক্কেল অভিজিত্‍ মণ্ডল কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার কিছুই উল্লেখ নেই কোর্ট ফরোয়ার্ডিংয়ে। এই আইনজীবীদের মতে অভিজিত্‍ নিরপরাধ।ধৃতের আইনজীবীরা এও জানান, পুলিশ শুধুমাত্র অভিজিত্‍ মণ্ডলকেই দুর্গাপুর থেকে গ্রেপ্তার করেনি। রবি বেশরা ও মহম্মদ কাহারল কাদরি নামে আরো দু’জনে পুলিশ ধরেছে। এই দু’জনকে এখন শক্তিগড় থানায় রাখা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের প্রয়োজনে ঝাড়খণ্ড ও বিহার ছাড়াও পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জায়গায় নাকি ওদের নিয়ে যাওয়া হবে। ধৃতকে মারধোর করা হয়েছে বলেও এই আইনজীবীরা মন্তব্য করেছেন।

আরও পড়ুন ::

Back to top button