কলকাতা

করোনা ইস্যুতে এ বার পুলিশের বিক্ষোভ-ভাঙচুর সল্টলেকে !

করোনা ইস্যুতে এ বার পুলিশের বিক্ষোভ-ভাঙচুর সল্টলেকে ! - West Bengal News 24

 

ওয়েবডেস্ক : দু’সপ্তাহের মধ্যে তৃতীয় বার। ফের বিক্ষোভ-ভাঙচুরের পথে কলকাতা পুলিশের কর্মীরা। এ বার কলকাতা পুলিশে র চতুর্থ ব্যাটালিয়নে।

শুক্রবার বিকেল থেকেই সল্টলেকের এএফ ব্লকে দফায় দফায় চতুর্থ ব্যাটালিয়নের দফতর এবং ব্যারাকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পুলিশকর্মী এবং তাঁদের পরিবারের লোকজনও।

এ বারও অভিযোগের তির ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের দিকে। অভিযোগ, প্রয়োজনীয় সুরক্ষা বর্ম এবং সরঞ্জাম ছাড়াই তাঁদের ডিউটিতে পাঠানো হচ্ছে এবং তাঁরা করোনা য় আক্রান্ত হচ্ছেন।

ব্যাটালিয়ন দফতরের প্রধান গেট বন্ধ রেখে, ভিতরে আলো নিভিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছেন বিক্ষুব্ধ পুলিশকর্মীরা, এমনটাই অভিযোগ। ব্যাপক ভাঙচুরও চালানো হয় ভিতরে।

ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কলকাতা পুলিশের একাধিক শীর্ষ আধিকারিক। এর আগে পুলিশ ট্রেনিং স্কুল (পিটিএস) এবং গরফা থানায় একই কারণে বিক্ষোভ দেখান পুলিশ কর্মীরা।করোনা ইস্যুতে এ বার পুলিশের বিক্ষোভ-ভাঙচুর সল্টলেকে ! - West Bengal News 24

ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকাল থেকে। পুলিশ সূত্রে খবর, চতুর্থ ব্যাটালিয়নের এক পুলিশকর্মীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। চতুর্থ ব্যাটালিয়নে ব্যারাক ছাড়াও রয়েছে কোয়াটার্সও যেখানে পুলিশকর্মীরা পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।

সকাল থেকেই শুরু হয় পুলিশকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ। কমব্যাট ব্যাটালিয়নের জওয়ানদের মতোই তাঁদের অভিযোগ, বিভিন্ন কনটেনমেন্ট জোনে তাঁদের ডিউটি করতে হচ্ছে। অথচ তাঁদের জন্য নেই মাস্ক, গ্লাভস বা পিপিই-র মতো সুরক্ষা সরঞ্জাম। অভিযোগ, স্যানিটাইজারের মতো ন্যূনতম জিনিসও অমিল।

বিক্ষোভকারী পুলিশকর্মীদের এক জন বলেন,” দীর্ঘ দিন ধরেই এ সব নিয়ে আমাদের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। কিন্তু তার বহিঃপ্রকাশ ঘটে শুক্রবার দুপুরের পর থেকে।’ অভিযোগ, করোনা-আক্রান্ত পুলিশকর্মীর সংস্পর্শে আসা বাকি পুলিশকর্মীদের স্বাস্থ্য দফতরের নিয়ম মেনে কোয়রান্টিনে পাঠাতে অস্বীকার করেন ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা।করোনা ইস্যুতে এ বার পুলিশের বিক্ষোভ-ভাঙচুর সল্টলেকে ! - West Bengal News 24

এক পুলিশকর্মীর অভিযোগ, ”আমাদের কোয়রান্টিনে না পাঠিয়ে ডিউটি দেওয়া হয়।’ পুলিশ সূত্রে খবর, এর পরই ডিউটিতে যেতে অস্বীকার করেন পুলিশকর্মীরা। মূলত কনস্টেবল এবং এএসআই পদমর্যাদার পুলিশকর্মীরা বিক্ষোভে শামিল হন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভে শামিল হন তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও। বিকেল থেকেই বিক্ষোভকারীরা মারমুখী হতে শুরু করেন।

অভিযোগ, বিক্ষোভকারী পুলিশকর্মীদের একটা বড় অংশ, চতুর্থ ব্যাটালিয়নের ক্যাম্প চত্বরের আলো নিভিয়ে, কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে ভাঙচুর শুরু করেন।

হাতে লাঠি, বাঁশ নিয়ে ক্যাম্পে থাকা কিছু আধিকারিকরা তাড়া করেন। ভিতরে অফিস ভাঙচুর করেন। সেই সঙ্গে ক্যাম্পে ঢোকার সমস্ত গেট বন্ধ করে দেন।

বিক্ষোভ-ভাঙচুরের খবর পেয়ে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গেলে তাঁদের ঢুকতে বাধা দেন বিক্ষোভকারীরা। দরজা বন্ধ করে রাখেন তাঁরা। ভিতর থেকে যুগ্ম কমিশনার এবং অতিরিক্ত কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিকদের লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়তে থাকেন বিক্ষুব্ধ পুলিশকর্মীরা।

দীর্ঘ ক্ষণ ক্যাম্পের বাইরের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে র‌্যাফ মোতায়েন করা হয় ক্যাম্পের সামনে।

দীর্ঘ ক্ষণ পরে রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বিক্ষুব্ধদের একাংশকে শান্ত করে গেট খোলানোর ব্যবস্থা করেন শীর্ষ আধিকারিকরা। ভিতরে ঢুকে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করেন তাঁরা।

বিক্ষোভকারী পুলিশকর্মীদের এক জন বলেন, ”করোনা নিয়ে অব্যবস্থার অভিযোগ নিয়ে কলকাতা পুলিশের নিচুতলার সর্বত্র তৈরি হয়েছে ব্যাপক ক্ষোভ।’ অন্য এক পুলিশকর্মী বলেন, ”সরকার বার বার বলছে আমাদের জন্য পর্যাপ্ত সুরক্ষা সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছে।

অথচ ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের কাছে চাইলে তাঁরা বলছেন সরকার দেয়নি!’ পুলিশকর্মীদের অভিযোগ, এক শ্রেণির শীর্ষ আধিকারিকদের দুর্ব্যবহার এবং নিচুতলার আধিকারিকদের সম্পর্কে উদাসীনতার জন্যই সংক্রামক আকার নিচ্ছে এই বিক্ষোভ।করোনা ইস্যুতে এ বার পুলিশের বিক্ষোভ-ভাঙচুর সল্টলেকে ! - West Bengal News 24

তবে এ কথা মানতে রাজি নন কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের একটা বড় অংশ। তাঁদের দাবি, বাইরে থেকে কোনও শক্তি ক্রমাগত ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছেন এই ক্ষোভে। তবে তাঁরা কারা তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ওই শীর্ষ কর্তারা।

এই আধিকারিকদের বড় অংশই বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে। লালবাজার সূত্রে খবর, শীর্ষ কর্তাদের একাংশ চাইলেও, নবান্ন এখনই বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চায় না।

কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, পিটিএসে বিক্ষোভ হওয়ার পর, যে ইনসপেক্টর পদমর্যাদার আধিকারিকের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছিলেন জওয়ানরা, সেই আধিকারিকে বদলি করা হয়েছে। জওয়ানদের দাবি মেনে, এখনও পর্যন্ত ৭৩ জনকে কোয়রান্টিনে পাঠিয়ে কোভিড পরীক্ষা করা হচ্ছে।

ঠিক সে রকমই, গরফা থানার বিক্ষোভের পরই নগরপাল নির্দেশ দিয়েছেন, বাইপাসের ধারের দু’টি বেসরকারি হাসপাতাল এবং বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোনও হাসপাতালে কোভিড আক্রান্ত পুলিশ কর্মীদের ভর্তি করা হবে না।

সুত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য