মৃত্যুর আগে করোনা ভাইরাস নিয়ে গান গেয়েছিলেন এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যম, শুনুন শেই গান !(ভডিও)
করোনা আক্রান্ত হওয়ার আগে এই মারণ ভাইরাস নিয়েই গান বেঁধেছিলেন এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যম। তামিল ভাষায় গাওয়া ওই গানের মাধ্যমে সচেতন করতে চেয়েছিলেন নিজের ভক্তদের, সমগ্র দেশবাসীকে। দক্ষিণী ছবির জগতের অন্যতম গীতিকার ভিরামুথুর কথায়, এসপি অসুস্থ হওয়ার আগে বলেছিলেন, অতিমারী করোনার ব্যাপারে আমজনতাকে সচেতন করতে এবং তাঁদের মনে এই বিশ্বাস জাগাতে যে এই লড়াইটা আমরা জিততে পারব, আমি একটা গান তৈরি করেছি।
যে গানে সুরের থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল গানের কথা। তিন মিনিট পার করা ওই ভিডিও শেয়ার করে এসপি তাঁর ভক্তদের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন যে সকলে যেন মন দিয়ে এই গান শোনেন এবং তার গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করেন। গানের কথায় তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে আকার-আয়তনে অণু-পরমাণুর থেকে ক্ষুদ্র হলেও শক্তিতে এই ভাইরাস কার্যত অ্যাটম বোমের সমান।
এসপি বলেছিলেন, তাঁর গানের কথা মন দিয়ে শুনলে-বুঝলে মানুষ সংক্রমণ রুখে দেওয়ার জন্য বেশ কিছু সতর্কতা মেনে চলতে পারবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ রোখার আরও অনেক বিধির কথা নিজের গানের মাধ্যমে সকলকে জানাতে চেয়েছিলেন এসপি।
গতকাল, শুক্রবার চেন্নাইয়ের এমজিএম হেলথকেয়ারে মৃত্যু হয়েছে প্রবাদপ্রতিম এই সঙ্গীতশিল্পীর। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। আজ, শনিবার এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যমের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া। জানা গিয়েছে চেন্নাইয়ের প্রান্তে (আউটস্কার্টস) থিরুভাল্লুর জেলায় তামারাইপক্কমে এসপি-র ফার্মহাউসে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বিদায় জানানো হবে।
আরও পড়ুুন: এনসিবি দফতরে হাজির দীপিকা
সেখানে রয়েছেন প্রয়াত সঙ্গীতশিল্পীর স্ত্রী সাবিত্রী, মেয়ে পল্লবী এবং ছেলে এসপি চরণ। রয়েছে পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রাও। অগস্ট মাসের শুরুর দিকে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যমের। অগস্টের ৫ তারিখ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ৭৪ বছর বয়সী এই প্রবাদপ্রতীম গায়ক একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, তাঁর শরীরে সংক্রমণ মৃদু। ডাক্তাররা তাঁকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি হাসপাতালে ভর্তি হওয়াটাই উচিত হলে মনে করেছেন। নইলে পরিবারের জন্য ঝুঁকি হতে পারে।
ওই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, আশা করছি দু দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরব। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হল না এসপি-র। সংক্রমণ কমে গেলেও ভেন্টিলেশন থেকে বের করা যায়নি সঙ্গীতশিল্পীকে। ক্রমাগত তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে আইসিইউ-তে রাখা হয়। তখন থেকেই ইসিএমও এবং ভেন্টিলেটরের সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
The swansong of #SPBalasubrahmanyam – the last time he sang before the camera and it’s so ironic that the song was about the nature of the dangers posed by the #coronavirus, which ultimately claimed his own life! #RIPSPBalasubrahmanyam #LegendSPB pic.twitter.com/u5i2JYY5CJ
— Ananth Rupanagudi (@rananth) September 26, 2020
এরপর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের বুলেটিনে বলা হয়েছিল, ‘এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যমের শারীরিক অবস্থার গত ২৪ ঘন্টায় আরও অবনতি হয়েছে। তাঁকে ম্যাক্সিমাম লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। এমজিএম হেলোথকেয়ারের বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকদের একটি টিম সর্বক্ষণ পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলেছে।’ তবে মাঝে এসপির শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছিল।
তবে তা ছিল একেবারেই সাময়িক। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এসপি-র ছেলে চরণ একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। সবরকম সূচক স্বাভাবিক। শরীরে আর কোনও সংক্রমণ নেই। চরণ আরও জানিয়েছিলেন, সুব্রহ্মণ্যমের ফুসফুস পুরোপুরি সেরে উঠতে অবশ্য আরও একটু সময় লাগবে।
তিনি ফিজিও করছেন। উঠে বসতে পারছেন। এক দিন অন্তর ডাক্তাররা তাঁকে তুলে বসাচ্ছেন। ১৫ থেকে কুড়ি মিনিট তিনি একটানা বসে থাকতে পারছেন। কিন্তু তারপর ফের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় এসপি বালাসুব্রহ্মণ্যমের। প্রায় ২ মাস ধরে চেন্নাইয়ের এমজিএম হেলথকেয়ারে ভর্তি ছিলেন তিনি। গতকাল সেখানেই মৃত্যু হয় সঙ্গীতশিল্পীর।
সুত্র: THE WALL