কলকাতা

কলকাতার বাঙালি যুবকের অদম্য লড়াই

কলকাতার বাঙালি যুবকের অদম্য লড়াই - West Bengal News 24

মহামারীর দুর্যোগকালীন ছুটি ভাতা ১৫০০ ডলার।’ বাংলায় এমন লেখা কোনও ওয়েবসাইটে দেখলে যে কেউ আশ্চর্য হতে বাধ্য। কিন্তু বাস্তবে এমনটাই ঘটেছে। স্থান সুদূর অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের ভিক্টোরিয়া স্টেট।

শুধু তাই নয়, করোনা সংক্রান্ত হাজারো তথ্য, সাবধানবানী, পরামর্শ সমস্ত কিছুই বাংলায় লেখা। কলকাতার বাঙালি যুবকের লড়াইয়ের ফল সুদূর অস্ট্রেলিয়াতেও। বছর আটত্রিশের অর্ণব ঘোষ রায়ের দাবি, ‘এবার লড়াই ভিক্টোরিয়াতে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে বাংলার অন্তর্ভুক্তিকরণ।’

কিভাবে নিরাপদ ও সুস্থ থাকা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে কী কী সরকারি সাহায্য পাওয়া যেতে পারে, পরীক্ষা ও নিভৃতবাস, নিরাপদে থাকাসহ যাবতীয় বিস্তারিত তথ্য মিলছে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া স্টেটের স্বাস্থ্য দফতরের বাংলা ওয়েবসাইটে। এরাজ্যে বাংলা ভাষা নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি স্তরে দীর্ঘ লড়াই এখনও চলছে।

বাঙালি প্রধান রাজ্য হলেও বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাংকসহ অনেক সংস্থায় বাংলায় কথাই বলেন না সেখানকার কর্মীরা। বাংলা ভাষার অপমান নিয়ে কলকাতা মেট্রো রেলেও বিক্ষোভ হয়েছে।

অভিযোগ, কলকাতায় কিছু অবাঙালি সংস্থায় বাঙালি কর্মী নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা চালু করেছে। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার একটি অঞ্চলে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বাঙালিদের কথা চিন্তা করে বাংলায় ওয়েবসাইটই চালু করে ফেলল।

বাবা ছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মচারি। ২০০৩-তে পরিবারের আর্থিক সংকটের মধ্যেও পড়াশুনা করতে অষ্ট্রেলিয়ায় পাড়ি দেন কলকাতার এক মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান অর্ণব। দুবছর পর ফেডারেল ইউনিভার্সিটি থেকে কমার্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

আরও পড়ুন: সমুদ্র থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে দুর্ঘটনা, লঞ্চ ডুবে নিখোঁজ মৎসজীবির মৃতদেহ উদ্ধার

২০০৭-তে অ্যাসোসিয়েট মেম্বার অব ইন্সটিটিউট অব পাবলিক অ্যাকাউন্টেন্ট। ২০০৯ সালে সেখানে নাগরিকত্বের অধিকার পান। ২০১৪ তে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ। সলিসিটর হওয়ার লক্ষ্যে এখন ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অব ল পড়ছেন অর্ণব।

বিদেশে গিয়ে একদিকে নিজের অস্তিত্বের লড়াই, একইসঙ্গে বাঙালির দাবি আদায় করতে আরেক লড়াইয়ে সফল হলেন কলকাতার যুবক।

ভারতের ৫৪,৫৬৬জন বাঙালি অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক বা পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট রয়েছেন ভিক্টোরিয়ায়। এছাড়া বাংলাদেশের বাঙালিও আছেন সেখানে। দীর্ঘদিন অস্ট্রেলিয়ায় থাকার পর অর্ণবের উপলব্ধি হয় ভাষাগত কারণে বাঙালি প্রবীণরা সেখানে নানা ধরনের অসুবিধায় পড়ছেন।

ভাষাগত অসুবিধা দূর হলে সরকারি নানা সুযোগ-সুবিধা পেতে সহজ হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাংসদের সঙ্গে আলোচনা করেন অর্ণব। এমনকী বিষয়টি মেলবোর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় ও ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনার জন্য উত্থাপিত করেন তিনি।

সেখান থেকেই সরকারি স্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়। অস্ট্রেলিয়ায় সরকারি নীতি নির্ধারনে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। অবশেষে দিন চারেক আগেই চালু হয় স্বাস্থ্য দফতরের বাংলা ওয়েবসাইট। স্বীকৃতি পায় অর্ণবের লড়াই। এবার লড়াই সেখানে বাংলাকে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে অন্তর্ভুক্তি করার।

সুত্র: The Indian Express বাংলা

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য