দঃ ২৪ পরগনা

নরেন্দ্রপুরে গৃহবধূকে অপহরণে অভিযুক্ত প্রেমিক, উদ্ধারে গিয়ে আহত ৩ পুলিশ

নরেন্দ্রপুরে গৃহবধূকে অপহরণে অভিযুক্ত প্রেমিক, উদ্ধারে গিয়ে আহত ৩ পুলিশ - West Bengal News 24

আলাপ তাঁদের ফেসবুকে। তা থেকেই অন্তরঙ্গতা। সম্পর্কের জল গড়িয়েছিল বিছানাতেও। কিন্তু মহিলার মনে তখন দানা বাঁধতে শুরু করেছিল আরও একজন। তাই দূরত্ব বাড়ছিল পুরাতনের সঙ্গে। কিন্তু সেই পুরাতনবাবুটি ছেড়ে দেবেন কেন! হোক না সে পরের বউ। তবুও তো তাঁর বিছানায় এসে শরীরে শরীর মিশিয়ে গিয়েছে। সেই শরীরের ওপরেও তো জন্মেছে অধিকার। তা কেন অন্যের হাতে তুলে দেওয়া মেনে নেবে সেই প্রেমিকবর। তাই সিনেমাতে যা হয় এখানেও সেই একই ঘটনা ঘটলো। বন্দুক দেখিয়ে পরের বউকে কিডন্যাপ। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।

সকালে কিডন্যাপ হওয়া গৃহবধূর সন্ধানে ভর দুপুরে প্রেমিকের বাড়িতেই হানা দিল পুলিশ। তখন শূন্যে গুলি চালিয়ে, ৩জন পুলিশকে আহত করেও পালাতে ব্যর্থ প্রেমিক ধরাও পড়ে গেল পুলিশের হাতে। আর তাঁর প্রেম কাহিনীটি সেখানেই পড়ে গেল ইতি। তা আর পরিণতি পেল না। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিন শহরতলি এলাকায়।

জানা গিয়েছে, বারুইপুর পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা টুকান ওরফে শুভ্রজিত্‍ দাসের। ফেসবুকে তাঁর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল স্থানীয় এক গৃহবধূ। সেখান থেকেই প্রেম, রীতিমতো ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন দু’জনে। কিন্তু গত বেশ কয়েকদিন ধরেই পরকীয়া সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছিলেন ওই গৃহবধূ। কারন সেই গৃহবধূর জীবনে তখন তৃতীয় পুরুষের প্রবেশ ঘটে গিয়েছে। তাই টুকানের থেকে দূরত্ব বাড়াতেই ওই গৃহবধূ বারুইপুর থেকে নরেন্দ্রপুরের বাপের বাড়িতে চলে এসেছিলেন মাস দুয়েক আগে।

আর প্রেমিকার এই আচরণ মেনে নিতে পারছিল না টুকান। তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য ওই গৃহবধূ টুকানের মোবাইল নম্বরটি ব্লক করে দিয়েছিলেন নিজের মোবাইল থেকে। তাই টুকান আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিল না। সেই রাগেই সে ফেসবুকে দু’জনের বেশ কয়েকটি অন্তরঙ্গ ছবি পোস্ট করে দেয়। এখানেই থেমে থাকেনি টুকান। ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়িতে গিয়েও হুমকি দিয়ে আসে সে। কেননা তাঁর ধারনা হয়েছিল, তাঁর সঙ্গে ওই গৃহবধূ দূরত্ব বাড়িয়ে নিজের স্বামীর কাছে যেতে চাইছে। এটা টুকান মানতে পারছিল না।

ব্যাস এরপর ওই গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ি লোকেরা টুকানকে সত্যি কথাটা জানাতেই টুকান বুঝতে পারে ওই গৃহবধূ কেমন ভাবে তাঁকে নাচিয়েছে আর তাঁর টাকাপয়সা লুঠ করেছে। এরপরেই একটা দেশী পিস্তল জোগাড় করে এদিন সকালেই ওই গৃহবধূর বাপের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে চলে আসে নিজের বাড়িতে। প্ল্যান ছিল আজ রাতেই বিয়ে সেরে ফেলার। কিন্তু ওই গৃহবধূ অপহৃত হতেই তাঁর বাপের বাড়ির লোকেরা গোটা ঘটনাটি পুলিশকে জানায়।

পুলিশও ঘটনার তদন্তে নেমে খবর পায় ওই গৃহবধূকে টুকান তাঁর বাড়িতেই নিয়ে গিয়ে রেখেছে। সেখানেই এদিন দুপুরে হানা দেয় পুলিশ। নাছোড় প্রেমিক প্রথমে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করতে বাধা দেয় পুলিশকে। শেষপর্যন্ত শূন্যে গুলি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করে সে। তাঁর ছোঁড়া গুলিতে আহত হন তিন জন পুলিশকর্মী। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। ধরা পড়ে যায় টুকান।

ঘটনাস্থলেই ওই গৃহবধূকে অপহরণের অভিযোগে, পুলিশের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগে ও পুলিশকে কাজে বাধা দেওয়ার অপরাধে গ্রেফতার করা হয় বছর ৩৪-এর টুকানকে। তাঁর কাছ থেকে একটি নাইন এম এম পিস্তল ও ৪টি কার্তুজও উদ্ধার হয়েছে। অভিযুক্তকে এদিনই বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। আপাতত পুলিশের হেফাজতেই থাকছে সে।

সুত্র : এই মুহুর্তে

আরও পড়ুন ::

Back to top button

দয়া করে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনের অনুমতি দিন

দেখে মনে হচ্ছে আপনি কোনও বিজ্ঞাপন ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমরা বিজ্ঞাপনের উপর ভরসা করি ওয়েবসাইটের ফান্ডের জন্য