স্বাস্থ্য
এইডস রোগের লক্ষণ, যেভাবে ছড়ায় এবং প্রতিরোধের উপায়
মানব ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক ব্যাধি এইডস। এ রোগ সর্বপ্রথম ১৯৮১ সালে আমেরিকায় ধরা পড়ে। এ পর্যন্ত ১৭৩টি দেশে এইডস বিস্তার লাভ করেছে। প্রায় দুই কোটি পুরুষ-মহিলা ও শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
এইডস কী :
এইডস একটি জীবনঘাতী রোগ। হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস নামক বিশেষ এক ধরনের ভাইরাস এইডস রোগের কারণ। এ ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ধ্বংস করে দেয়।
বিশেষ পার্থক্য :
এইডস রোগের ভাইরাস শরীরে প্রবেশের ৮-১০ বছর পর্যন্ত কোনো প্রকার লক্ষণ দেখা দেয় না। আক্রান্ত ব্যক্তি এ দীর্ঘ সময় স্বাভাবিক সামাজিক জীবনযাপন এবং কাজ কর্ম করতে পারে। তবে সে সবার অজান্তে অন্যদের মাঝে বিশেষ পদ্ধতি এইচআইভি ভাইরাস ছড়াতে থাকে।
এইডস রোগের লক্ষণ :
- দীর্ঘদিন ধরে অবিরাম ডায়রিয়া যা ভালো হয় না।
- অনেক দিন ধরে জ্বর এবং সর্দি থাকে।
- অতিরিক্ত কাশি, নিউমোনিয়া এবং ফুসফুস ও ত্বকের প্রদাহ থাকে।
- রাতে শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হয়।
- শরীরের ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়।
- শরীরের বিভিন্ন স্থানের গ্রন্থি ফুলে যায় এবং ঘা ও ক্যান্সার হয়।
এইডস কীভাবে ছড়ায় :
- এইডস ভাইরাস ব্যক্তির সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কের মাধ্যমে।
- এইডস ভাইরাসযুক্ত ইনজেকশনের সুচ, সিরিঞ্জ এবং অপারেশনের যন্ত্রপাতি সুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহার করলে।
- এইডস আক্রান্ত মায়ের গর্ভে সন্তান জন্মগ্রহণ করলে।
এইডস যেভাবে ছড়াতে পারে না :
- এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা, কাজকর্ম করলে এ রোগের কোনো আশঙ্কা নেই।
- আক্রান্ত ব্যক্তির কাপড়, বিছানাপত্র, থালাবাসন ব্যবহার নিরাপদ।
- হাঁচি, কাশি, বাতাস, জল ও খাদ্যের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায় না।
- আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে করমর্দন করলে বা মুখমন্ডলে চুম্বন করলে ভাইরাস ছড়ায় না।
- মশা বা অন্য কোনো পোকামাকড় কামড়ালে এ রোগ ছড়ায় না।
এইডস প্রতিরোধের উপায় :
- ধর্মীয় অনুশাসন মেনে কেবল স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে বজায় রাখুন।
- পতিতালয়ে গমন থেকে বিরত থাকুন।
- ইনজেকশনের জন্য ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ ব্যবহার করুন।
- অপারেশনের যন্ত্রপাতি ভালোভাবে ফুটিয়ে নিন।
- যদি কোনো মা এইডসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে হয় বা সন্দেহ থাকে তাহলে সন্তান ধারণ থেকে বিরত থাকুন।