প্রীতিভোজের দিন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে নজির
পশ্চিম বর্ধমান জেলার অন্ডাল থানা এলাকার উখরার বাসিন্দা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন জীবন শুরু করার অভিনব অঙ্গীকার। প্রীতিভোজের দিন রক্তদান শিবির গড়ে নজির গড়লেন তিনি । পাশে পেলেন নববধূ মৌমিতা রায় ও পরিবারকে।
জীবনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলেন রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় ও মৌমিতা রায়। পশ্চিম বর্ধমান জেলার অন্ডাল থানা এলাকার উখরার এই বাসিন্দা বিয়ের সূচনার সঙ্গেই আরও পাঁচজনকে জীবনদানের অঙ্গীকারে ব্রতী হয়েছেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে রক্তদান শিবির করে অভিনব বার্তা নবদম্পতির।
রাহুল এবং পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা মৌমিতার শুভ বিবাহ সম্পন্ন হয়। নববধূ মৌমিতাকে নিয়ে উখরাতে নিজের বাসভবনে নিয়ে আসেন রাহুল। আজ প্রীতিভোজ অনুষ্ঠান। কিন্তু এদিন সাত সকালে দেখা গেল রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের পক্ষ থেকে। গায়ে হলুদ আর চন্দনের গন্ধ নিয়ে নবদম্পতি অন্যদেরকেও উত্সাহিত করলেন রক্তদানে। নিজেরাও এগিয়ে এলেন রক্তদানে।জানা গিয়েছে, এই শিবিরে সংগৃহীত রক্ত দুর্গাপুরের একটি বে-সরকারি হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হবে।
বাড়ির মোট 25 জন সদস্য রক্তদানে সামিল হয়েছিলেন। নতুন জীবনের প্রারম্ভিক মুহূর্তে নবদম্পতি সমাজসেবার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করে নজির তৈরি করলেন বলা যায়। নববধূ মৌমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় (রায়) বলেন, “আমি বিয়ের আগে রক্তদানের কথা শুনলে ভয় পেতাম। আমার স্বামী আমাকে রক্তদানে উত্সাহিত করেছে। নতুন এই উদ্যোগে রক্তদান করতে পেরে আমি আপ্লুত।”
রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি দীর্ঘদিন রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন ব্যক্তির জন্মদিনে, বিবাহ বার্ষিকী এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা রক্তদানের মোটিভেশন ক্যাম্পের আয়োজন করে থাকি। প্রত্যেক বছর আমি জন্মদিনে রক্তদান করেছি। কিন্তু এক নতুন জীবনে প্রবেশ করার এই স্মরণীয় মুহূর্তে রক্তদান করে আমি একটি বার্তা দিতে চাইলাম। এক ইউনিট রক্ত তিনটি মানুষকে জীবন দিতে পারে। রক্ত দান করা শারীরিকভাবেও অত্যন্ত উপকারী। রক্তদানে কোনও ভয় নেই। এই বার্তা দিয়েই আজ এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন।”
বহু মানুষ এই রক্তদান শিবিরে এসে নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করে গিয়েছেন। মানুষের জন্য তথা সমাজের জন্য যাঁরা নিজেদের নিয়োজিত করেছেন, তাঁদের মঙ্গল কামনা আর আশীর্বাদ মাথা পেতে নিলেন রাহুল ও মৌমিতা।