দক্ষিন দিনাজপুর

মহাকাশযান নিয়ে গবেষণা করতে আজই ইসরো পাড়ি, ক্লাস নাইনের উপাসনার

মহাকাশযান নিয়ে গবেষণা করতে আজই ইসরো পাড়ি, ক্লাস নাইনের উপাসনার

ইসরোর ‘যুবিকা’ পরীক্ষায় গৌড়বঙ্গ থেকে একমাত্র সুযোগ পেল পতিরামের উপাসনা। উত্তরবঙ্গ থেকে মোট দু’জন এই সুযোগ পেয়েছে। যার মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পতিরামের উপাসনা মণ্ডল। অন্যজন শিলিগুড়ি থেকে সুযোগ পেয়েছে। এর ফলে ইসরোতে মহাকাশযান নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও গবেষণার সুযোগ পেল পতিরামের নবম শ্রেণির ছাত্রী উপাসনা।

ইসরোর সর্বভারতীয় স্তরের একটি পরীক্ষার মাধ্যমে ওই সুযোগ পেয়েছে উপাসনা। তাই আগামী ১৪ দিনের জন্য একটি ইয়ং সায়েন্টিস্ট অনুষ্ঠানে ডাক পেয়েছে সে। আগামী ১৪ মে থেকে অন্ধপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাবন স্পেশ সেন্টারে ওই বিশেষ প্রশিক্ষণ শুরু হবে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই খুশির হাওয়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শিক্ষা মহলে।

উপাসনা পতিরাম বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবার নাম ননীগোপাল মণ্ডল। বাড়ি পতিরাম থানার বাহিচা এলাকায়। তিনিও বালুরঘাট ললিত মোহন আদর্শ স্কুলের পদার্থবিদ্যার শিক্ষক। গত মার্চ মাসে অনলাইনে ইসরোর ‘যুবিকা’ নামক একটি পরীক্ষায় বসে উপাসনা। পরীক্ষার ফলাফল বের হয়। যেখানে দেখা যায় ৩৫০ জনের মধ্যে নাম রয়েছে তার । এরপরই ইসরো থেকে উপাসনাকে ডেকে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার অর্থাত্‍ আজই অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন উপাসনা ও তার বাবা। আগামীতে মহাকাশ বিজ্ঞানী হতে চান বলে উপাসনা জানিয়েছে।

ইসরোর ‘যুবিকা’ পরীক্ষায় মার্কসের ভিত্তিতে গোটা দেশের মধ্যে মোট ৩৫০ জনকে ডাকা রয়েছে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচজন রয়েছে। উত্তরবঙ্গের দু’জন রয়েছে। আগামী ১৪ মে থেকে অন্ধপ্রদেশের ‘শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাবন স্পেস সেন্টারে’ ওই বিশেষ প্রশিক্ষণ শুরু হবে। কীভাবে রকেট উত্‍ক্ষেপন হয়,কীভাবে মহাকাশযান তৈরি করা হয়, কীভাবে মহাকাশ গবেষণা চলে। তা নিয়ে প্রশিক্ষণ চলবে। এছাড়াও সমস্ত পড়ুয়াদের ইয়ং সায়েন্টিস্ট হিসাবে নানা গবেষণামূলক পাঠ দেওয়া হবে । মহাকাশ গবেষণার কোন কোন দিক রয়েছে,তাও জানানো হবে। এমনকী পরবর্তীতে মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়েও পড়াশোনার সুযোগ থাকবে । এতদিন থাকা খাওয়া যাতায়াত সহ সমস্ত কিছুরই ব্যয়ভার গ্রহণ করবে ইসরো।

এ বিষয়ে উপাসনা মণ্ডল বলেন,”ছোটবেলা থেকেই মহাকাশ ও মহাকাশযান নিয়ে আমার মনে আগ্রহ ছিল। তাই বাবার পরামর্শে ইসরোর এই পরীক্ষার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু ওই পরীক্ষায় সফল হয়ে ইসরো থেকে ডাক পাব,তা ভাবিনি। আমি আগামীতে মহাকাশ গবেষণা নিয়েও পড়াশোনা করতে চাই।”

এ বিষয়ে উপাসনার বাবা ননীগোপাল মণ্ডল বলেন, “সর্বভারতীয় স্তরে ইসরোর তরফে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। সেই পরীক্ষায় র‍্যাঙ্কের মাধ্যমে আমাদের রাজ্যের পাঁচজন ইসরো থেকে ডাক পেয়েছে। সেখানে গবেষণা ও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ১৪ দিনের ইয়ং সায়েন্টিস্ট প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য আমার মেয়ে সুযোগ পেয়েছে। আগামীতে চাইলে মহাকাশ গবেষণা মূলক পড়াশোনারও সুযোগ থাকবে। মেয়ের এই সাফল্যে আমাদের পরিবার গর্বিত।”

অন্যদিকে উপাসনার স্কুল তথা পতিরাম বিবেকানন্দ গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা দিপা সরকার বলেন, “প্রথম থেকেই উপাসনা ক্লাসের প্রথম দিকেই রোল থাকে। শান্ত ও চুপচাপ স্বভাবের মেয়ে বলেই পরিচিত ছিল। আমাদের মত একটা গ্রামের স্কুল থেকে উপাসনার এই সাফল্যে আমরা সকলেই গর্বিত।”

আরও পড়ুন ::

Back to top button