Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
আন্তর্জাতিক

বাড়ি ভাড়া বাঁচাতে প্লেনে চড়ে ক্লাসে যেতেন যুবক!

বাড়ি ভাড়া বাঁচাতে প্লেনে চড়ে ক্লাসে যেতেন যুবক!

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের বাসিন্দা বিল ঝৌ। বার্কলির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি। সাধারণত অন্য শহরে পড়তে গেলে অনেকেই আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে ওঠেন। বিল অবশ্য তা করেননি। আবার ভাড়া বেশি হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেও বাসা নেননি। কোনও উপায় না দেখে সে সময় প্লেনে চড়ে ক্লাসে যাওয়ার সিদ্ধান্তই যথাযথ মনে হয়েছিল তার।

২৬ বছর বয়সী বিল অবশ্য বিল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বার্কলির ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে যেতে সপ্তাহে তিন দিন প্লেনে চড়তেন তিনি। ক্লাস শেষে আবার নিজের বাড়িতে ফেরার জন্য প্লেনে উঠতেন। পাশাপাশি প্লেন ভাড়ার খরচ কমাতে যে কৌশল বের করেছিলেন, তাও জানিয়েছেন তিনি।

বর্তমানে লিগ্যাল সাসটেনেবিলিটি অ্যালায়েন্স (এসএসএ) নামে এক মার্কিন সংস্থায় কাজ করেন বিল। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই গণপরিবহণের প্রতি আগ্রহ ছিল তার। স্কুলে যাওয়ার সময় নানা রুটের বাসে চড়তে ভালো লাগত। শুধু তা-ই নয়, নতুন কোনও জায়গায় গেলে প্রথমেই সেখানকার পরিবহন ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজ নেন তিনি।

লস অ্যাঞ্জেলসের বাসিন্দা হলেও আগে হংকং এবং লন্ডনে ট্রেনে-বাসে বা মেট্রোতে যাতায়াত করেছেন বিল। তবে বছরখানেক ধরে বার্কলিতে পড়াশোনার সময় প্লেনে চড়ার প্রতি আগ্রহ জন্মায় তার। তিনি বলেন, আমি বিভিন্ন বিমান সংস্থার প্লেনে চড়তে খুব ভালোবাসি। এখন পর্যন্ত শতাধিক সংস্থার প্লেনে উঠেছি।

তাহলে ক্লাস করার জন্য প্রতি সপ্তাহে প্লেনে যাতায়াত করতেন কেন? বিল বলেন, লস অ্যাঞ্জেলস থেকে বার্কলিতে গিয়ে পড়াশোনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে থাকলে পকেট ফাঁকা হয়ে যেত। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এক বেডরুমের ফ্ল্যাটের ভাড়া আকাশছোঁয়া।

প্লেন ভাড়ার খরচ কমাতে কম কাঠখড় পোড়াননি বিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সেমিস্টারে দুই সপ্তাহের বুট ক্যাম্পসহ প্রতিদিন ইঞ্জিনিয়ারিং লিডারশিপ ক্লাস হত। তবে প্রতিদিনের বদলে সপ্তাহের সোম, বুধ এবং শুক্রবার— এই তিন দিনের গুরুত্বপূর্ণ ক্লাসে যেতেন বিল।

তিনি বলেন, এক বছর ধরে প্লেনে চড়ে ৭৫ হাজার ৯৫৫ মিনিট খরচ করেছি, দিনের হিসাবে যা প্রায় ৫৩ দিন। প্রতি সোম, বুধ এবং শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলস বিমানবন্দর থেকে সান ফ্রান্সিসকোর উদ্দেশে রওনা দিতেন তিনি, যাতে বার্কলির বে এরিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে পারেন।

নিয়মিত প্লেনে চড়ায় ‘ফ্রিকুয়েন্ট ফ্লায়ার্স মাইলস’-সহ ক্রেডিট কার্ডে যে পয়েন্টগুলো সংগ্রহ করেছেন, টিকিট কাটতে সেগুলো কাজে লাগাতেন বিল। তার কথায়, হিসাব কষে দেখেছি, বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে যেতে সাড়ে ৪-৫ ঘণ্টা সময় লেগে যেত। ক্লাস করার দিন ভোর পৌনে ৪টায় ঘুম থেকে উঠতাম।

বিল বলেন, আগের রাতে সব ব্যাগ গুছিয়ে রাখতাম। ভোর ৪টা ২০ মিনিটে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যেতাম। এরপর আধ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে লস অ্যাঞ্জেলস বিমানবন্দরের সবচেয়ে কাছের মেট্রো স্টেশনে পৌঁছাতাম। সেখানকার পার্কিংয়েই নিজের গাড়ি রেখে দিতেন বিল। এতে বিমানবন্দরের পার্কিংয়ের তুলনায় কম খরচ পড়ত। বিল বলেন, ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে মেট্রো স্টেশন থেকে ভাড়া গাড়ি নিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছাতাম।

সপ্তাহে তিন দিন ভোর ৫টা ১০ মিনিটে লস অ্যাঞ্জেলস বিমানবন্দরে নামতেন বিল। সাড়ে ৭টার মধ্যে পৌঁছাতেন সান ফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরে। সেখানেই লাউঞ্জে সেরে নিতেন সকালের নাশতা। এরপর এক ঘণ্টা পড়াশোনা করে ট্রেন ধরতেন। বার্কলিতে পৌঁছে যেতেন সকাল পৌনে ১০টায়।

বিল জানান, দুপুর ২টায় ক্লাস শেষ হওয়ার পর সহপাঠীদের সঙ্গে নানা প্রজেক্টে কাজ করতেন। ক্যাম্পাস ছেড়ে বেরোতেন বিকেল ৫টায়। আবারও সন্ধ্যায় ফিরে যেতেন সান ফ্রান্সিসকো বিমানবন্দরে। রাত সাড়ে ৮টায় পৌঁছে যেতেন লস অ্যাঞ্জেলস বিমানবন্দরে। এভাবে এক বছরে মোট ২৩৮ বার প্লেনে চড়েছেন বিল। আর এজন্য তার খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার ৬০০ ডলার।

আরও পড়ুন ::

Back to top button